দ্রুত পচনশীল এবং নাইট্রেজোন পাওয়া যায় এমন গাছের সবুজ পাতাকে পচিয়ে যে সার তৈরী করা হয় তাকে সবুজ সার বলে। যে জমিতে সার প্রয়ােগ করা হবে সেখানে সবুজ সারে ফসল চাষ করে পরবর্তী ফসল লাগানাের অসুবিধা থাকলে (যেমন সময়ের অভাব) বিিভন্ন উপযােগী গাছের কচি ডগা সমেত পাতা সংগ্রহ করে জমির মাটিতে মিশিয়েও সবুজ সার করে নেওয়া হয়।
প্রয়োজনীয় উপকরণ গুলি
গাছ গ্লিরিসিডিয়া, বকফুল, চীরল, জাম, জীবন , পলাশ, শিশু, বাবলা, মাদার ইত্যাদি।
ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা -
এটাও সবুজ সার এর মতোই তবে বিভিন্ন কারণে সবজ সার করা সম্ভব নাও হতে পারে, যেমন সময়ের অভাব, চাষ করার উপযুক্ত পরিবেশ (মাটিতে বসের বা সেচের অভাব, সামাজিক ও ব্যবহারিক কারণে ফসল সুরক্ষার অভাব, উপযুক্ত ফসলের বীজের অভাব ইত্যাদি) এরকম ক্ষেত্রে সবুজ পাতা সংগ্রহ করে জমির মাটিতে মেশানো ও সার করে জমির উর্বরতা বাড়ানাের ব্যবস্থা করা। সবজ পাতা সার নিয়মিত ব্যবহারে ৩০-৫০ শতাংশ পর্যন্ত উৎপাদন বাড়ানাে যেতে পারে।
সবুজ সারের গাছগুলাে যেমন মাটির গভীরে শিকড় প্রবেশ করায় ও মাটির শক্ত স্তরকে ভেঙ্গে নরম করে, কিন্তু সবুজ পাতা সারের ক্ষেত্রে তা সম্ভব হয় না। তবে উপরের মাটির স্তরে জৈব পদার্থের প্রভাবে মাটির জল ধারণ ক্ষমতা ও বায়ু চলাচলের বাতাবরণ তৈরি হয়।
সবুজ পাতা সার ব্যবহার পদ্ধতি
কচি ডগা ও পাতা জমি চাষ করার সময় জমিতে দিয়ে চাষের সাথে মেশাতে হবে। তাড়াতাড়ি পচানাের জন্য মাটি কাদা করে মই দিয়ে চেপে দিতে হবে। এক্ষেত্রে বিঘা প্রতি (৩৩ শতক) তিন-চার হাজার কেজি সবুজ পাতা মেশাতে পারলে সবুজ সারের মতই ফল পাওয়া যায়।যে সবুজ পাতা ও ডগা দেওয়া হবে সেটা যেন কচি ও রসালাে হয় যাতে সহজে পচে। মাটিতে মেশানাের সময়। মাটিতে যাতে রসের বা জলের অভাব না থাকে তাই বর্ষাকালে করা ভাল। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে যেসব পাতা দেরীতে পচে যেমন বাঁশ। আম, ইউক্যালিপটাস, আকাশমনি, ঝাউ ইত্যাদি না ব্যবহার করাই ভাল। সবুজ পাতা উপলব্ধ করার উদ্দেশ্যে বিশেষত শুকনাে অঞ্চলে অ্যালি ক্রপিং করা হয় যাতে সারা বছর সবুজ পাতা। পাওয়া যায়। এছাড়া আলে সবুজ সারের গাছ লাগিয়ে সারা বছর সবুজ পাতা সার পাওয়া যায়। সামাজিক ও কৃষি ভিকি বন সৃজনে গাছ নির্বাচন করার সময় সবুজ পাতা সার হয় এমন গাছ লাগানাে প্রয়ােজন।
আরও দেখুন -
- পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে ধানের রোগপোকা নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি
- গােবর গ্যাস স্লারি কি ?এবং কৃষি ক্ষেত্রে এর ব্যবহার -
- ফসফো কম্পোস্ট কি ?ফসফো কম্পোস্ট সার তৈরী সহজ পদ্ধতি এবং ব্যবহার
- সুস্থায়ী কৃষি ব্যবস্থাপনা জৈব সারের গুরুত্ব
- জৈব কীটনাশক তৈরী পদ্ধতি
- বোর্দ্য দ্রবণ তৈরী পদ্ধতি। ভাইরাস নাশক তৈরী পদ্ধতি। SPNF
- জৈব চাষে রোগ পোকা নিয়ন্ত্রণে সবচয়ে ভালো 16 টি সহজ ও পরিবেশমুখী কীটনাশক , ছত্রাক নাশক টোটকা
- দ্রুত কম্পোস্ট সার তৈরী পদ্ধতি
- তরল জৈব সার তৈরী ও ব্যবহার পদ্ধতি -
- সবুজ সার কি? সবুজ সার তৈরী পদ্ধতি -
- কেঁচো সার তৈরী পদ্ধতি
- গোবর দিয়ে নার্সারির জন্যে পরিবেশবান্ধব টব বা পট তৈরীর সহজ পদ্ধতি-
- জৈব কীটনাশক অগ্নিঅস্ত্র কি ? কিভাবে তৈরি করবেন ? কিভাবে ব্যাবহার করবেন ? চাষের জন্যে কতটা লাভদয়ক ?
- জীবান্মৃত কিভাবে তৈরি করব ? জৈব চাষে জীবান্মৃত কিভাবে কাজ করে ? এবং এর ব্যাবহার কিভাবে হয় ?
- অমৃত জল বা মিরাক্কেল জৈব তরল সার তৈরী পদ্ধতি
- নিমাস্ত্র কিভাবে তৈরি করে ? ব্রম্মাস্ত্র কিটনাশক কিভাবে তৈরি করে ?
- বিজামৃত তৈরী ও ব্যবহার পদ্ধতি
- ঘনজীবামৃত জৈব সার তৈরি পধতি
- পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে ধানের রোগপোকা নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি