Ornamental fish রঙিন মাছের নাম ,ছবি ,চাষ ,খাবার ও রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি -2022

Didibhai Agrofarm
0
রঙিন মাছের নাম ,ছবি ,চাষ ,খাবার ও রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি

রঙিন  মাছের অনেক প্রজাতি আছে। তার মধ্যে মাত্র কয়েক হাজারকে মানুষ চিহ্নিত করতে পেরেছে। আগের দিনে মানুষ ছােট জলাধারে রঙীন মাছ রেখে তাদের শখ মেটাতাে, কিন্তু এখন ছােটবড়

মাপের কাচের অ্যাকোয়ারিয়ামে এই মাছ রেখে মনােরঞ্জন করছে। অ্যাকোয়ারিয়ামে আবার বিভিন্ন রকমের পাথর, কৃত্রিম গাছ ইত্যাদি রেখে আরও দর্শনীয় করে তুলেছে। বিভিন্ন জাতের রঙীন মাছ 

গুলাে হল – ডিকাস, এনেজল, মলি, গাপ্পি, সাের্ডটেল, বার্ব, টেট্রো, রেড সিচলিড়, রাসবােরা, ফাইটার, গােরামী ইত্যাদি।

 অধিকাংশ অবস্থাপন্ন লােকেরা এখন ঘরে কাচের অ্যাকোয়ারিয়ামে রঙীন মাছ রাখছে। তাই এই মাছের চাহিদা দিনে দিনে ব্যাপকভাবে বাড়ছে। আর এই ব্যাপক চাহিদার জন্য এই মাছের চাষ কিছু লােকের জীবিকার সংস্থান করছে। যেহেতু এই মাছের চাষ সিমেন্টের চৌবাচ্চা বা সিমেন্টের ভ্যাটে করা সম্ভব তাই যাদের পুকুর নেই তারাও এই মাছ চাষ করতে পারেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকার স্বনির্ভর  গােষ্ঠীর মহিলাদেরকে নিয়ে এই মাছের চাষ ব্যাপকভাবে করতে চাইছেন। ভারত সরকারও বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে এই মাছের চাষ বাড়াতে চাইছেন। বিদেশে এই মাছ রপ্তানি করে বহু বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যেতে পারে।

বর্তমানে আমাদের দেশে অনেক বিদেশী ও দেশীয় রঙীন মাছ অ্যাকোয়ারিয়ামে পালন করা হচ্ছে -এগুলির মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযােগ্য হল

(ক) বিদেশী রঙীন মাছ – গাপ্পী, মলি, প্ল্যাট, সাের্ডটেল, ডিস্কাস, অ্যানজেল, গােল্ডফিস, ফাইটার, গােরামী, টাইগার শার্ক, সিলভার শার্ক, রেনবাে শার্ক, পিরানহা, টাইগার বার্ব ইত্যাদি।

(খ) দেশীয় রঙীন মাছ - তিতপুঁটি, ফলুই, রাসবােরা, মৌরলা, দাঁড়কে, খলসে, চাঁদা, পায়রাচাদা, লােচ ইত্যাদি।


প্রজননের বৈশিষ্ট্যতা অনুযায়ী রঙীন মাছের প্রকারভেদ-

 প্রজননের বৈশিষ্ট্যতা অনুযায়ী এদের দুটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায়-

ক) বাচ্চা পাড়া বা অন্তজ জনন গােষ্ঠী

খ) ডিম পাড়া বা অন্তজ জনন গােষ্ঠী। 

    ক.বাচ্চা পাড়া বা  অন্তজ জনন গোষ্ঠী -

     কিছু কিছু মাছ আছে যাদের অন্তনিষেক হয় এবং ডিম না পেড়ে সরাসরি বাচ্চা দেয়। এদের লাইভ বিয়ারার বা বাচ্চা পাড়া গােষ্ঠীর মাছ বলা হয়। এদের পুরুষ ও স্ত্রী মাছ চেনা খুব সহজ। পুরুষদের পেটের কাছে একটা ছুঁচালাে পাখনা থাকে যাকে গােনােপােডিয়াম বলে। পক্ষান্তরে স্ত্রী মাছদের পাখনা গােল হয়

    এবং মােটা পেটে কালাে দাগ দেখা যায়। যাকে বলে গ্র্যাভিড স্পট। লাইভ বিয়ারিং মাছেদের খুব সহজ। এরা প্রায় বারাে মাস বাচ্চা দেয়, দেখা যায় এরা বেশীরভাগ একাদশী, আয়াত এইসব দিনে বাচ্চা দেয়। বাচ্চা ছাড়তে আরম্ভ করলে সাধারণতঃ ৪ ঘন্টার মধ্যেই সব বাচ্চা ছেড়ে দেয়।  এই জাতের মাছেরা যখন বাচ্চা দিতে আরম্ভ করে, তখন তিনবার পরপর ২০/২১ দিন বাদে দেয়। বাচ্চাগুলাে মায়ের পেট থেকে বেরােনাের কিছুক্ষণ পর থেকেই সাতার কাটতে শুরু করে। অনেক  সময় মা-বাবা মাছেরা পেট ভরা খাবার না পেলে নিজেদের বাচ্চাদের মেরে ফেলে। 

     কয়েকটি উল্লেখযােগ্য সরাসরি বাচ্চা পড়া মাছ হল – গাপ্পি, সাের্ডটেল, প্রাটি,মলি গার্গ ইত্যাদি। ডিম পাড়া অন্তজ জনন গােষ্ঠী ও এই শ্ৰেণীযুক্ত মাছেরা সরাসরি ডিমপাড়ে এবং এদের নিষেক প্রতিক দেহের বাইরে হয়। তারপর একটি নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে ডিমফুটে বাচ্চা বের হয়।

    ্ক.১.গাপ্পি মাছ 

     জন্মস্থান -উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের তীরে ত্রিনিদাদে।
    ছবি গুগল হইতে সংগৃহিত

    বর্ণনা - নানা বিচিত্র রঙের গাপ্পি পাওয়া যায়। তবে এই বর্ণবৈচিত্র শুধু পুরুষ মাছের ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ। স্ত্রী গাপ্পি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সাদা ফ্যকাশে হয়। পুরুষ গাপ্পি গােলাপী ও নীল মেশানাে, সবুজ ও হলুদ মেশানাে, বাসন্তী রং বা হাল্কা বেগুনী রঙ এর হয়। অনেক গাপ্পির শরীরে বিভিন্ন রঙ পরপর সাজানাে থাকে।

    ক.১.১.প্রয়োজনীয় পরিবেশ-

    গাপ্পি খুব শান্ত স্বভাবের মাছ এবং খুবই কষ্ট সহিষ্ণু। এদের খাদ্যের ও বাছবিচার নেই। দ্রুতহারে বাচ্চা প্রসব করে। এরাে মশার লার্ভা খেয়ে ফেলে। তাই মশা নিয়ন্ত্রনে এদের ব্যবহার উল্লেখযােগ্য। জলের তাপমাত্রা ২৪°-৩০°সে হলে এরা সবথেকে পছন্দ করে। পি. এইচ ৭-৮ হওয়া দরকার।

