গাইঘাটা ব্লক এর ঠাকুর নগর এর ছাগল এবং বনরাজা মুরগি খামারি প্রদীপ রায় এর সাফল্য কথা

Didibhai Agrofarm
0
গাইঘাটা ব্লক এর ঠাকুর নগর  এর ছাগল এবং বনরাজা মুরগি  খামারি প্রদীপ রায় এর সাফল্য কথা

শ্রী প্রদীপ রায় ঘোষ একজন গাড়ি চালক থেকে হয়ে উঠলেন ছাগল ,মুরগির সফল খামার।  সেই খামার থেকেই এখন প্রতি মাসে আয় করছেন ২৫০০০ থেকে ৩০০০০ টাকা।  

উত্তর ২৪ পরগনা জেলার গাইঘাটা ব্লক এর ঠাকুর নগর শিমুলপুর গ্রাম এর শ্রী প্রদীপ রায় ঘোষ পেশায় একজন গাড়ি চালক ছিলেন পরিবারে তার মা স্ত্রী ও দই মেয়ে নিয়ে সংসার। মেয়েরা পড়াশুনোয় মেধা থাকা সর্তেও ঠিক মতো অর্থের যোগান দিয়ে উঠতে পারছিলেন না।  একটা সময় হতাশ হয়ে পড়েন তিনি কি করবেন।  তার বাড়িতে তার মা ৪ টি ব্ল্যাক বেঙ্গল জাতের ছাগল ক্রয় করেন ৩ টি খাসি এবং একটি ছাগী পালন করতে থাকেন। পরবর্তীতে একটি ১৬০০ টাকা দিয়ে বিক্রি করে ভালো লাভ বুঝে আরো ৩ টি ছাগী ক্রয় ক্রয় করেন এর পর থেকে বেড়েই চলেছে  এবং তা থেকেই তার মাথায় আসে তিনি ছাগল পালন শুরু করবেন যেমন ভাবা তেমন কাজ শুরু। প্রদীপ বাবুর বাড়িভিটে সহ ৭২ কাঠা জায়গা সেখানেই তিনি ধীরে ধীরে ঘর তুলেন এবং ছাগল পালন করতে থাকেন। এর পর তিনি রোগ বালাই এর জন্যে এবং আরো ভালোভাবে কি করে তার খামার এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় তার জন্যে তিনি উত্তর ২৪ পরগনা অশোকনগর কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রে যোগাযোগ করেন এবং তাদের কথা মতো পালন কার্য চালিয়ে যাচ্ছেন সেই সাথে বনরাজা মুরগি পালন শুরু করেন । বর্তমানে তার খামারে  ছোট বড়ো মিলিয়ে ৭০ টি ছাগল রয়েছে। 

ছাগল পালন অভিজ্ঞতা শেয়ার -

প্রদীপ বাবু অশোক নগর কৃষিবিজ্ঞান এর সহযোগিতায় নিয়মিত ছাগল ঘর পরিচর্যা এবং ছাগল এর টিকা ও রোগ প্রতিরোধ মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল কাঁঠাল পাতা খাচ্ছে 

 তিনি বলেন ছাগল এর পি পি আর রোগ প্রতিরোধের জন্যে গর্ভবতী ছাগল ছাড়া সব ছাগলকে বছরে একবার পিঠে চামড়ার নিচে ১ মিলি করে টিকা দিয়ে থাকেন। 

ছাগ বসন্তের জন্যে ছাগলের ৩ মাস বয়সে একবার পরে বছরে ১ বার ০.৫ মিলি করে টিকা দিয়ে থাকেন। 

খুৱাই রোগ প্রতিরোধের জন্যে ছাগলের ৪ মাস বয়সে প্রথম টিকা এবং পরবর্তীকালে প্রতি ৬ মাস ও ১ বছর  অন্তর বুস্টার টিকা দিয়ে থাকেন। 

