এছাড়া স্লারিতে অণুখাদ্যগুলাে যেমন দস্তা, তামা , ম্যাঙ্গানীজ, লৌহ ইত্যাদি বেশি পরিমানে গাছের লভ্য অবস্থায় থাকে। জৈব পদার্থের পরিমাণ বেশি থাকায় মাটিতে বসবাসকারী উপকারী জীবাণু, অণুজীবগুলাে বেশি পরিমাণ খাদ্য পায়। কার্বন-নাইট্রোজেনের অণুপাতসংঙ্কীর্ণ হওয়ায় গাছ বা ফসলের জন্য নাইট্রোজেন বেশি পরিমান সহজলভ্য হয়। এছাড়া এতে আগাছার বীজগুলাে ন হয়ে যায় ফলে মূলজমিতে আগাছা কম হয়।
গােবর গ্যাস স্লারিব্যবহার
বায়ােগ্যাস যন্ত্র বা প্ল্যান্ট থেকে পাওয়া স্লারি বা সারে যে নাইট্রোজেন থাকে তার ১০-১৫ ভাগ এ্যামােনিয়ারূপে গলা বা ভেজা অবস্থায় সরাসরি এই সার প্রয়ােগে ফসলের ক্ষতি হতে পারে। (ধানে পরিমানমত ব্যবহারে ক্ষতি হবার সম্ভবনা কম)। এজন্য ছায়ায় শুকিয়ে প্রয়ােগ করাই ভাল। এতে নাইট্রোজেনের পরিমান কমে ১.৮-২ ভাগ হবে। আন্নামালাই বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষায় দেখা গেছে – হেক্টরে (২৫০শতক) দশহাজার কেজি স্নারির সাথে এ্যাজোস্পিরিলাম ও ফসফো ব্যাক্টেরিয়া প্রয়ােগে ধানের উৎপাদন ২৭% পর্যন্ত বাড়ানাে গেছে। (কেবলমাত্র – নাইট্রোজেন,ফসফেট ও পটাশ সুপারিশমত ব্যবহারের তুলনায়)। এইভাবে স্লারির ব্যবহার ধানের ক্ষেত্রে করার পর দ্বিতীয় ফসল বিউলির উৎপাদন ১৭% পর্যন্ত বৃদ্ধি করা গেছে। শুকানাের ফলে এ্যামােনিয়া উবে গিয়ে যে ক্ষতি হয় সেটা বাঁচানাের জন্য অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষা করে বিশেষ পদ্ধতির সুপারিশ করা হয়েছে। ক) টাটকা স্লারির সাথে সমপরিমান জল মিশিয়ে পাতলা করে নিয়ে তার সাথে ২% হারে এ্যাজোস্পিরিলাম, ফসফো ব্যাক্টেরিয়া এবং দস্তার লবন (জিংক সালফেট) মিশিয়ে ধানের চারার শিকড় ডুবিয়ে নিয়ে রোপন করা যায়।
আন্নামালাই কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় দেখা গেছে এতে ৬% পর্যন্ত ধানের উৎপাদন বেড়েছে। | টাটকা স্লারির সাথে ২% হারে এ্যাজোস্পিরিলাম, ফসফো ব্যাক্টেরিয়া এবং দস্তার লবন মিশিয়ে বীজের। সাথে মাখিয়ে নেওয়া যায়। ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় দেখা গেছে ধানের ক্ষেত্রে ৬% এবং জোয়ারের ক্ষেত্রে ১৫% উৎপাদন বেড়েছে। যেখানে সবার বায়ােগ্যাস উৎপাদন ব্যবস্থা নেই বা স্লারি প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যাবেনা সেখানে উপরে বলা ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।আবর্জনা কম্পাে তৈরীর সময় টাটকা স্লারি মিশিয়ে নিলে উৎপাদিত কম্পোস্টের মান অনেক উন্নত হয় এবং তাড়াতাড়ি সারে পরিণত হয়। । স্লারির মান উন্নয়ন খুব সহজেই এর মান উন্নত করা যায়। টাটকা স্লারির সাথে সপারিশকৃত পরিমান রক ফসফেট বা সুপার ফসফেট মিশিয়ে গাদা করে রাখলে ৩০দিনের মধ্যে উন্নত সার তৈরী হয়। এতে ফসফেট বেশি মাত্রায় সহজলােভ্য হয়। দেখা। গেছে এভাবে উন্নত স্লারি প্রয়ােগে ধানের উৎপাদন ৮-১০% বৃদ্ধি পেয়েছে। সতর্কতা টাটকা স্লারি ধান ছাড়া অন্য ফসলে দেওয়া উচিৎনয় । ছায়ায় ১০-২৫ দিন শুকিয়ে দেওয়া ভাল ।
তথ্য সূত্র :
-
আরও দেখুন -
- পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে ধানের রোগপোকা নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি
- গােবর গ্যাস স্লারি কি ?এবং কৃষি ক্ষেত্রে এর ব্যবহার -
- ফসফো কম্পোস্ট কি ?ফসফো কম্পোস্ট সার তৈরী সহজ পদ্ধতি এবং ব্যবহার
- সুস্থায়ী কৃষি ব্যবস্থাপনা জৈব সারের গুরুত্ব
- জৈব কীটনাশক তৈরী পদ্ধতি
- বোর্দ্য দ্রবণ তৈরী পদ্ধতি। ভাইরাস নাশক তৈরী পদ্ধতি। SPNF
- জৈব চাষে রোগ পোকা নিয়ন্ত্রণে সবচয়ে ভালো 16 টি সহজ ও পরিবেশমুখী কীটনাশক , ছত্রাক নাশক টোটকা
- দ্রুত কম্পোস্ট সার তৈরী পদ্ধতি
- তরল জৈব সার তৈরী ও ব্যবহার পদ্ধতি -
- সবুজ সার ব্যবহার করে মাটির উর্বরতা শক্তি বাড়িয়ে তোলা যায় সহজেই
- সবুজ সার কি? সবুজ সার তৈরী পদ্ধতি -
- কেঁচো সার তৈরী পদ্ধতি
- গোবর দিয়ে নার্সারির জন্যে পরিবেশবান্ধব টব বা পট তৈরীর সহজ পদ্ধতি-
- জৈব কীটনাশক অগ্নিঅস্ত্র কি ? কিভাবে তৈরি করবেন ? কিভাবে ব্যাবহার করবেন ? চাষের জন্যে কতটা লাভদয়ক ?
- জীবান্মৃত কিভাবে তৈরি করব ? জৈব চাষে জীবান্মৃত কিভাবে কাজ করে ? এবং এর ব্যাবহার কিভাবে হয় ?
- অমৃত জল বা মিরাক্কেল জৈব তরল সার তৈরী পদ্ধতি
- নিমাস্ত্র কিভাবে তৈরি করে ? ব্রম্মাস্ত্র কিটনাশক কিভাবে তৈরি করে ?
- বিজামৃত তৈরী ও ব্যবহার পদ্ধতি
- ঘনজীবামৃত জৈব সার তৈরি পধতি