    ক.১.২.প্রজনন ওবাচ্চা সংগ্রহ-

    চার সপ্তাহ বয়সেই স্ত্রী গাপ্পি বাচ্চা প্রসব শুরু করে। একেবারে ৩০-৪০ টি বাচ্চা প্রসব করে। খুব ছােট অ্যাকোরয়ারিয়ামে বাকাঁচের বয়ামে বা মিহি জালের তৈরী খাচা অ্যাকোয়ারিয়ামে ডুবিয়ে তার মধ্যে। স্ত্রী গাপ্পিকে রাখলে সেখানেই বাচ্চা প্রসব করে। জলের তাপমাত্রা থাকা উচিত ২৪°সে. এর মধ্যে। বাচ্চা  প্রসবের পর অ্যাকোয়ারিয়ামের জলে এক চামচ খাবার লবণ মেশালে বাচ্চাগুলি ভাল থাকে।

    ক.২. মলি মাছ -

     জন্মস্থান- মেক্সিকো। 

    মলি মাছ
    ছবি গুগল হইতে সংগৃহিত

    বর্ণনা - বিভিন্ন ধরণের মলি হয়। এর মধ্যে ভিলিফেরা মলি স্ত্রী মাছ ১৮ সেমী লম্বা ও পুরুষ মাছ  ১৫ সেমি লম্বা হয়। অন্যান্য মলির ক্ষেত্রে স্ত্রী মছি ১২ সেমি এবং পুরুষ মাছ ১০ সেমী পর্যন্ত লম্বা হয়। মলি সাধারণত :  কালাে রং এর এবং খুব উজ্জ্বল হয়। এদের বলে ব্ল্যাক মলি । তবে বর্তমানে বিজ্ঞানীরা সাদা  মলি সৃষ্টি করেছেন। এছাড়াও বিভিন্ন রঙ-এর মলি হয় যাদের পাখনার রঙ সবুজ সোনালী হয়। 

    ক.২.১.প্রয়োজনীয় পরিবেশ -

    এরা খুব শান্ত স্বভাবের মাছ। তৰে দুটি পুরুষ মাছ একসাথে থাকলে মারামারি করতে  পারে। তাই মাঝারি অ্যাকোয়ারিয়ামে স্ত্রী পুরুষ মলির অনুপাত হওয়া উচিত৩:১।

    জলের তাপমাত্রা ২০-৪০ সে হলে এদের পক্ষে সবচেয়ে উপযুক্ত হয় অন্যান্য মাছের সঙ্গে মলিকে রাখলে কোনো অসুবিধা হয় না। এরা সব ধরনের খাবার খায় ।  তবে প্রিয় খাদ্য শ্যাওলা । তই এদের জন্য অ্যাকোরিয়ামে কিছুটা শ্যাওলা দরকার। 

    ক.২.২.প্রজনন ওবাচ্চা সংগ্রহ -

    স্ত্রী মলি ৬ মাস বয়সে পূর্ণতা প্রাপ্ত হয় এবংৰাচ্চা প্রসব করতে  শুরু করে। প্রতিবারে খুব কম করে ৩০টি এবং সর্বোচ্চ ৮০টি পর্যন্ত বাচ্চা প্রসব করে। স্ত্রী মলিকে আলাদাভাবে ছোট অ্যাকোরিয়ামে ছেড়ে দিলে এরা বাচ্চা প্রসব করে। প্রজননের আদর্শ পরিবেশ তৈরীর জন্য ১ ফুট লম্বা অ্যাকোরিয়ামে  কিছু ভাসন্ত ও কিছু জলে ডোবা জলজ  উদ্ভিদ রাখতে হয়। জলে এক চামচ খাবার লবন মিশ্রিত করতে হবে ।

    ক.৩.সোর্ডটেইল মাছ -

    জন্মস্থান- আটলান্টিক মহাসাগরের দক্ষিন মেক্সিকো এবংগুয়াতেমালায়। 

    সোর্ডটেইল মাছ -
    ছবি গুগল হইতে সংগৃহিত

    বর্ণনা- পুরুষ সাের্ডটেইল লম্বায় ৮-১০ সেমি চেহারার সরু ও লম্বা। পেটের দুপাশের পার্শ্বরেখা বরাবর লাল দাগ। লেজ- পাখনার নিচের প্রান্ত বয়স্ক মাছের ক্ষেত্রে খুঁচালাে ও লম্বা। এইজন্য এই মাছের নাম ‘সাের্ডটেইল’। এছাড়া পুরুষ মাছের পেটের নীচের শলাকার মতাে একটি বিশেষ পাখনা থাকে। এর সাহায্যে স্ত্রী মাছের পেটের ভেতরই ডিমগুলি নিষিক্ত হয়।

    ক.৩.১. প্রয়ােজনীয় পরিবেশ-

    এরা কষ্টসহিষ্ণু মাছ। অ্যাকোয়ারিয়ামের জলের তাপমাত্রা ২০-২৫ সেলসিয়াস  এর মধ্যে থাকলে সব থেকে ভাল হয়। তবে এরা ১০ সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে। জলে পি.এইচ. ৭২ হওয়া দরকার অ্যাকোয়ারিয়ামে পুরুষ মাছ বেশী থাকলে এরা মারামারি করে, তখন সময় সংখ্যক  স্ত্রী মাছ থাকলে শান্ত হয়ে থাকে।

    ক.৩.২.প্রজনন ও বাচ্চা সংগ্রহ -

    স্ত্রী মাছ গর্ভবতী হলে পেটের দিকটা ভারী হয়ে ওঠে। এই সময় স্ত্রী মাছকে জালীর সাহায্যে  তুলে নিয়ে  আলাদা পাত্র বা অ্যাকোয়ারিয়ামের মধ্যে রাখা দরকার। তালে | তবে ওই পাত্রে  গাছপালা ইত্যাদি  লুকিয়ে থাকার জায়গা চাই। সবগুলি বাচ্চা প্রসব একদিনের বেশি  সময় লাগে।একবারে প্রায় শতাধিক বাচ্চা হতে পারে। তাই যখনি মনে হবে প্রসব শেষ হয়েছে স্ত্রী মাছকে অন্যত্র সরিয়ে নিতে হবে  এই সময়ের মধ্যে স্ত্রী মাছেরা নিজেদের বাচ্চা  খেয়ে নিতে পারে। বাচ্চা গুলো একটু বড় হলে তবেই প্রাপ্ত বয়স্ক মাছের ঝাঁকে ছাড়া যাবে না হলে তারা অন্য মাছের খাদ্যে পরিণত হতে পারে। স্ত্রী মাছ ৫ সপ্তাহ  পরে আবার বাচ্চা প্রসব করে।

    ক.4.প্লাটি মাছ -

     জন্মস্থান -মেক্সিকো ও গুয়াতেমালা।

    প্লাটি মাছ
    ছবি গুগল হইতে সংগৃহিত 

    বর্ণনা- রঙ ও চেহারায় এগুলি সাের্ডটেইলের সঙ্গে তুলনীয়। তবে লেজে সোর্ডটি  থাকে না। আকৃতি একটু  চওড়া। পুরুষ প্রাটি লম্বায় ৩সেমি পর্যন্ত লম্বা হয়। বিভিন্ন রঙের প্লাটি দেখা যায়। যেমন বেগুনি প্লাটি । দেহটা  সাদা ও পেটের তলের রঙ কালো এমন প্লাটি হলদে রঙের প্লাটি যার লেজ কালো, নীল প্লাটি তার লেজ সাদা, ইত্যাদি। 

