পিএইচ (pH) কী ? চাষের ক্ষেত্রে এর গুরুত্ব কী?

Didibhai Agrofarm
0
পিএইচ (pH)  কী ? চাষের ক্ষেত্রে এর গুরুত্ব কী?

কৃষি ক্ষেত্রে মাটির পি এইচ  একটি গুরুত্ব পূর্ণ বিষয়। বিভিন্ন গাছ তার নিজেস্ব সহনশীলতার মধ্যে থেকে মাটি থেকে খাদ্য গ্রহণ করে। তাই বিভিন্ন গাছ মাটির বিভিন্ন পি এইচ সমতা পছন্দ করে বেড়ে ওঠে।  সহজভাবে বললে, পি.এইচ, হল অম্লত্ব বা ক্ষারত্বের মাপ। অম্লত্ব কী? সহজ বাংলায় বলতে গেলে, ‘টোকো’ ভাব। ক্ষারত্ব কী? চুন সোডা  সাবান, জাতীয় জিনিসের যে চরিত্র থাকে, সেই চরিত্র বা ভাব। কোনো  কিছুর পি.এইচ. বলতে বোঝায় সেই বস্তুর অম্লত্ব বা ক্ষারত্বের মাত্রা। এই মাপটি করা হয় ০ থেকে ১৪ সংখ্যা ব্যবহার করে। সংখ্যা ৭-এর কম হলে বস্তুর অম্লত্ব নির্দেশ করে (অর্থাৎ বস্তুটিতে ‘টোকো’ ভাব বেশি আছে), আর সংখ্যা ৭-এর বেশি হলে বস্তুর ক্ষারত্ব নির্দেশ করে। অর্থাৎ অম্লত্ব যত বাড়বে, সংখ্যা ৭এর তত কম হবে। আর ক্ষারত্ব যত বাড়বে, সংখ্যা ৭-এর তত বেশি হবে। ঠিক ৭ হলে বুঝতে হবে তা অনুও নয়, কারও নয়। বিশুদ্ধ জলের পি.এইচ. ৭। তবে প্রকৃতিতে জল একদম বিশুদ্ধ পাওয়া যায় না, তাই ভালো জলের-ও পি.এইচ.-ও ৭-এর অল্প একটু এদিক ওদিক হতে পারে।

চাষের ক্ষেত্রে পি এইচ  এর গুরুত্ব -

যে কোনাে চাষের ক্ষেত্রেই, অম্লত্ব বা ক্ষারত্বের গুরুত্ব রয়েছে। মাটি বেশি অম্ল বা বেশি ক্ষার হয়ে গেলে চাষ ভালো  হবে না। দেখা গেছে যে প্রায় সব উদ্ভিদের ক্ষেত্রেই মাটির পি.এইচ, ৫.৫ থেকে ৮-এর মধ্যে থাকতে হবে। তবে এক একটি উদ্ভিদের ক্ষেত্রে সংখ্যাগুলা এক এক রকম হবে। যেমন ধানের ক্ষেত্রে পি.এইচ. ৫.৫ থেকে ৬.৫-এর মধ্যে থাকলে ভাল, গমের ক্ষেত্রেও তাই। বাঁধাকপির ক্ষেত্রে ৫.৬ থেকে ৬.৬ থাকলে ভাল হয়, আর ফুলকপির ক্ষেত্রে ৬ থেকে ৭। তবে দেশীয় প্রজাতি বা হাইব্রিড প্রজাতির ক্ষেত্রে অল্প তারতম্য হতে পারে। পি.এইচ. মিটার দিয়ে মাপা যেতে পারে।

মাটি পরীক্ষা -

চাষের জন্যে ফসল নির্বাচন করার আগে মাটি পরীক্ষা করে নেওয়া ভালো। মাটির পি এইচ জানার পর সেখানে ছাসে উপযুক্ত ফসল নির্বাচন করা যেতে পারে। আবার যদি যে ফসলটি চাষের জন্যে ভেবেছেন এবং সেটাই চাষ করেন তাহলে গাছের পি এইচ লেভেল যেটা প্রয়োজন সেটার জন্যে মাটির চুন ব্যবহার করে অম্লত্ব বেশি থাকলে তা কমিয়ে এনে চাষ করলে জমিতে যে সার প্রয়োগ করা হবে তা গাছের কাজে লাগবে।  গাছ তারা তারই বেড়ে উঠবে। এর জন্যে যেখানে মাটি পরীক্ষা করা হয় সেখানে যদি বলা হয় কি চাষ করবেন কতটা জমি তাহলে তারা মাটির পরীক্ষা রিপোর্ট দেখে গাছের জন্যে উপযুক্ত পি এইচ স্থাপনের জন্যে পরিমান নির্ধারণ করে জানিয়ে দিবেন কি কমানো বা বাড়ানোর জন্যে কতটা কি ব্যবহার করতে হবে। মাটি পরীক্ষা করলে শুধু মাটির পি এইচ জানা যায়না তার সাথে জমিতে খনিজ উপাদান ,কার্বন এবং সার এর উপস্থিতি আছে তা জানা যায় এবং সেই অনুসারে সার প্রয়োগ করলে টাকা খরচ কম হয় এবং ফলন ভালো হয়। আমাদের ইটা মাথায় রাখতে হবে যে মাটিতে কি আছে আমরা জানি না একপ্রকার অন্ধকার বাক্স এ হাত ঢোকানোর মতো।  হাতে কি উঠবে তা জানি না। তেমনি মাটিতে যা কিছু প্রয়োগ হয় তা ধারণার উপরে এতে খরচ বেশি হয় ,সার বেশি হলে জমি নষ্ট হয় এবং ফলন কম হয়। তাই মাটি পরীক্ষা করে জমিতে চুন এবং সার প্রয়োগ করা উচিত। 

পরীক্ষা করানোর জন্যে বিভিন্ন জেলায় কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র (KVK  ) রয়েছে সেখানে মাটি পরীক্ষা হয় এছাড়াও সরকারি এবং বেসরকারি মাটি পরীক্ষা কেন্দ্র রয়েছে এবং বাজারে মাটি পরীক্ষা টেস্টকীট পাওয়া যায় তার মাধ্যমেও মাটি পরীক্ষা করা যায় পদ্ধতি জানা থাকলে। 

মাটির ক্ষেত্রে যা সত্যি, জলের ক্ষেত্রেও তাই। মাছ চাষের জন্যেও জলের পি.এইচ. মাপা দরকার। সাধারণভাবে মাছ চাষের জন্য জলের পি.এইচ. ৭.৫ থেকে ৮.৫-এর মধ্যে থাকলে ভাল হয়।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পি.এইচ. কমে যাওয়ার (মানে অম্লত্ব বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা হয়। তখন চুন দিয়ে অম্লত্ব কমানাের (অর্থাৎ পি.এইচ. বাড়া

আরও দেখু

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)