ওলকচু চাষের সকল তথ্য-2023

Didibhai Agrofarm
0

 

ওলকচু চাষের সকল তথ্য-2023

ওল কচু বাজারে একটি উচ্চ মূল্যের ফসল হয়ে উঠছে। একটি সময় এটি  অবহেলিত ফসল হিসাবে একে গণ্য করা হত। 'ফেমিন ফুড' অথবা দুর্ভিক্ষের খাবার হিসাবে মর্যাদায় ওল শ্রেষ্ঠ ছিল একটি সময় । বর্তমানে ওলকচু দিয়ে বিভিন্ন ভাবে খাদ্য তৈরী করে গ্রহণ করা হচ্ছে তাই এর চাহিদাও বাড়ছে। প্রতি কেজি ওল ৬০ -৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। চাষ পদ্ধতিতে কৃষিবিজ্ঞানীরা ফলন বৃদ্ধির নতুন কিছু পদ্ধতি যুক্ত করছেন এর ফলে উৎপাদন বেশি পাচ্ছে কৃষকরা এবং ৬ মাসে আয় করছেন লক্ষাধিক টাকা। 

    ১.ওল কচুর জাতঃ

    কাভুর, সি-৩, সি-৪, দক্ষিণ ভারতের উন্নত জাত ৷ স্থানীয় ভালো জাত সাঁতরাগাছি।

    ২.চাষের মেয়াদঃ

    ওল কচু চাষ ৬ মাস এর মধ্যে সম্পূর্ণ হয়ে যায়। 

    ৩.বোনার সময়:

    চৈত্র-বৈশাখ (এপ্রিল-মে)। রাজ্যের শুকনো পশ্চিমাঞ্চলে যেমন - জ্যৈষ্ঠ মাসে প্রথম বৃষ্টির সাথে সাথে লাগানো ভাল ।

    ৪.জমি ও মাটিঃ

    উঁচু জমি ও বেলে দোঁয়াশ মাটিতেও ভাল হয়। জলনিকাশি ব্যবস্থা ভালো থাকা দরকার।

    ৫.সেচ ব্যবস্থা :

    এপ্রিল মাসে লাগালে বৃষ্টি না আসা পর্যন্ত ১০ দিন অন্তর হালকা সেচ দেওয়া ভাল৷

    ৬.সারি ও গাছের দূরত্বঃ

    সারি ও গাছের দূরত্ব ৭৫ সেমি বা ২.৫ ফুট। মাদা করে লাগাতে হবে। গর্তের মাপ ১-১.৫ ঘন ফুট। অর্থাৎ ১৮ ইঞ্চি দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও গভীর গর্ত করে কাটা মাটির অর্ধেক পরিমাণ জৈব সার দিয়ে মাদার মাটি তৈরি করতে হয়।

    পরিচর্যা খুব কম লাগে৷ ৬০-৮০ দিন পর ওল গাছের গোড়ায় মাটি তুলে দিতে হবে। 

    তবে বীচনের জন্য ওল চাষ করলে ১৫০ গ্রাম কাটা ওল গোবর জলে ডুবিয়ে ১ ফুট অন্তর লাগাতে হবে। ওলের সজাগ ও বাড়ন্ত অগ্রমুকুল (চোখ) যেন প্রতি কাটা অংশে ১-২টি থাকে৷ ২-৩ ইঞ্চির বেশী গভীরে বীচন লাগালে ফলন কমে যায়৷ 

    আরও দেখুন  -জৈব চাষে রোগ পোকা নিয়ন্ত্রণে সবচয়ে ভালো 16 টি সহজ ও পরিবেশমুখী কীটনাশক , ছত্রাক নাশক টোটকা

    ৭.বীজের হার:

    প্রতি গর্তে ৫০০-৭০০ গ্রাম বীজ ওল বসাতে হবে তবে বীজের সাইজ বেশি হলে ওলের সাইজ বেশি বড় হয় । প্রতি বিঘাতে ১০৫০ টি বীজ রোপন করলে ভালো।  বীজের হার ৬০-৬২ কুইন্টাল প্রতি হেক্টরে বা ৮০০-১০০০ কেজি প্রতি বিঘায়।

    ৮.সার প্রয়োগ :

    জৈব সার বেশি করে দিতে হবে। প্রতিটি গর্তে ২-২.৫ কেজি গোবর সার, ২০ গ্রাম ইউরিয়া, ১৫ গ্রাম সুপার ফসফেট, ১৫ গ্রাম পটাশ সার দিলে ভাল হয়। 

    ৯.সাথি ফসল: 

    দুই সারি ওলের মাঝে এক সারি অড়হর, বরবটি, ঢেড়শ ও লাল শাক সাথি ফসল হিসাবে চাষ করে বাড়তি ফলন পাওয়া যায়৷ 

    ১০.ওলকচুর উৎপাদন:

    ৫৫-৬৫ কুইন্টাল প্রতি বিঘায়৷ ৪০০-৫০০ কুইন্টাল প্রতি হেক্টরে।

     ১১. রোগপোকা প্রতিরোধ :

    রোগের মধ্যে কন্দ পচা (সফ্ট রট) ও পাতা ধ্বসা রোগ সাধারণত: দেখা যায়। এরোগ দেখা দেওয়া মাত্র ১০-১২ দিন অন্তর টাটকা গোবরের নির্যাস ৩-৪ বার স্প্রে করলে নিরাময় হয়। এছাড়া বিঘাপ্রতি ৩০০ গ্রাম ট্রাইকোডারমা ভিরিডি নামে জীবাণুনাশক জৈবসারের সাথে মিশিয়ে শেষ চাষে মাটিতে মিশালে নিরাময় হয়।

    ১২.ওলকচু চাষে লাভ - 

    ওল কচু চাষের প্রধান খরচ হয়  বীজ ক্রয় করতে।  বাণিজ্যিক ভাবে ওল কচু চাষ করলে প্রথম বছর বিঘা প্রতি ৬০- ৭০ হাজার টাকা খরচ হবে এবং বীজ রেখে দিলে পরের বছর থেকে শুধু চাষ ,সার ও পারিশ্রমিক খরচ লাগে তখন সব খরচ বাদ দিয়ে ১ লক্ষ টাকার উপরে লাভ থাকে।

    ১৩. তথ্য সূত্র -

    ড: বিবেকানন্দ সান্যাল -লোক কল্যাণ পরিষদ 

    আরও দেখুন  

    ১.ঘনজীবামৃত জৈব সার তৈরি পধতি

    ২.বীজ আলু উৎপাদনের পদ্ধতি । আলুর প্রকৃত বীজ থেকে আলু চাষ করে

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    0মন্তব্যসমূহ

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)