    ক.৪.১.প্রয়োজনীয় পরিবেশ-

    এরা খুব শান্ত কষ্টসহিষ্ণু। জলের তাপমাত্রা থাকা দরকার ২০-৩০” সে: এর মধ্যে, তবে এরা ১০ সে: পর্যন্ত তাপমাত্রা ও সহ্য করতে পারে। খাদ্যগ্রহণে বাছ বিচার নেই, তবে শ্যাওলা পছন্দ করে। 

    ক.৪.২.প্রজনন ও বাচ্চা সংগ্রহ -

    প্রতিমাসে একটি স্ত্রী প্রাটি গড়ে ৩০-৪০ টি বাচ্চা প্রসব করে। এরা সাের্ডটেইল -এর সঙ্গে প্রজনন করতে পারে। প্রতিটি লাইভ বেয়ারিং মাছ জন্মের সময় মায়ের আকৃতি পায়। তাদের স্ত্রী-পুরুষ আলাদা। করা যায় না। জন্মের ৩-৪ সপ্তাহ পর থেকে পুরুষ মাছের চিহ্নগুলি প্রকাশ পেতে পারে। বাচ্চা প্রসবের জন্য জলের পি.এইচ ৭.১-৭.৪ হওয়া উচিত। প্রসবের সময় অ্যাকোয়ারিয়ামের তলায় কিছু জলজ উদ্ভিদ রাখা অবশ্যই দরকার। এই উদ্ভিদ রোদ পেয়ে জলে অক্সিজেন বৃদ্ধি করে এবং বাচ্চা মাছেরা এদের মধ্যে লুকোতে পছন্দ করে। প্রসবের স্ত্রীমাছ ও পুরুষমাছকে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া দরকার। নাহলে বাচ্চাদের খেয়ে ফেলতে পারে। স্ত্রী মাছেদের চেনার উপায় হল এদের পেট সামান্য ফোলা হয় এবং পাখনা গােল হয়। তার ওপর একটা কালাে দাগ থাকে। পুরুষ মাছের পেটের কাছে গোনােপেডিয়াম সঁচালাে পাখনা থাকে। মাছের বাচ্চাগুলি শুকনো গুড়ো খাদ্য মিহি করে অথবা জীবন্ত খাদ্য খেতে দেওয়া দরকার।

    বাচ্চা প্রসবকারী মাছেরা ২১ দিন অন্তর তিনবার বাচ্চা দেয়। তারপর তিনমাস বাচ্চা প্রসব বন্ধ থাকে।  তারপর  আবার বাচ্চা প্রসব করে। এরা ৪-৫ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে ও নিয়মিত বাচ্চা প্রসব করে।থাকে।  তবে অবশ্যই পালনের শর্তগুলি পূরণ হতে হবে।

    খ.ডিম পাড়ামাছ-

    এই জাতীয় মাছের সংখ্যাই বেশী ডিম থেকে বাচ্চা বের হয়।

    মাছের সংখ্যাই বেশী। এই মাছেরা প্রথমে ডিম পাড়ে। তারপর একটি নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে

    ডিম্ থেকে  বাচ্চা বের হয়। এরা যেমন সমুদ্রের লবনাক্ত জলে ডিম পাড়ে। তেমনি আবার এরা আবদ্ধ জলে অর্থাৎ জলাশয় ও অ্যাকোয়ারিয়ামেও ডিম পাড়ে।

    খ.১.গাম্বুসিয়া মাছ-
    গাম্বুসিয়া মাছ
    ছবি গুগল হইতে সংগৃহিত 

    জন্মস্থান-আমেরিকার দক্ষিণ-পূর্ব অংশে আটলান্টিক মহাসাগরের উপকূলবর্তী অঞ্চলে এই মাছটি পাওয়া যায়।

     বর্ণনা -  পুরুষ গাম্বুসিয়া ৩–৪ সেমি লম্বা হয় এবং এদের রঙ সাদা হয়, তার উপর কালাে ছােট ছােট দাগ থাকে অনেক সময় পুরুষ মাছের লেজের রঙ হালকা হলুদ হয় । প্রয়োজনীয় পরিবেশ ও গাম্বুসিয়া মাছ মশার ডিম লার্ভা, পিউপা খেয়ে ফেলে তাই ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণে এদের ব্যবহার হয়। এরা শীত প্রধান দেশের মাছ তাই জলের তাপমাত্রা কম থাকলে ভালাে হয়। খাদ্য গ্রহণে এদের মাছ-বিচার নেই। প্রজনন ও বাচ্চা সংগ্রহ ও স্ত্রী গাঙ্গুসিয়া প্রায় ২৫ দিন অন্তর শতাধিক বাচ্চা প্রসব করে। তবে এর জন্য একটি ছােট অ্যাকোরিয়ামের একটি স্ত্রী ও একটি পুরুষ মাছকে আলাদা করে পালন করতে হবে।

     খ.২.গোল্ড ফিস --

    গোল্ড ফিস -
    ছবি গুগল হইতে সংগৃহিত 

    এই মাছের বিজ্ঞানসম্মত নাম - কেরেসিয়াস অরেটাস গােল্ডফিস এটি সাধারণত  পােনামাছের শ্রেণীভুক্ত। এদের জন্মস্থান চীন। তবে আমাদের দেশের আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে এরা থাকতে পারে এবং বংশবৃদ্ধি করে। বিভিন্ন রঙ এবং আকৃতির গােল্ড ফিস মাছ পাওয়া যায়। কোন মাছের একটা লেজ আবার কোন মাছের দুটি লেজ থাকে এবং তা নীচের দিকে ঝুলে থাকে। অনেক মাছের শরীর ছােট | কিন্তু লেজ তার তুলনায় অনেক বড়। আবার কোন গােল্ডফিসের স্বাভাবিক মুখের পরিবর্তে পাচার মত থ্যাবড়ানাে মুখ হয়। কিছু গােল্ডফিসের চোখ দুটো বড় হয়ে বাইরের দিকে অনেকটা বেরিয়ে আসে। খাদ্যের ব্যাপারে এদের কোন বাছ বিচার নেই। এরা শ্যাওলা, প্রাণী কণা, ছােট ছােট কেঁচো এমনকি কৃত্রিম খাদ্যও খায়।

    খ.২.১..প্রয়ােজনীয় পরিবেশ-

     এই মাছ ঠান্ডা অঞ্চলের মাছ, অক্সিজেনের প্রয়ােজনও বেশি। এরা শান্তিপ্রিয় ও নির্বিরােধ।

    অ্যাকোয়ারিয়ামের তলা থেকে বালি বা নুড়ি তুলে ছিটিয়ে ফেলা এদের অনেক খেলার এক গায়ে গা ঘষতে ভালােবাসে বলে অ্যাকোয়ারিয়ামের গাছগুলি ভালোভাবে পুঁততে হবে ধরনের খাবার খায়, তবে আমিষজাতীয় খাবারে প্রাধান্য দেওয়া উচিত। যে আত চৌবাচ্চায় গােল্ডফিস পালন করা হয় তার জল মাসে দুবার ফেলে দেওয়া দরকার। বর্ষাকালে  একবার জল পাল্টানাে চলে।