ছাগল উঁচুতে থাকলে ভালো থাকে তাই তিনি ছাগলকে কাঠ দিয়ে উঁচু মাচা করে ছাগল রাখুন এবং ঘরে দুর্গন্ধ যেন জমা হয়ে ছাগল এর রোগ ব্যাধি না হয় তার জন্যে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রেখেছেন ও প্রতি ৭ দিন অন্তর একদিন ফরমালিন দ্রবণ  ২-৩ শতাংশ ১ লিটার জলে ৩০ মিলি গুলিয়ে ছাগল এর ঘরের চারিদিক স্প্রে করে জীবাণুমুক্ত রাখেন। 

খাদ্য - ঘাস কম তাই খড় ছোট ছোট করে কেটে ভিজিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিয়ে তার সাথে মোটর ভুসি ,ভুট্টার গুঁড়ো ও ধানের গুঁড়ো সমপরিমাণ মিশিয়ে খেতে দেন এবং ছাগল উঁচু হয়ে খেল ছাগল এর বৃদ্ধি ভালো হয় তাই তিনি কাঁঠাল পাতা একটু উঁচুতে বেঁধে দিয়ে ছাগল কে খেতে দেন। 

 আরও দেখুন -জারবেরা ফুল চাষ কোচবিহারের রঞ্জিত বর্মন এর ভাগ্য বদলে দিয়েছে

মুরগীপালন এর অভিজ্ঞতা -

প্রদীপ বাবু বলেন বিভিন্ন জায়গায় মুরগীপালন দেখে তিনিও ভাবেন মুরগীপালন করবেন তার জন্যে তিনি অশোকনগর কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রে যোগাযোগ করেন এবং তাদের পরামর্শ অনুযায়ী বনরাজা মুরগীপালন শুরু করেন ২১ দিনের বাচ্চা ১৮ টাকা করে ২৫ টি ক্রয় করে  মুরগি দিয়ে।

বনরাজা মুরগি 

তিনি বলেন নিয়মিত  টিকা প্রদান করেন এবং একটি মুরগির জন্যে ৩ বর্গমিটার জায়গা অনুযায়ী ঘর নিরামন করতে হবে।  ঘর ও খাবার পাত্র ও জলের পাত্র পরিষ্কার পরিছন্ন রাখেন তাই তার মুরগি সুস্থ সবল থাকে।  

হাতে বানানো খাদ্য দেন তিনি ধান চালের গুঁড়ো ,সর্ষের খোল ,গম ভাঙা ,শুটকি মাছের গুঁড়ো ,ভিটামিন মিনারেল দিয়ে খাদ্য দেন এবং কাঁচা ঘাস দেন এই মুরগি খায় ভালো। 

বনরাজা মুরগি ৫ মাস বয়স থেকে ডিম্ দেয়া শুরু করে এবং বছরে ১২০ থেকে ১৩০ টা ডিম্ দে।  তবে তিনি মাংস হিসেবেই পালন শুরুকরেছিলেন।  ৩ মাস ১৫ দিনে ৩ কেজি থেকে ৩কেজি ৮০০ গ্রাম হয়েছিল। পরবর্তীতে তিনি আরো বেশি মুরগি তুলেন এবং  তিনি ঘরে ও বাহিরে কিছু কিছু মুরগি ছেড়ে পালন করেন তাতে তেমন কিছু তফাৎ হয় না।  ২ মাসে মুরগি ২ কেজি ও মোরগ । ৫ কেজি হয়।  

লাভ এর পরিমান - 

প্রদীপ বাবু বলেন তিনি এখনো গাড়ি চালান তার পরিবারের  স্ত্রী এবং মেয়েরা দেখা শুনো করে তাতে যা আসে অনেকটা এখন ভালো ভাবে সংসার চলছে। এই lah তার প্রতিটি খাসির ওজন বছরে ১২ থেকে ১৫ কেজি হলে বিক্রি করেন ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা কেজি হিসেবে এবং মুরগিও ভালো দাম এ বিক্রি করেন সব মিলিয়ে খরচ বাদ দিয়ে প্রতি মাসে এভারেজ এ ২৫০০০ থেকে ৩০০০০ টাকা লাভ থাকে। 

 আরও দেখুন 

ভেষজ উদ্ভিদ অশ্বগন্ধা চাষ পদ্ধতি -


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)