মুখী কঁচু চাষে দ্বিগুন লাভ

Didibhai Agrofarm
0
মুখী কঁচু চাষে  দ্বিগুন লাভ

কন্দ ফসলের মধ্যে কচু পুষ্টিকর ও অর্থকরী ফসল হিসাবে ওল ও আলুর পরেই কচুর স্থান। ধীরে ধীরে  এর চাষ  জন প্রিয়তা পাচ্ছে - চাষে কম খরচে অন্যান্য ফসলের তুলনায় বেশি লাভ এর সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। এটি  শ্বেতসার ও শর্করা, খনিজের মধ্যে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রণ এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ কন্দ জাতীয় সবজি। কচি শাকও খুব উপকারি। 

    ১.জাত:

    এম.এল-১,এম.এল-২, এম.এল-৯, বি.সি.সি-১। স্থানীয় ভালো জাত নদীয়া৷

    ২. চাষের মেয়াদঃ

    মুখী কঁচু ৬ থেকে ৮ মাস এর মধ্যে চাষ  সম্পূর্ণ হয়ে থাকে ।

    ৩.বোনার সময়:

    উষ্ণ আর্দ্র, ২১ থেকে ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় উপযুক্ত। চৈত্র-বৈশাখ (এপ্রিল-মে)। তবে শুকনো অঞ্চল গুলিতে জ্যৈষ্ঠ মাসে প্রথম বৃষ্টির সাথে সাথে লাগানো ভাল।

    আরও দেখুন -ওলকচু চাষের সকল তথ্য-2023

    ৪.উপযুক্ত জমি ও মাটি:

     উঁচু জমি, মাটির পি.এইচ ৫.৫ -৭, জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ দোঁয়াশ ও বেলে দোঁয়াশ মাটিতে ভাল হয়৷ জলনিকাশি ব্যবস্থা ভালো থাকা দরকার।

    ৫.সেচ ব্যবস্থা :

    চৈত্র বৈশাখ মাসে লাগালে বৃষ্টি না আসা পর্যন্ত ১০-১২ দিন অন্তর বিশেষত শুকনো এলাকায় হালকা সেচ দেওয়া দরকার হয়৷

    ৬.সারি ও গাছের দূরত্ব:

     সারির দূরত্ব ৪৫ সেমি বা ১.৫ ফুট। সারিতে বীজের দূরত্ব ১৫ সেমি। ও ৩-৫ সেমি গভীরে মাদা করে লাগাতে হবে। তবে ২ ইঞ্চির বেশি গভীরে বীচন লাগালে ফলন কমে যায় ৷ বীচন লাগানোর পর খড় বা শুকনো পাতা দিয়ে আচ্ছাদন দেওয়া ভালো। জলনিকাশি ব্যবস্থা ভালো থাকা দরকার।

    ৭.বীজের হার:

    ২০-২৫ গ্রাম মাপের বীজ বসাতেহবে৷ বীজের হার ৮ কুইন্টাল প্রতি হেক্টরে ১০৫-১১০ কেজি প্রতি বিঘাতে । 

    ৮.সার প্রয়োগ :

    বিঘা প্রতি ১২-১৫ কেজি জৈব সার দিতে হয়। বীজ লাগানোর সময় মূল সার হিসাবে ১০-১২ কেজি ইউরিয়া, ২০-৩০ কেজি সুপার ফসফেট, ১২-১৫ কেজি মিউরেট অফ পটাশ সার এবং ৩০-৩৫ দিন পর ৮-১০ কেজি ইউরিয়া চাপান সার দিয়ে গোড়ায় মাদা বেঁধে দিলে ভালো হয়। 

    পরিচর্যা খুব কম প্রয়োজন হয়  ৷ ৬০-৭০ দিন পর বিঘা প্রতি ১০ কেজি ইউরিয়া দিয়ে গোড়ায় মাটি তুলে দিতে হবে। 

    ৯.সাথি ফসল: 

    সাথী ফসল হিসেবে লাল শাক, মূলো শাক ইত্যাদি লাগানো যেতে পারে ।

    ১০.উৎপাদনঃ

    মুখী কঁচু ১২-১৫ কুইন্টাল প্রতি বিঘায়৷ ৮০-১০০ কুইন্টাল প্রতি হেক্টরে উৎপাদন হয়ে থাকে ।

    ১১.রোগপোকা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা :

    রোগের মধ্যে কন্দ পচা (সফ্ট রট) ও পাতা ধ্বসা রোগ সাধারণত : দেখা যায়। এরোগ দেখা দেওয়া মাত্র ১০-১২ দিন অন্তর ডাইথেন এম-৪৫ দুই গ্রাম প্রতি লিটার জলে গুলে ৭-১০ দিন অন্তর দু থেকে তিনবার স্প্রে করতে হবে। টাকা গোবরের নির্যাস ৩-৪ বার স্প্রে করলে নিরাময় হয়। এছাড়া বিঘাপ্রতি ৩০০ গ্রাম ট্রাইকোডারমা ভিরিডি নামে জীবাণুনাশক জৈবসারের সাথে মিশিয়ে শেষ চাষে মাটিতে মিশালে নিয়ন্ত্রণে থাকে৷ 

    12.লাভ -

    মুখী কঁচু চাষে খরচ খবই সামান্য এবং তুলনামূলক লাভ অনেক বেশি হয়ে থাকে। 

    ১৩.তথ্য সূত্র -

    ড: বিবেকানন্দ সান্যাল -লোক কল্যাণ পরিষদ। 

    আরও দেখুন  

    ১.কেঁচো সার তৈরী পদ্ধতি

    ২.জীবান্মৃত কিভাবে তৈরি করব ? জৈব চাষে জীবান্মৃত কিভাবে কাজ করে ? এবং এর ব্যাবহার কিভাবে হয় ? 

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    0মন্তব্যসমূহ

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)