    খ.২.২.প্রজনন ওবাচ্চা সংগ্রহঃ

    পুরুষ ও স্ত্রী মাছ চেনার উপায় হল পুরুষ মাছের দেহ ও বক্ষ পাখনা খসখসে হয়। ডিম থাকার জন্য পেট ফোলা থাকে। সাধারণতঃ এরা বছরে দুবার ডিম পাড়ে - বর্ষাকালে শীতকালে।  ডিম পাড়ার সময় পুরুষ ও স্ত্রী মাছ জলের উপরের স্তরের দিকে চলে আসে এবং ডিম পারে  | একটা অ্যাকোয়ারিয়াম, গামলা বা ট্রেতে পরিষ্কার  কলের জল ভরে পুরুষ ও স্ত্রী মাছকে ছেড়ে দিতে হবে।  ঐ জলে মাইরি ও ফাইলাস গাছ বা প্লাস্টিকের সুতাের গুচ্ছ ভালােভাবে ধুয়ে রেখে দিতে হবে। ১০-১২ ঘন্টা থেকে ১ দিনের মধ্যে স্ত্রী মাছ ডিম ছাড়ে। এরপর পুরুষ মাছ ডিমগুলিকে নিষিক্ত করে  ডিমগুলি আঠাল হয়। ফলে গাছের পাতায় বা প্লাস্টিকের সুতােয় আটকে যায়। এরপর স্ত্রী ও পুরুষ। জল থেকে তুলে ফেলতে হবে। ২-৩ দিন বাদে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। ২৫° সে পর্যন্ত তাপমাত্র গােল্ডফিসের ডিম ছাড়ার পক্ষে আদর্শ। বাচ্চাগুলি ইনফিউসেরিয়া, ডাফনিয়া ও মাছের গুঁড়াে খায়, তা জলজ উদ্ভিদ সহ তৈরী খাবার প্রায় সবকিছুই খেতে শুরু করে। এরা জলজস্তরের সর্বত্র বিচরণ করতে পারে। তবে জলাশয়ের নীচের স্তরে থাকতে ভালােবাসে এবং শ্যাওলাকেঠুকরে ঠুকরে খায়।

    খ.২.৩.কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গোল্ডফিস-

     (ক) চোখ ও মাথার বৈচিত্র অনুযায়ী -

     ১। রুইকান গােল্ডফিস - এদের দেহকমলা-লালরঙের। এদের সাধারণত গােল্ডফিস বলে।

     ২। টেলিস্কোপিকব্ল্যাকমুর গােল্ডফিস- এদের দেহ কালাে এবং চোখ টেলিস্কোপের মত। 

    ৩। ওরান্ডা গােল্ডফিস - এদের দেহ লাল রঙের এবং মাথায় জেলির মত লাল রঙের টুপি থাকে। মুখটা ভোতা এবং দেহটা গােলাকার।

     ৪। লায়ন হেড গােল্ডফিস -দেহ ও ওরাল্ডা গােল্ডফিসের মত কিন্তু কোন পৃষ্ঠ পাখনা থাকে না। পায়ু ও পুচ্ছ  পাখনা খুবই ছােট।

     (খ) লেজের পাখানার বৈচিত্র্য অনুযায়ী - ফ্যানটেইল, ভেলটেইন, ওরাল্ডা ইত্যাদি।

    খ.৩.গোড়ামি মাছ -

     জন্মস্থান- থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, সুমাত্রা, ভারতবর্ষ ও প্রাচ্যের অন্যান্য দেশ। 

    বর্ণনা- প্রধানতঃ কয়েকটি ধরনের গােরামী মাছ দেখা যায়। 

    গোড়ামি মাছ
    ছবি গুগল হইতে সংগৃহিত 

    খ.৩.১. কিসিং গৌরীমী -

    এরা ৫ ইঞ্চি লম্বা হয়। এরা শান্তিপ্রিয় মাছ। সর্বভুক, তবে অ্যালগি, শ্যাওলা থেকে বেশি পছন্দ করে। এরা অনেকদিন বাঁচে, গায়ের রঙ সাদাটে গােলাপী। দুটি মাছ পরস্পরের ঠোট চুম্বনের ভাসতে পর্শ করে অনেক ক্ষেত্রে তা কয়েক মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হয়। 

    খ.৩.২.পার্ল গৌরামী-

    খুবই সুন্দর দেখতে। এদের দৈর্ঘ্য প্রায় ৪ ইঞ্চি। দেহটা চওড়া, গলা ও পেটের তলা কমলা। দুপাশের পার্শ্বরেখা বরাবর লম্বালম্বি কালাে ডােরা। পাখনা ও সারা গায়ে অসংখ্য মুক্তোর দানার মতো ফুটকি ফুটকি দাগ। পেটের তলার পাখনা চওড়া লেজের গােড়ার গিয়ে শেষ হয়েছে। এই মাছ পূর্ণবয়স্ক হতে অনেক সময় নেয়। এটি শান্তিপ্রিয় মাছ, সর্বভুক।

     খ.৩.৩. ব্লু গৌরামী-

    এদের দৈর্ঘ্য ৪ ইঞ্চির মত লম্বা, গায়ের রঙ হালকা নীল, পাখনায় ফুটকি দাগ, লেজের গােড়ার ও মাঝ বরাবর দুপাশে একটি করে কালাে দাগ আছে। এরা সর্বভুক, পুরুষ মাছের পিঠের দিকটা একটু বেশি বড় হয়ে থাকে এরা মাঝে মাঝে অন্য মাছকে তাড়া করে।

     খ.৩.৪.প্রয়োজনীয় পরিবেশ-

    অ্যাকোয়ারিয়ামের জলের তাপমাত্রা ২৫-২৮° সে থাকলে ভাল হয়। পি. এইচ হওয়া দরকার। ৭.০ এরা জীবন্ত খাবার যেমন- টিউবিফেব্র, মশার লার্ভা ইত্যাদি পছন্দ। 

    খ.৩.৫.প্রজনন ওবাচ্চা সংগ্রহ-

    আলাদা একটা অ্যাকোয়ারিয়ামে স্ত্রী ও পুরুষ গােরামী মাছকে একসঙ্গে ছেড়ে দিতে হয়। পুরুষ মাছটি স্ত্রী মাছের পেটে চাপ দিতে থাকবে। স্ত্রী মাছডিম ছাড়তে শুরুকলে পুরুষ মাছ মুখেকরেডিমগুলিকে ভাসিয়ে রেখে। স্ত্রী মাছ ডিম পাড়ার কাজ শেষ করলেই তাকে তুলে অন্য পাত্রে রাখতে হবে। না হলে তারা ডিম খেয়ে নেবে। ডিম ফুটে বাচ্চারা সাঁতার কাটতে শুরু করলে পুরুষ মাছ মুখে করে ডিমগুলিকে ভাসিয়ে রাখে। স্ত্রী মাছ ডিম পাড়ার কাজ শেষ করলেই তাকে তুলে অন্য পাত্রে রাখতে হবে। না হলে তারা ডিম খেয়ে নেবে। ডিম ফুটে বাচ্চারা সাঁতার কাটতে শুরু করলে পুরুষ মাছটিকে অন্যত্র সরিয়ে রাখতে হবে। বাচ্চাদের ইন-ফিউসােরিয়া খেতে দিতে হবে। ১০ দিন পর থেকে আর্টেমিয়া বাব্রাইন শ্রিম্প খাবে।

     খলসে মাছ - জন্মস্থানঃ ভারতবর্ষের নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুরে পাওয়া যায়। বর্ণনা - নীল দেহের ওপর লাল ডােরা কাটা থাকে। পুরুষ মাছ উজ্জ্বল বর্ণের হয়। স্ত্রী মাছ অপেক্ষাক বিবর্ণ। দৈর্ঘ্য ২ ইঞ্চি। 

    খ.৩.৬.প্রজনন ওবাচ্চা সংগ্রহঃ

    ফাইটার মাছের অনুরূপ প্ৰজনন পদ্ধতি। বাসা তৈরী ও ডিম এবং বাচ্চাদের রক্ষনাবেক্ষন পুরুষ। মাছের কাজ। ডিম পাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্ত্রী মাছটিকে সরিয়ে ফেলা উচিত। প্রজননের সময় অন্য কোন মাছকে ঐ অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখা চলবে না, তাহলে পুরুষ মাছটি তাদের আক্রমন করবে।

    খ.৪.এঞ্জেল মাছ - 

    জন্মস্থান - দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন নদী।

    বর্ণনা - এরা লম্বায় ৪ ইঞ্চি হয়। সাধারণতঃ রূপালী রং এর হয়। দুপাশে চারটি করে আড়াআড়ি কালাে ডােরা থাকে। গড়ন চ্যাপ্টা হয়, পিঠ ও পায়ু পাখনা বড় হয়। নৌকার পালের মত লেজের প্রান্ত দুটি সূচালাে।

    এঞ্জেল মাছ
    ছবি গুগল হইতে সংগৃহিত 

    খ.৪.১. প্রয়োজনীয় পরিবেশ-

    এরা খুব শান্ত ও ভীতু প্রকৃতির মাছ, অ্যাকোয়ারিয়ামের জলের তাপমাত্রা ২৫-২৮ সে. থাকা ভাল। জলের পি.এইচ হওয়া উচিত ৬.৫। এরা যেকোন খাবার খায়। ডাফনিয়া ও শ্যাওলা পছন্দ করে মশার লার্ভা ও পিউপাও পছন্দ করে।

     খ.৪.২.প্রজনন ওবাচ্চা সংগ্রহ-

    স্ত্রী এঞ্জেলের গর্ভে ডিম হলে পুরুষ মাছ সবসময় স্ত্রী মাছের সঙ্গে থাকবে অন্য এঞ্জেল কাছাকাছি এলে তাকে ঠুকরিয়ে সরিয়ে দেবে। স্ত্রী এঞ্জেলের ডিম পাড়ার সময় এলে পেটের তলায় একটা সরু নল বাইরের দিকে বের হয়। পেটটা ও মােটা হয়। পুরুষ এঞ্জেলের ও পেটের তলায় একইরকম সরু নল বের হয়। নল বের হওয়া অবস্থায় স্ত্রী ও পুরুষ মাছকে অ্যাকোয়ারিয়ামের জলে ছেড়ে দিতে হবে। জলের তাপমাত্রা ২৬°সে. রাখতে হবে, না হলে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হবে না। ডিম ফোটাবার অ্যাকোয়ারিয়াম  পুরানাে অ্যাকোয়ারিয়ামের জল ব্যবহার করাই ভাল। স্ত্রী মাছ অ্যাকোয়ারিয়ারমের কাঁচে বা জল উদ্ভিদের পাতায় ডিম পাড়ে। পুরুষ ও স্ত্রী এঞ্জেল মাছ পাতার উপরে ডিম পাড়লে পুরুষ মাছটি ডিমও ওপরে পেটের তলার নল থেকে শুক্ররস ছেটাতে থাকে ফলে ডিমগুলি নিষিক্ত হয়। ডিম পাড়া শেষ হলে মাছ পাতার চারপাশে ঘুরতে থাকে। ডিম ফোটার জন্য জলে বেশী করে অক্সিজেন দরকার। ডিম পাড়া শেষ হলে মাছকে জালের সাহায্যে   নেওয়াই ভাল। এরপর বিদ্যুৎ চালিত মােটরের সাহায্যে ডিম্ হওয়ার দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে অন্যথায়  ডিম ফোটে না। অনিষিক্ত ডিমের রঙ সাদা থেকে যায়

    সেগুলি পিন বা সুচের সাহায্যে তুলে  আনা দরকার। না হলে ছত্রাকের আক্রমন হবে বা পচন ঘটবে ফলে জল দূষিত হবে। ডিম ফুটে বাচ্চা বের হতে ৪৮-৭২ ঘন্টা লাগে তখন তারা ডিমের।

    ৩৪৮-৭২ ঘন্টা লাগে তখন তারা ডিমের কুসুম থেকেই খাবার পায়। ৬-৭ দিন পরে বাচ্চারা সাঁতার কাটতে শুরু করে। তখন এদের জীবন্ত খাবার,  যেমন ডাফনিয়া খেতে দেওয়া হয়। আটেমিয়ার ডিমও অল্প দেওয়া হয়। ৪ সপ্তাহের পর থেকে এরা কেঁচো খেতে পারে ।

     খ.৫.বেট্ট্রা মাছ - 

    জন্মস্থান- থাইল্যান্ড। 

    বেট্ট্রা মাছ

    বর্ণনা  পুরুষ ট্রোর রঙ ও পাখনার জেল্লা অসাধারণ। লাল, নীল, সাদা, সবুজ, খয়েরী, বেগুনি প্রভৃতির রঙ -এর মিশ্রন ঘটেছে। দুটি পুরুষ মাছ একসঙ্গে থাকলেই ভয়ঙ্কর লড়াই করে। দৈর্ঘ্যে এরা ৬ সেমি হয়, পুরুষ মাছের পাখনা, স্ত্রী মাছের থেকে বড় হয়, লেজটিও খুব সুন্দর হয়, চওড়া লেজ নীচের দিকে ঝােলানাে থাকে। স্ত্রী মাছেরা নিজেদের মধ্যে লড়াই করে না। এরা খুব কষ্টসহিষ্ণ মাছ। অন্যান্য সাল সঙ্গে এদের রাখা যায় না।

