এজোলা কি ও এজোলার চাষ ও ব্যবহার পধতি-

Didibhai Agrofarm
0
এজোলা কি ও  এজোলার চাষ  ও ব্যবহার পধতি

এজোলা একটি খুব ছােট পানা যা সপ্তাহে দ্বিগুণ বাড়ে আর অল্প ফসফেট দিলে ৪ গুণও বৃদ্ধি হয়ে থাকে। এজোলার চাষ নতুন কিছু নয়। এটি একটি বিনাপুঁজির সাশ্রয়ী খাদ্য ও সার বলা যেতে পারে।  বহুদিন ধরেই চিন, ভিয়েতনাম ও অন্যান্য দেশে এর ব্যবহার হয়ে আসছে। দক্ষিণ ভারতের কেরালা ,অন্ধ্রপ্রদেশ এর ব্যবহার বহুল পরিমানে দেখতে পাওয়া যায় মূলত প্রাণী খাদ্য হিসাবে এ ছাড়াও পশ্চিম বঙ্গেও এর ব্যবহার হচ্ছে মূলত মৎস  ও প্রাণী খাদ্য হিসাবে ।  বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প এবং সংগঠন গুলির মাধ্যমে গ্রাম বাংলায় এজলা চাষের প্রশিক্ষণ দিয়ে উৎসাহিত করা হচ্ছে। মূলত এর তিনটি প্রজাতি রয়েছে।  গ্রামের  জলা, ধানজমিতে প্রাকৃতিক ভাবেই জন্মায়।এজোলার পাতায় অ্যানাবিনা এজোলা নামে নীল সবুজ শ্যাওলা বাস করে, যা বাতাসের নাইট্রোজেন থেকে সার তৈরি করতে পারে। এক বিঘে এজোলা পূর্ণ জমিতে দিনে ২ কিলাে ইউরিয়ার সমান নাইট্রোজেন সংযােজন হয়।। যদিও ১০০ কিলাে এজোলা শুকোলে ৫ কিলাে দাড়ায়, শুকনাে এজোলায় শতকরা ৪ ভাগ নাইট্রোজেন, প্রায় ১ ভাগ ফসফরাস ও ২-৫ ভাগ পটাশিয়াম থাকে ও প্রচুর জৈব কার্বন পদার্থ। থাকে। এই জৈব কার্বন মাটিকে জীবন দান কারী জীবাণুর খাদ্য। সবচেয়ে বড় কথা, প্রচুর পরিমাণে সবুজ সারের দরুন জমি জীবন্ত হয়ে ওঠে - সজীবতা ও প্রাণ ফিরে আসে।  

খাদ্য হিসেবে এজলার ব্যবহার -

এজোলা চাষ করে কেরালার বহু গো ফার্ম গুলি তাদের গরুকে খাওয়াচ্ছেন এর ফলে দেখা যায় গরুর দুধের পরিমান বেড়ে যায়।  এছাড়াও ছাগল ,হাস,মুরগি এর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করলে খাদ্য খরচ অনেকটা বেঁচে যায়।  একুয়াপনিক মাছ এর ব্যবহার বহুল বর্তমনে বিভিন্ন পদ্ধতির ট্যাংক এ তেলাপিয়া ,কোই, মাছ চাষ এ এর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে এবং পুকুরেও মাছ চাষ এ খাদ্য হিসেবে এর ব্যবহারের জন্যে চাষ করা হয়ে থাকে।  

প্রাণীকে এজলা খাওয়ানোর পূর্বে এজলা কে ভালো করে পরিষ্কার জলে ধুয়ে নিয়ে খাওঁতে হবে।  প্রথম বার না খেতে চাইলে এজলার সাথে আটা মিশিয়ে কয়েকদিন খাওয়ালে অভ্যেস হয়ে যাবে এর পর প্রয়োজন হয়না তখন এমনি খেয়ে নিবে।  

 

সার হিসেবে ব্যবহার

এজোলা শুকিয়ে গাছের গোড়ায় দিলে সার হিসেবে ভালো কাজ করে। জমিতে জল দাঁড়িয়ে যাওয়ার সাথে সাথেই কাদা করে এজোলা ছড়িয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা উচিত। সঠিক আবহাওয়ায় ৫ কিলাে এজোলা ১০০ দিনে ২০০ কুইন্টালও হতে পারে। ধানের ক্ষেতে এজোলার উপকার পেতে গেলে, রােপণ ও নিড়ানের সময় মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হবে। সবসময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে সিকি ভাগ এজোলা ভেসে থাকে – আবার বেড়ে ওঠার জন্য।। যেখানে কেবল রােপণের সময়ই এজোলা ছড়ানাে সম্ভব, সেখানে এজোলার উপকার ধানে ও বাকিটা পরবর্তি ফসলের কাজে লাগে। | 

এজোলা চাষ পদ্ধতি -

এজোলা একটি জলজ পানা তাই জল কাদা অতি জরুরী। এক মিটার চওড়া ৬ ইঞ্চি উচ্চতার প্লাস্টিক দিয়ে বা পাকা করে জল ধারণ ক্ষমতা বিশিষ্ট ট্যাংক বানিয়ে তাতে নিচে এক ইঞ্চি মাটি পুরোনো গোবর এবং ফসফেট দিয়ে এজলার চাষ করা হয় নিয়মিত জল বদল করে। ৭ দিন পর পর ২৫ গ্রাম ফসফেট প্রয়োগ করতে হবে। সাধারণ ভাবে এজোলার বাড় যথেষ্ট  , তবে বিঘা প্রতি ৫ কিলাে হাড়গুঁড়াে অথবা রক ফসফেট দিতে। পারলে এর বৃদ্ধির হার দ্বিগুণ হতে পারে।। এজোলার বৃদ্ধির হার অত্যাধিক গরমে কমে যায়, রং লালচে হয়ে যায় ও রােগ পােকার সমস্যাও দেখা দেয়। আধাে ছায়াতে, জলের অম্লতা ৪-৭পি. এইচ এবং যথে আতাতে ভাল হয়। এজোলার বিভিন্ন জাত। আছে। তাই স্থানীয় পরিবেশে স্থানীয় এজোলার জাত ব্যবহার করাই বাঞ্ছনীয়। 


আরও দেখুন 

মাছ ও হাঁসের যৌথ খামার তৈরী পদ্ধতি

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)