পুকুরে মাছ চাষে প্রাকৃতিক খাদ্য এবং পরিপূরক খাদ্য তৈরী ও ব্যবহার পদ্ধতি

Didibhai Agrofarm
0

পুকুরে মাছ চাষে প্রাকৃতিক খাদ্য এবং পরিপূরক খাদ্য তৈরী ও ব্যবহার পদ্ধতি

পুকুরে মাছ চাষ করে অধিক উৎপাদন নিয়ে লাভবান হতে হলে পুকুরের আয়তন অনুযায়ী যেমন পোনা মজুত করতে হয় তেমন আর একটি দিক এ নজর দিতে হয় সেটি হল পুকুরে খাদ্য প্রয়োগ যা দুটি ভাবে করা হয় একটি পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্য তৈরী আর একটি বাইরে থেকে কৃত্রিম খাদ্য তৈরী করে কিন্তু এগুলো করতে হলে একটি বিষয় নিশ্চিত করতে হবে পুকুরের পার মজবুত রাখতে হবে , অতিরিক্ত জল হলে পুকুরের জল বাহিরে যাবে কিন্তু কোনো ভাবেই বাহিরের জলকে ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না এর ফলে দুটি ভাবে ক্ষতি হয় এক বাহিরের জল ঢুকে পুকুরের জল ঘোলা করে দিয়ে প্রাকৃর্তিক খাদ্য নষ্ট করে দেয় দ্বিতীয়ত বাহিরে চাষের জলে বিভিন্ন কেমিক্যাল মিশ্রিত জল পুকুরে প্রবেশ করলে পুকুরে মাছের বাস যোগ্য পরিবেশ নষ্ট হয় এবং বিভিন্ন রোগ এর কারণে মাছের মৃত্যু হয়। Methods of preparation and use of natural feed and supplementary feed in pond fish farming

মাছ চাষের পুকুরের মাছের ভালাে ফলন পেতে হলে পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্য যেমন জন্মানাে সরকার তেমনি বাইরে থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ কৃত্রিম খাদ্যও পরিবেশন করতে হয়। তাই মাছ চাষীকে প্রাকৃতিক খাদ্য ও পরিপূরক খাদ্য সম্পর্কে জানতে হবে।।

Methods of preparation and use of natural feed and supplementary feed in pond fish farming

পুকুরের প্রাকৃতিক খাদ্যকণা।

মলাশয়ে প্রাকতিক উপায়ে একধরনের খাদ্যকণা উৎপন্ন হয়। এদের প্রাকৃতিক খাদ্যকণা বা প্রাঙ্কটন বলে। এরা খুবই ছােট ছােট হয় এবং জলের ঢেউ যেদিকে যায় এদের গতিও সেদিকে হয়। এই প্রাঙ্কটন দু'ধরনের হয়- ফাইটোপ্লাঙ্কটন বা উদ্ভিদকণা ওজুপ্লাঙ্কটন বা প্রাণীকণা। 

                                সূচিপত্র

 ১।ফাইটোপ্লাঙ্কটন বা উদ্ভিদকণা 

  ২।জুপ্লাঙ্কটন বা প্রাণীকণা-

৩।ফাইটোপ্লাঙ্কটন রুম বা শৈবাল আধিক্য 

ক। ক্ষণস্থায়ী শৈবাল আধিক্য 

খ। দীর্ঘস্থায়ী শৈবাল আধিক্য-

গ।পুকুরে শৈবাল আধিক্যের জন্য যে  ক্ষতি গুলি হয়-

.৪।পুকুরের জলে প্লাঙ্কটনের প্রাচুর্যতা নির্ণয়ের পদ্ধতি-

ক।সেচি ডিক্স ব্যবহারের পদ্ধতি-

খ। মাছ চাষে উপযােগী সেচি ডিস্কের দৃশ্যতা-

৫। পরিপূরক খাদ্য প্রয়ােগের পরিমাণ 

৬। পরিপূরক খাদ্যের প্রয়ােগ পদ্ধতি-

৭। পরিপূরক খাদ্য প্রয়ােগের কতগুলাে বিধি নিষেধ-

 