     খ.৫.১প্রয়োজনীয় পরিবেশ-

    এরা খুব কম জায়গায় থাকতে পারে। খুব ছােট কাচের জারে ও এদের রাখা যায়। এরা জলের ওপর মুখটা তুলে বাতাস থেকে অক্সিজেন গ্রহণ করে। জলের তাপমাত্রা ২৬°-২৮° সে এর মধ্যে। অ্যাকোরিয়ামের তলায় ১ ইঞ্চি পুরু বালি বিছিয়ে তাতে ৪-৫টা জলজ উদ্ভিদ লাগাতে হবে। জল রাখতে হবে ৫ ইঞ্চি উচ্চতা অবধি। এরপর পুরুষ মাছের মুখ দিয়ে বুদবুদ বেরােতে থাকে এবং তা দিয়ে একটা বাসার মত তৈরী হয়। এই সময় স্ত্রী মাছটিকে পুরুষের কাছে ছেড়ে দিতে হবে। যদি পুরুষ মাছটি স্ত্রী  মাছটিকে তাড়া করে তবে তাড়াতাড়ি নেটের সাহায্যে তুলে আবার পার্টিশানের অন্যদিকে রেখে দিতে হবে। না হলে পুরুষ মাছটি তাকে মেরে ফেলতে পারে। 

    এই রকম কয়েক বার করার পর যখন দেখা যাবে পুরুষ মাছটি স্ত্রী মাছের গায়ের কাছে রয়েছে তখন বােঝা যাবে তারা জোড় বেঁধেছে। এরপর কয়েক ঘন্টা তারা ছুটাছুটি করবে। শেষে পুরুষ মাছটি স্ত্রী মাছের পেটে হাল্কাভাবে চাপ দিতে থাকবে। প্রতি বারে চাপে ২০-৩০ টি ডিম বাইরে বেরিয়ে আসবে সঙ্গে সঙ্গে পুরুষ মাছটি ডিমগুলিকে নিজের মুখের ভেতরে নেবে এবং ফেনার তৈরী ঘরে রেখে আসবে। কারণ স্ত্রী মাছ ডিম খেয়ে নেয়। সমস্ত ডিম পাড়তে প্রায় ২৪ ঘন্টা লেগে  যায়। এরপর পুরুষ ও স্ত্রী মাছকে সরিয়ে অন্য পাত্রে রাখতে হবে। পরের দিন পুরুষ মাছকে আবার অ্যাকোয়ারিয়ামে ছাড়তে হবে।  তারপর অ্যাকোয়ারিয়ামের সর্বত্র খাবারের সন্ধানে ঘুরতে থাকে । ফেনার বাসায় এরা ৩–৪ দিন থাকবে। তারপর অ্যামোরিয়ামের সর্বত্র খাবারের সন্ধানে সময় পরুষ মাছটিকে অন্য জায়গায় সরিয়ে দিতে হবে। বাচ্চারা প্রথম অবস্থায় ইনকিউসেব্রিয়াস দিন পর ডাফনিয়া থেতে দেওয়া শুরু হয়। প্রথম অবস্থায় এরা জল থেকে অক্সিজেন নেয়, ৬ সপ্তাহ বাতাস থেকে অক্সিজেন নিয়ে শুরু করে। ৬ মাস বয়স হলে পুরুষ মাছেদের আলাদা রাখা দরকার এরা নিজেদের মধ্য লড়াই করবে।

    খ.৬.ডিসকাস মাছ  - 

    ডিসকাস  বাদামী বা হলুদ হয়। এটি খুব দুর্লভ জাতের মাছ। এর বিজ্ঞানসম্মত নাম সিম্ফোসেডান। 

     জন্মস্থান- দক্ষিণ আমেরিকার ব্রাজিল। 


    বর্ণনী - দেহের গঠন অনেকটা পায়রা চাদার মত। লম্বায় প্রায় ১৫ সেমি হয়। পুরুষ ও স্ত্রী মাহ অতি একই হয়। মাথা থেকে লেজ পর্যন্ত ৮-৯ টি কালাে দাগ থাকে। বাদামী ও হলুদ ছাড়াও নীল লাল = ডিস্কা ও পাওয়া যায়। 

    খ.৬.১.প্রয়োজনীয় পরিবেশ -

    এরা শান্ত স্বভাবের মাছ। একটি মাঝারি অ্যাকোয়ারিয়ামে একটি পুরুষ ও একটি স্ত্রী মাছই যথেষ্ট এরা বিভিন্ন ধরনের জলে থাকতে অভ্যস্ত। ডিস্কা মাছ কষ্টসহিষ্ণু এবং প্রতিকুল পরিবেশেও বাঁচতে পারে।৫.০ পি এইচ যুক্ত জলেও এরা বেঁচে থাকতে পারে।জলের তাপমাত্রা ২৮-৩০°সে এর মধ্যে থাকা দরকার। এরা একটু বেশী পরিমানে খাবার খায় কেঁচোবাডাফনিয়া ও পালংশাকের মন্ড এদের প্রিয় খাদ্য। 

    খ.৬.২.প্রজনন ও বাচ্চা সংগ্রহ

    ডিম পাড়ার সময় ডিস্কাস মাছ দল বা ঝাক থেকে আলাদা হয়ে যায়। তখন একটি পুরুষমাই ও কাছাকাছি ঘুরতে থাকে এই সময় মাছ দুটিকে দল থেকে সরিয়ে অন্য অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখা হয়, জলে। তাপমাত্রা থাকতে হবে ২৮-৩০°সে এর মধ্যে স্ত্রী মাছ ডিম পাড়ে অ্যাকোয়ারিয়ামের কাঁচের গায়ে, এই অ্যাঞ্জেলের মত কাচের বা ফাইবারে প্রেট দিলে ভাল হয় ডিসকাসের বাচ্চারা বাইরের খাদ্য খাওয়ার বিশেষ খাদ্য পায় বাবা-মার কাছ থেকে - সেটি হল মাছের ত্বক নিঃসৃত পদার্থ। ডিম ফোটার পর। পিতামাতার যত্নের ওপর একান্ত নির্ভরশীল। ডিমফুটে বাচ্চা বের হতে সময় লাগে ৪৮ ঘন্টা।

    আরও 10 ঘন্টা  পর বাচ্চারা  সাঁতার কাটতে শুরু করে এবং পুরুষ ও স্ত্রী মাছের গায়ে লেপ্টে থাকে। এরা ডাফনিয়া খেতে শুরু করলে বাবা মা কে অন্যত্র সরিয়ে ফেলতে হবে।  যে সব বাচ্চা বেশি বৃদ্ধি পায় তাদের ঝাঁক থেকে সরিয়ে নিতে হবে। 

    গ. রঙীন মাছের বিভিন্ন খাবার

     মাছেদের খাবার এমন পরিমানে দিতে হবে যাতে ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে সব খাবার খেয়ে নেয়। তরিক্ত খাবার অ্যাকোয়ারিয়ামের তলার জমা হলে জল দষিত হবে। বিভিন্ন কোম্পানী তৈরা খাবার কিনে এনে মাছেদের দেওয়া যায়, আবার বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে খাবার তৈরীও করে নেওয়া যায়, যেমন চিংড়ি মাছ, গরু ও খাসির মাংসের ছাট মাছের ডিম ইত্যাদিকে ভাল করে শুকিয়ে তারপর পাউডারের মত মিহিভাবে গুড়াে করে মাছেদের খাওয়ানাে যেতে পারে। দিনে দুবার খাবার দেওয়া দরকার। সকালের। দিকে গুড়াে পাউডার, বিকেলে জীবন্ত কেঁচো দিতে হবে। সপ্তাহে একদিন ডাফনিয়া দিতে হবে।

