সরিষা জাত ও চাষ পদ্ধতি

Didibhai Agrofarm
0
প্রতি বিঘায় ৬০০-৮০০ কেজি কম্পোস্ট, অ্যাজোটোব্যাক্টর ও পি এস বি জীবাণুসার ব্যবহার করা ভালো। খাদ্যের চাহিদা বেশি। বোনার সময় মূল সার হিসাবে বিঘা প্রতি ১৬-১৮ কেজি সিঙ্গল সুপার ফসফেট, ৬-৮ কেজি ইউরিয়া সার ব্যবহার করা যায়।


তেল বীজের মধ্যে সরিষা তেল উৎপাদনে সবার আগে। বাঙালীর রান্না ঘরে সরষের তেল ও মশলা হিসাবে সরষে দানা অপরিহার্য্যা।

    ১. সরিষার জাত ও বৈশিষ্ট :-

    ক) DMRIJ - ৩১ গিরিরাজ - 

    • ১৩০ -১৫০ দিন সময়কাল , 
    • গাছের উচ্চতা ১৮০-২১০ সে.মি . 
    • উৎপাদন একর প্রতি ৯-১০ কুইন্টাল
    •  ৩৯-৪২% তেল পাওয়া যায়। 

    খ) DRMR ১৫০-৩৫ -

    • সময়কাল ১১৪ দিন। 
    • গাছের উচ্চতা ২০০ সে.মি .। 
    • উৎপাদন প্রতি একর ৬-৭ কুইন্টাল। 
    • ৩৭-৪০% তেল পাওয়া যায়।

    গ) DMH -১ হাইব্রিড - 

    • সময়কাল ১২৬ দিন। 
    • উৎপাদন প্রতি একর ১১-১২  কুইন্টাল। 
    • ৪০% তেল পাওয়া যায়।

    ঘ) পুসা ২৮ NPJ -১২৪ -

    • সময়কাল ৯১ -১৩১ দিন।
    • গাছের উচ্চতা ১৬২ -১৯৫ সে.মি .। 
    •  উৎপাদন প্রতি একর৭-৮  কুইন্টাল। 
    • তেল পাওয়া যায় ৩৯-৪২%। 

    ঙ) পুসা ২২ (LET -১৭ ) -

    • সময়কাল ১৩৮-১৪৮ দিন।
    • গাছের উচ্চতা ১৬৫-২০০ সে.মি .। 
    •  উৎপাদন প্রতি একর ৯-১০ কুইন্টাল। 
    • তেল পাওয়া যায় ৩৪-৩৬%। 

    চ) বিনয় (বি -৯ )

    • সময়কাল ৯০-৯৫ দিন।
    • গাছের উচ্চতা ৯০-৯৫ সে.মি .। 
    •  উৎপাদন প্রতি একর ৮-৯ কুইন্টাল। 
    • তেল পাওয়া যায় ৪৬%। 

    ২ . রোপনের সময় :- 

    রবি মরশুমে শুকনো ঠান্ডা আবহাওয়ায় - ১০-২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এর চাষ হয়ে থাকে৷ কার্তিক অগ্রহায়নে আমন ধান ওঠার পর লাল বা কালো দানা সর্ষে লাগানোর সময়৷ জলদি জাতের ‘তোরিয়া' (হলুদ দানা)গুলি আশ্বিনের প্রথমেই উঁচু জমিতে লাগানো হয়৷ ৮০-৮৫ দিনে ওঠে।

    ৩. জমি ও মাটি :- 

    বেলে দোঁয়াশ থেকে এঁটেল- বিভিন্ন গঠন ও গ্রথন সম্পন্ন মাটিতে সর্ষের চাষ হয়। মাঝারি থেকে গভীর, ভালো নিকাশি যুক্ত জমি সর্ষে চাষের উপযুক্ত। মাটির পি.এইচ ৬.০-৭.৫ আদর্শ৷

    ৪. সেচ প্রয়োগ :-

     মাটিতে ‘জো’ থাকা অবস্থায় বীজ বপন করতে হবে। প্রথম সেচ ৩০-৩৫ দিনের মাথায়, দ্বিতীয় সেচ ২০ দিন পর। জলের অভাব থাকলে দানা পুষ্ট হবার সময় দ্বিতীয় সেচটি দিলে ভালো হয়।

    ৫. সারি ও গাছের দূরত্ব :-

     সারি থেকে সারি ৪৫ সেমি ও সারিতে গাছের দূরত্ব ১৫-২০ সেমি। ৫-৬ সেমি বা দু ইঞ্চি গভীরে বীজ বুনতে হয়৷ সারিতে লাগালে পরিচর্য্যা করতে সুবিধা হয়৷ 

    ৬. বীজের হার :- 

    বিঘা প্রতি ৮০০ গ্রাম৷ হেক্টরে ৬ কেজি।

    ৭. সার প্রয়োগ :-

    প্রতি বিঘায় ৬০০-৮০০ কেজি কম্পোস্ট, অ্যাজোটোব্যাক্টর ও পি এস বি জীবাণুসার ব্যবহার করা ভালো। খাদ্যের চাহিদা বেশি। বোনার সময় মূল সার হিসাবে বিঘা প্রতি ১৬-১৮ কেজি সিঙ্গল সুপার ফসফেট, ৬-৮ কেজি ইউরিয়া সার ব্যবহার করা যায়। তবে মাটি পরিক্ষার সুপারিশের ভিত্তিতে সার ব্যবহার করা উচিত৷ মাটি পরীক্ষা ফলাফল অনুযায়ী খাদ্য ও অনুখাদ্য ব্যবহারের উপর ফলন নির্ভর করে।

    তেল বীজে তেলের পরিমান বাড়ানোর জন্য অনুখাদ্য হিসাবে সালফার ব্যবহারের সুপারিশ করা হয়। ‘সালফেট অফ পটাশ জলের গুলে ১ শতাংশ দ্রবণ এক থেকে দু'বার ৩০ ও ৪৫ দিনে স্প্রে করলে দানায় তেলের পরিমান বাড়ে। এন.পি .ক ১৮:১৮:১৮ ম্যাক্রোফার্ট জলে গুলনশীল সার স্প্রে করলে গাছের বৃদ্ধি পুষ্টি নিয়ে হয় এবং ফলন বেশি হয়। 

    ৮. সাথি ফসল :- 

    মিশ্র ফসল হিসাবে ছোলা, গম, মুসুরের সাথে চাষ করা যায়৷ সেক্ষেত্রে বীজের হার অর্ধেক হবে। ধান ওঠার পর পয়রা পদ্ধতিতে মিশ্র চাষ করলে ফলন কিছুটা কম হলেও চিন আয় বেশি হয়।

    তথ্য সূত্র - 

    ১. ড: বিবেকানন্দ সান্যাল (প্রাক্তন কৃষি আধিকারিক )। 

    ২. ভারতীয় তৈল উন্নয়ণ বোর্ড। 

    ৩. ভারতীয় কৃষি অনুসন্ধান কেন্দ্র। 

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    0মন্তব্যসমূহ

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)