 ১।ফাইটোপ্লাঙ্কটন বা উদ্ভিদকণা -

ক।জলে ভাসমান অতি ক্ষুদ্র উদ্ভিদজাতীয় কণাকে ফাইটোপ্লাঙ্কটন বা উদ্ভিদকণা বলে। পুকুরের জলের রঙ, সবুজ- হলদে বা সবুজ- বাদামী হওয়ার জন্য এই উদ্ভিদকণারাই দায়ী। পুকুরে উদ্ভিদকণার প্রয়ােজনীয়তাগুলি হল১) উদ্ভিদকণা প্রত্যক্ষ বা পরােক্ষভাবে মাছের খাদ্য হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এরা সিলভার কার্পের প্রথম পছন্দের খাদ্যকণা। এছাড়া রুই, কাতলা, মৃগেল, গ্রাসকার্পওসাইপ্রিনাস কার্পের চারাপােনা ও পূর্ণাঙ্গ মাছ সরাসরি এই উদ্ভিদকণা ভক্ষণ করে। পুকুরের জুপ্লাঙ্কটন বা প্রাণীকণারা এই উদ্ভিদকণা ভক্ষণ করে, আবার মাছ এই জুপ্লাঙ্কটনকে ভক্ষণ করে বড় হয়।

খ। মাছ ও অন্যন্য জলজ প্রাণীদের জীবন ধারণের জন্য অক্সিজেন দরকার। এই সমস্ত উদ্ভিদকণা সূর্যালােকের সাহায্যে সালােকসংশ্লেষ পদ্ধতির মাধ্যমে নিজেদের খাদ্য উৎপন্ন করে এবং সঙ্গে অক্সিজেন উৎপন্ন করে। উদ্ভিদকণার দ্বারা উৎপন্ন এই অক্সিজেন মাছসহ অন্যান্য জলজ প্রাণীগ্রহণ করে বেঁচে থাকে।

  ২।জুপ্লাঙ্কটন বা প্রাণীকণা-

 এরা আকৃতিতে উদ্ভিদকণা অপেক্ষা বড়। একটি পরিস্কার স্বচ্ছ বােতলে পুকুরের জল নিয়ে খালি চোখে দেখলে দেখা যাবে যে এরা নড়াচড়া করছে। পুকুরে প্রচুর পরিমাণে প্রাণীকণা জন্মালে জলের রঙ অনেক সময় ধূসর সাদা, হালকা বাদামী বা হাল্কা কালাে দেখায়। এই প্রাণীকণা ডিমপােনা ও ধানীপােনার প্রধান খাদ্য। নার্শারী বা আঁতুড় পুকুরে জুপ্লাঙ্কটন তৈরী করা ধানী। পােনা উৎপাদনের প্রথম সােপান বলা যেতে পারে।

 এই সমস্ত উদ্ভিদকণা ও প্রাণীকণা মাছের খাদ্য হিসাবে ব্যবহৃত হওয়া ছাড়াও জলের মধ্যে একটি ছায়াময় আচ্ছাদনের সৃষ্টি করে, ফলে পুকুরে অবাঞ্ছিত জলজ উদ্ভিদ জন্মাতে পারেনা।

 ৩।ফাইটোপ্লাঙ্কটন রুম বা শৈবাল আধিক্য -

পুকুরে ফাইটোপ্লাঙ্কটন বা উদ্ভিদকণার অস্বাভাবিক বৃদ্ধি হলে পুকুরে শৈবাল বা অ্যালগাল ব্রুম * পুকুরের পরিবেশকে মাছ চাষের অনপােযােগী করে তােলে। এই শৈবাল আধিক্য ক্ষণস্থায় বা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।

ক। ক্ষণস্থায়ী শৈবাল আধিক্য -

ইউগ্নিনােফাইসি, ক্লোরােফাইসি ও ডাইনােফাইসি প্রভৃতি উদ্ভিদকণার আধিক্যের জন্য পুকুরের জলের রঙ যথাক্রমে লালচে - বাদামী, হাল্কা সবুজ ও বাদামী রঙের হয়। এই ধরনের শৈবাল আধিক্য বেশীদিন থাকে না। সাময়িকভাবে সার প্রযােগ ও পরিপূরক খাদ্য সরবরাহ বন্ধ রাখলে এরা নিয়ন্ত্রিত হয়।

খ। দীর্ঘস্থায়ী শৈবাল আধিক্য-

পুকুরে মাইক্রোসিসটিস, অসিলেটোরিয়া, অ্যানাবিনা, নষ্টক, প্রভৃতি নীলাভসবুজ শৈবাল জন্মালে তা দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং পুকুরের জলের রঙকে ঘন সবুজ করে তােলা যা সচরাচর পুকুরে দেখা যায়। এই ধরনের শৈবাল মাছের পক্ষে খুবই ক্ষতিকর। প্রচুর পরিমাণে নাইট্রোজেন, ফসফরাস ও জৈব পদার্থ এই ধরনের শৈবাল আধিক্যের জন্য দায়ী।

গ।পুকুরে শৈবাল আধিক্যের জন্য যে  ক্ষতি গুলি হয়-

 ১। পুকুরে বেশী পরিমাণে শৈবাল জন্মালে রাত্রিতে এরা প্রচুর পরিমাণে অক্সিজেন গ্রহণ করে এবং ভােরের দিকে পুকুরে অক্সিজেন শূন্য অবস্থার সৃষ্টি হয়, ফলে মাছ অক্সিজেনের অভাবে মারা যেতে পারে। মেঘলাদিনে এই ঘটনা আরাে বিপজ্জনক। এছাড়া এই উদ্ভিদকণাগুলাে মারা গিয়ে জলের মধ্যে পচে যায় এবং জলে অক্সিজেনের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। 

২। অত্যাধিক শৈবাল হলে তা মাছের ফুলকাতে আটকে গিয়ে মাছের শ্বাসকার্য ব্যাহত করে। 

৩। শৈবাল আধিক্যের ফলে দিনের বেলা বিশেষ করে বিকেলবেলা পুকুরের জলের পি এইচ মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি হয়। 

৪) শৈবাল আধিক্যের জন্য পুকুরের জলের দুটি স্তরের সৃষ্টি হয় এবং এই দুটি স্তরের তাপমাত্রা ও অক্সিজেনের পরিমাণের পার্থক্য খুব বেশী হয় যা মাছের পক্ষে ক্ষতিকারক। জলের উপরের স্তরের তাপমাত্রা ও অক্সিজেনের পরিমাণ বেশী হয় পক্ষান্তরে নীচের স্তরে সূর্যালােক শৈবাল আধিক্য ভেদ করে প্রবেশ করতে পারে না বলে তাপমাত্রা ও অক্সিজেনের পরিমাণ খুব কম হয়।। 

৫। অসিলেটোরিয়া, মাইক্রোসিসটিস প্রভৃতি নীলাভ - সবুজ উদ্ভিদকণা জলের মধ্যে এক ধরনের বিষাক্ত পদার্থ নির্গত করে যা ডাফনিয়া নামক প্রাণীকণার বৃদ্ধিকে ব্যাহত করে।

.৪।পুকুরের জলে প্লাঙ্কটনের প্রাচুর্যতা নির্ণয়ের পদ্ধতি-

জলঘােলা নয় এমন পুকুরে প্লাঙ্কটনের উপস্থিতি নির্ণয় করার জন্য সেচি ডিক্স নামক একধরনের গােলাকার প্লেটযুক্ত স্কেল ব্যবহার করা হয়। এই সেচি ডিস্ক হলাে একটি সাধারণ ২০ সেন্টিমিটার ব্যাসের গােলাকার ধাতুর প্লেট। এই গােলাকার প্লেটকে চারভাগে ভাগ করে প্রতিভাগ পর্যায়ক্রমিক ভাবে সাদা ও কালাে রঙ করা থাকে অর্থাৎ প্লেটের দুটি ভাগে কালাে রঙ এবং বাকী দুটি ভাগে সাদা রঙ থাকে। প্লেটের নীচে একা ভারী ধাতুর পদার্থ আটকানাে থাকে যাতে ডিক্সটি জলের মধ্যে ডুবে যেতে পারে। এই প্লেটের সঙ্গে খাড়াভাবে একটা ১-১.৫ মিটার লম্বা রড বা কাঠের স্কেলের মত লাঠি যুক্ত থাকে। প্লেটের গােড়া থেকে রং বা কাঠের লাঠির গায়ে ৫ সেন্টিমিটার অন্তর স্কেলিং করা থাকে। এই ধরনের সেচি ডিক্স চাষী বাড়াতে করে নিতে পারে।