    গ.১.অন্যান্য জীবন্ত খাবার-

    গ.১.১. মশার ডিম, লার্ভা, পিউপা -

     খােলা জায়গায় কোন আটকা পাত্র রেখে দিলেই তাতে মশার ডিম পাড়ে, তার থেকে লার্ভা ও পিউপা হয়, লার্ভাভুক মাছেদের এগুলি খেতে দেওয়া যায়। 

    গ.১..২.ডাফনিয়া-

    পুকুর বা ডােবায় ডাফনিয়া জন্মায়। তাই পুকুর থেকেই পরিস্কার শিশিতে এদের সংগ্রহ করা যায়। জীবন্ত ডাফনিয়াই মাছের খাদ্য। মৃত ডাফনিয়া জল দূষিত করে। 

    গ.১.৩.টিউবিফেক্স -

     টিউবিফেক্স কেঁচোর মত দেখতে। তবে আকারে অনেক ছােট নর্দমার মধ্যে এরা জন্মায়, স্রোতযুক্ত জলে। এদেরনর্দমা থেকে সংগ্রহ করে, পাক ধুয়ে পরিস্কার করে একটা পাত্রে ঠান্ডা জলে রাখতে হবে। ঐ পাত্রে ফোঁটা ফোঁটা জল ফেলতে হবে।

     মাছেদের টিউবিফেক্স দেবার জন্য কাঁচের তৈরী টেস্টটিউবের মত পাত্র পাওয়া যায়। পাত্রের কিছুটা জলের ওপরে ও কিছুটা জলের তলায় থাকে। তলায় কয়েকটি ছিদ্র থাকে। ঐ ছিদ্র দিয়ে কেঁচোরা বাইরে বেরােবার চেষ্টা করলে মাছেরাে টেনে টেনে খায়। সপ্তাহে একদিন কেঁচো দেওয়া বন্ধ রাখতে হবে। 

    গ.১.৪.ইনফিউসোরিয়া  -

     পুরানাে পচা পুকুরে বা ডােবায় এগুলি জন্মায়। অনুবীক্ষণযন্ত্রের সাহায্যে এগুলিকে দেখতে হয়। খালি চোখে দেখা যায় না। সদ্যোজাত মাছেদের জন্য এগুলি আদর্শ খাদ্য। বাড়িতেও ইনফিউসোরিয়া তৈরী করা যায়।  মাটির পাত্রে জল নিয়ে তাতে পাকা খোলা লেটুস পাতা ওর 

    মধ্যে ইনফিউসোরিয়া জন্মায়। ঐ জলটা হেঁকে নিয়ে অ্যাকোয়ারিয়ামে দিলে বাচ্চা মাছেরা খাবে। 

    ব্ৰাহন শ্রিম্প এগস বা আর্টিসিয়া- এটিও বাচ্চা মাছেদের পক্ষে খুব আদর্শ খাবার। ডিমগুলি সংরক্ষিত শুকনাে অবস্থায় কিনতে পাওয়া যায়। কিন্তু দাম অত্যন্ত বেশি হওয়ায় সকলে কিনতে পারে না।

     গ.১.৫.মাছ ও ব্যাঙর ডিম, লার্ভা, পিউপা- 

     জলজ মাছিরা গাছের পাতার ডিম পাড়ে, তার থেকে লার্ভা ও পিউপা তৈরী হয়। এগুলিও মাছের প্রিয় খাদ্য, বিশেষতঃ ক্যাটফিশ ও বার্বশ্রেণীর মাছের।

    গ.২.মাছের খাদ্যাভ্যাস -

     মাছেদের রােজ একবার দুবার খাবার দিতে হবে। তবে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে খাবার দিতে হবে। অ্যাকোয়ারিয়ামের একটি নির্দিষ্ট জায়গায় খাবারের পাত্র রেখে তাতে খাবার দিতে হবে। খাবার দেবার উপযুক্ত সময় হল সকাল ৮-৯ টা এবং বিকেল ৫-৬ টার মধ্যে। রােজ কেঁচো দেওয়া যায়। মাঝে মাঝে শুকনাে গুঁড়াে খাবার দেওয়া ভাল। খাবার এমন পরিমানে দিতে হবে যাতে আধঘন্টার মধ্যে সব খাবার খেয়ে ফেলে। আধঘন্টা পর অবশিষ্ট খাবার সমেত পাত্রটি জল থেকে তুলে ফেলতে হয়। না হলে জল দূষিত হবার সম্ভাবনা থাকে।

    প্রাকৃতিক পরিবেশে মাছরা যে খাদ্য খায় তার মধ্যে প্রােটিন, চর্বি, খনিজ পদার্থ এবং ভিটামিন। থাকে। কিন্তু কৃত্রিম খাদ্যে সমস্ত উপাদান সবসময় পূর্ণমাত্রায় থাকে না, ফলে মাছেদের শরীরে ঘাটতি হতে পারে। তাই মাছকে উপযুক্ত পুষ্টিকর পরিপূরক খাদ্য দিতে হবে। দেখতে হবে ঐ খাদ্যে প্রােটিনের পরিমান যেন ঠিক থাকে। এছাড়া ফ্যাট ও ভিটামিন ও উপযুক্ত পরিমানে থাকা দরকার তবেই মাছেরা সুস্থ ও  দীর্ঘজীবি হবে।

    ঘ .রঙীন মাছের প্রধান কয়েকটি রোগ ও তার প্রতিকার-

     অ্যাকোয়ারিয়ামের মাছের রােগ প্রতিরােধের প্রধান উপায় হল বিশ্বস্থ সুত্র থেকে সুস্থ মাছ কেনা। তবে অনেক সময় রােগ ধরা পড়ে মাছ কেনার পর। যে কয়েকটি রােগে রঙীন মাছেরা বেশী আক্রান্ত হয়, সেই রােগের লক্ষন বা উপসর্গ নিয়ে এবং তা প্রতিকারে উপায় নিয়ে আলােচনা করা হল। 

    ঘ .১.গায়ে ঘা বা ছত্রাক আক্রমন -

     এরকম ঘা নজরে পড়লেই হাত জাল সাহায্যে আক্রান্ত মাছকে তুলে অন্য একটি ছােট অ্যাকোয়ারিয়ামে বা ট্রেতে বা বালতিতে জলের মধ্যে রেখে চিকিৎসা করা দরকার। আক্রান্ত অংশে ২ শতাংশ মারকিউরােক্রোম দ্রবন তুলাের সাহায্যে লাগিয়ে দেওয়া যায়। তিন চারদিন এইভাবে। মাছের পরিচর্যা করতে হবে, তবে পাত্রের জল রােজ পাল্টে দিতে হবে, জলে একটু বেশী নুন মিশিয়ে দিতে। হবে। যদি মাছের গায়ে ওষুধ লাগানাে সম্ভব না হয় তাহলে আক্রান্ত মাছটি যে পাত্রে আছে তার মধ্যে ২ শতাংশ মারকিউরােক্রোম দ্রবণ প্রতি দুই লিটারে, ফোটা হিসাবে দিনে একবার করে দিতে হবে। এক্ষেত্রে। ও প্রতিদিন পাত্রের জল পাল্টাতে হবে। যদি ২ লিটার প্রতি ১ ফোটায় কাজ না হয়, তাহলে ২ বা ৩ ফোটা। মারকিউরােক্রোম দিতে হবে। সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়া পর্যন্ত আগের জায়গায় ফিরিয়ে দেওয়া উচিত নয়।