ক।সেচি ডিক্স ব্যবহারের পদ্ধতি-

সেচি ডিক্স এর  দৃশ্যতা  দেখার জন্য  সেচি ডিস্কটাকে ধীরে ধীরে ডােবাতে হয়ে। যে মুহুর্তে ডিস্কটাকে আর জলের মধ্যে দেখা জযাবে না সেই মুহুরতে  ডিস্কটাকে স্থির রাখতে হবে এবং জলের উপরিতলে ডিস্কের স্কেলে যে মান দেখা যাবে সেটাই হবে জলের স্বচ্ছতার পরিমাপ  ।  ডিস্কের স্কেলে যে মান দেখা যাবে সেটাই হবে জলের স্বচ্ছতার পরিমাপ। যদি ১০০ ভ করা কোন সেচি ডিস্ককে জলের মধ্যে ডােবানাে হয় এবং ৩০ সেন্টিমিটার ডােবানাের পর কালাে রঙের প্লেটটাকে আর দেখা যায় না তবে ধরে নিতে হবে জলের স্বচ্ছতা৩০ সেন্টিমিটার।

খ। মাছ চাষে উপযােগী সেচি ডিস্কের দৃশ্যতা-

পরের জলে সেচি ডিস্কের দৃশ্যতা ৩০-৪০ সেন্টিমিটার হলে বুঝতে হবে পুকুরে ভালাে পাংকটন আছে এবং মাছ চাষ ভালাে হবে। যদি পুকুরের জলে সেচি ডিস্কের দৃশ্যতা ৬০ সেন্টিমিটারের উপর হয় তখন বােঝা যাবে জলে প্রাকৃতিক খাদ্যকণা অর্থাৎ প্লাংকটনের ঘাটতি হয়েছে। এই ঘাটতি মেটানাের জন্য পরিমাণ মত সার প্রয়ােগ করতে হবে। যদি দেখা যায় সেচি ডিস্কের দৃশ্যতা ৩০ সেন্টিমিটারের নীচে হচ্ছে তবে বুঝতে হবে জলে প্লাংকটনের মাত্রা বাড়ছে। এই সময় সার প্রয়ােগ করা উচিত নয়। সেচি ডিস্কের দৃশ্যতা যদি ক্রমশঃ আরাে কমতে থাকে তবে ধরে নিতে হবে পুকুরে অত্যাধিক মাত্রায় প্লাংকটন জন্মেছে যা ভবিষ্যতে পুকুরে অক্সিজেনের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। সপ্তাহে ২-৩ বার দুপুর ১২-২টার মধ্যে এই সেচি ডিস্কের মাপ নিতে হবে।

  প্রাকৃতিক খাদ্য ফাইটোপ্লাংকটন ও জুপ্লাংকটন ছাড়াও বাইরে থেকে মাছের স্বাভাবিক   বৃদ্ধি ও পুষ্টির জন্যে  সে সব সুষম খাদ্য মাছকে সরবরাহ করা হয় তাকে পরিপূরক খাদ্য বলে। পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্য বৃদ্ধির জন্যে সার প্রয়োগ করে প্রাকৃতিক খাদ্য বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাইরে থেকে উপযুক্ত পরিমাণে পরিপুরক  খাদ্য সরবরাহ করা প্রয়ােজন। পরিপূরক খাদ্য হিসাবে চালের কুঁড়া, সরষে, বাদাম ও তিলের খােল, শুটকি মাছের গুঁড়া বা ফিসমিল ব্যবহার করা হয়।

 সাধারনতঃ পুকুরে চালের কুড়াে ও সরষের খােল। সাবে মিশ্রিত করে প্রয়ােগ করা হয়। এর উপকারিতা হল কুঁড়াে থেকে মাছ কার্বোহাইড্রেড এবং সরষের খান থেকে প্রােটিন উপাদান সংগ্রহ করে নিজেদের বৃদ্ধির হার দ্রুত করে। এছাড়া চালের কুঁড়ােতে। ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স এবং সরষের খােলে সামান্য ফ্যাট থাকে।

৫। পরিপূরক খাদ্য প্রয়ােগের পরিমাণ -

পুকুরে কতটা পরিমাণ পরিপূরক খাদ্য প্রয়ােগ করতে হবে তা নির্ভর করে মাছের দেহের ওজনের উপর সাধারণতঃ পালন পুকুরে ধানীপপানা থেকে চারাপােনা উৎপাদনের জন্য মাছের দেহ ওজনের ২০-৩ শতাংশ হারে এবং মজুত পুকুরে চারাপােনা থেকে বড় মাছ উৎপাদনের জন্য মাছের দেহ ওজনের ৩-১ শতাংশ হারে পরিপূরক খাদ্য প্রয়ােগ করতে হয়। মনে রাখা দরকার দৈহিক ওজন যত বাড়তে থাকবে খাদ্যের শতকরা পরিমাণও ধীরে ধীরে তত কমতে থাকবে। পুকুরে গ্রাসকার্প থাকলে তার দেহ ওজনের সমপরিমাণ জলজ উদ্ভিদ প্রত্যহ সরবরাহ করা দরকার।

 ৬। পরিপূরক খাদ্যের প্রয়ােগ পদ্ধতি-

 ক। পুকুরে মাছের খাদ্য নির্দিষ্ট পরিমাণে পুকুরের জলের উপরিভাগে ছড়িয়ে দিতে হয়। ক্রমাগত কয়েক দিন এইভাবে খাদ্য পরিবেশন করলে, মাছেরা পরিপুরক খাদ্যের সঙ্গে পরিচিত হয় এবং এই খাদ্য খেতে অভ্যস্ত হয়।

 খ। পরিপূরক খাদ্য কোন ট্রে বা বাঁশের ঝুড়িতে করে পুকুর পাড় থেকে ৩-৪ হাত দূরে জলের মধ্যে ঝুলিয়ে দেওয়া যেতে পারে। ছােট পুকুরে এই পদ্ধতি অনুসরণ করলে ভালাে সুফল পাওয়া যায়। এই পদ্ধতির একটা সুবিধা হল মাছ কতটা পরিমাণ খাদ্য খায় তা অনুমান করা এবং এর উপর ভিত্তি করে খাদ্যের পরিমাণ কমানাে বা বাড়ানাে যায়।

৭। পরিপূরক খাদ্য প্রয়ােগের কতগুলাে বিধি নিষেধ-

ক। পুকুরে কোনো অবস্থায় যেন অতিরিক্ত পরিপূরক খাদ্য প্রয়োগ না করা হয় কারণ অতিরিক্ত খাদ্য জলের তলায় জমে গিয়ে গ্যাস উৎপন্ন করে জলকে দূষিত করে এর ফলে মাছের বিভিন্ন রোগ এবং অক্সিজেন ঘাটটি ঘটে মাছের মৃত্যু ঘটে। তাই খাদ্য নির্দিষ্ট পরিমাণে প্রয়ােগ করা দরকার। এরজন্য ১৫-২০ দিন মাছ ধরে তাদের গড় ওজন নির্ধারণ করে খাতায় লিখে রাখতে হবে এবং সেই মত মাছের দেহ জন্য যতটা পরিমাণ খাদ্য দরকার সেই পরিমাণ খাদ্য প্রয়ােগ করতে হবে।

খ। পরিপূরক খাদ্য রোজ একই জায়গা তে একই সময়ে দিতে হবে এর ফলে মাছের অভ্যাস তৈরী হবে এবং খাদ্য অপচয় হবে না এবং নির্দিষ্ট সময় পর বুঝা যাবে কি পরিমান খাদ্য মাছ খাচ্ছে। 

 গ। মাছ যদি পুকুর পাড়ে ঘােরাফেরা করে তবে বুঝতে হবে তাদের খাদ্যের অভাব হচ্ছে, তখন খাদ্যের পরিমাণ অবশ্যই বাড়াতে হবে। 

ঘ।  পুকুরের জল যদি ঘন সবুজ হয়ে যায় তবে পরিপুরক খাদ্য প্রয়ােগ বন্ধ রাখতে হবে। 

ঙ। যেহেতু মাছের বিপাক হার জলের তাপমাত্রা দ্বারা প্রভাবিত হয়, সেজন্য ঋতু পরিবর্তন অনুযায়ী জলের তাপমাত্রা পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পরিপুরক খাদ্যের পরিমাণও নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। উল্লেখ্য, শীতকালে পরিপূরক খাদ্য খুব কম প্রয়ােগ করতে হয়।

আরও দেখুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)