    ঘ .২.পাখনা পচা-

     এই রােগের প্রধান কারণ অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ। ব্যাক্টিরিয়ার আক্রমনে এই রােগ হয়। আক্রান্ত। মাছের পাখনা খসে পড়বে। সাঁতার কাটার ক্ষমতা কমে যাবে। চিকিৎসায় দেরী হলে মাছ মারা যাবে। আক্রান্ত মাছকে লবণাক্ত জলে ছেড়ে দিতে হবে। এছাড়াও অ্যান্টিবায়ােটিক ব্যবহার করতে হবে। জলের তাপমাত্রা ১৫ সে-এর বেশী রাখতে হবে, না হলে রােগ আরও বেড়ে যাবে। সাদা দাগ -

     পরজীবির আক্রমনে এই রােগ হয়। মাছের গায়ে ছােট ছােট সাদা দাগ দেখা যায়। আক্রান্ত মাছ গা ঘষতে থাকে। ক্রমে দুর্বল হয়ে পড়ে, শেষে মারা যায়।

    অপরিচ্ছন্নতার জন্য জলের পরিবেশ ঠিক না থাকলে এই রােগ হয় আক্রান্ত মাছকে তুলে আলাদা অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখতে হবে। জলে ৫ শতাংশ মিথিলিন ব্ল প্রতি ৪.৫ লিটার জলে এক ফোঁটা হিসেবে দিতে হবে। জলের তাপমাত্রা ধীরে ধীরে বাড়িয়ে ২৭°সে এ আনতে হবে তাতে সুফল পাওয়া যাবে। সম্পূর্ণ সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসা চালাতে হবে।

    ঘ .৩.ভেলভেট রোগ -

     পরজীবির আক্রমনে এই রােগ হয়। এই রােগে মাছের সারা গায়ে হলদেটে দাগ হয়। রােগ বেড়ে গেলে বড় বড় হলুদ দাগ হয়। এই রােগে বাচ্চা মাছ খুব তাড়াতাড়ি মারা যায়। পরিণত মাছেরা কিছুদিন বেঁচে থাকলেও খুব দুর্বল হয়ে পড়ে। ম্যালাচাইটগ্রীন দিয়ে এই রােগে চিকিৎসাহয়। সবার ওপরে দরকার পরিচ্ছন্নতা। 

    ঘোলা চোখ- এই রােগে চোখের ওপর সাদা বা ধোঁয়াটে আস্তরণ পড়ে। অপরিচ্ছন্নতাই এই রােগের প্রধান কারণ। এই রােগের কারণ ছত্রাক বা ব্যাকটিরিয়া, ছত্রাকের আক্রমন হলে ম্যালাকাইট গ্রীণ দিয়ে চিকিৎসা করতে হবে। ব্যাকটিরিয়ার আক্রমন হলে অ্যান্টিবায়ােটিক ব্যবহার করতে হবে। উভয়ক্ষেত্রেই মিথিলিন - ব্লদেওয়া দরকার। 

    ঘ .৪.গায়ে ঘা-

     ব্যাক্টিরিয়া ঘটিত রােগ। প্রথমে গায়ে লাল দাগ দেখা যায়। ক্রমে দাগগুলি ঘা-এ পরিণত হয়। রােগ প্রতিরােধের প্রধান উপায় হল জলের পরিবেশ স্বাস্থ্যকর রাখা। জলে পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট দিতে হবে প্রতি লিটার জলে ১ মিগ্রাম হিসাবে। টেরামাইসিন বা সালফায়ায়াজিন দিয়ে চিকিৎসা করতে হবে। 

    ঘ .৫.যক্ষ্মা-

     জীবাণুঘটিত রােগ, আক্রান্ত মাছটি খেতে চায় না। দুর্বল ও ক্ষীন হয়ে পড়ে চোখ ফুলে উঠতে পারে এবং গায়ে ঘা থাকতে পারে। শেষে মৃত্যু ঘটে। এই রােগ প্রতিকারে জলে অ্যান্টিবায়ােটিক ব্যবহার করতে হবে। জলের পরিবেশ স্বাস্থ্যকর রাখতে হবে।

     ঘ .৬.কৃমি-

     এই ধরনের পরজীবি অনেক। ফিতেকৃমির আক্রমনে পেট ক্রমশঃ মােটা হয়ে ওঠে। চিকিৎসা পদ্ধতি খুব একটা নেই।

    FAQ(প্রায়ই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নোত্তর )

    ১।বিদেশী রঙিন মাছের নাম কি ?

    কয়েকটি পরিচিত বিদেশী রঙীন মাছ হল  গাপ্পী, মলি, প্ল্যাট, সাের্ডটেল, ডিস্কাস, অ্যানজেল, গােল্ডফিস, ফাইটার, গােরামী, টাইগার শার্ক, সিলভার শার্ক, রেনবাে শার্ক, পিরানহা, টাইগার বার্ব ইত্যাদি।

    ২।দেশীয় রঙিন মাছের নাম কি ?

    কয়েকটি পরিচিত  দেশীয় রঙীন মাছ হল  তিতপুঁটি, ফলুই, রাসবােরা, মৌরলা, দাঁড়কে, খলসে, চাঁদা, পায়রাচাদা, লােচ ইত্যাদি।

    .৩।রঙিন মাছের পাখনা পচা রোগের চিকিৎসা কি ?

    এই রােগের প্রধান কারণ অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ। ব্যাক্টিরিয়ার আক্রমনে এই রােগ হয়। আক্রান্ত। মাছের পাখনা খসে পড়বে। সাঁতার কাটার ক্ষমতা কমে যাবে। চিকিৎসায় দেরী হলে মাছ মারা যাবে। আক্রান্ত মাছকে লবণাক্ত জলে ছেড়ে দিতে হবে। এছাড়াও অ্যান্টিবায়ােটিক ব্যবহার করতে হবে। জলের তাপমাত্রা ১৫ সে-এর বেশী রাখতে হবে, না হলে রােগ আরও বেড়ে যাবে। 

    ৪।রঙিন মাছের ভেলভেট রোগের চিকিৎসা কি ?

    পরজীবির আক্রমনে এই রােগ হয়। এই রােগে মাছের সারা গায়ে হলদেটে দাগ হয়। রােগ বেড়ে গেলে বড় বড় হলুদ দাগ হয়। এই রােগে বাচ্চা মাছ খুব তাড়াতাড়ি মারা যায়। পরিণত মাছেরা কিছুদিন বেঁচে থাকলেও খুব দুর্বল হয়ে পড়ে। ম্যালাচাইট গ্রীন দিয়ে এই রােগে চিকিৎসা হয়। সবার ওপরে দরকার পরিচ্ছন্নতা। 

    তথ্য সূত্র - 

    পশ্চিমবঙ্গ সরকার মৎস পালন বিভাগ।  

    আরও দেখুন -

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    0মন্তব্যসমূহ

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)