বীজতলা তৈরী -
বর্ষায় বাঁধাকপি চাষ করা একটা চ্যালেঞ্জ বলা যেতে পারে কৃষকদের জন্যে তবু এর মধ্যে যদি সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া যায় তবে ভালো ফলন পাওয়া যেতে পারে | বৃষ্টির হাত থেকে বীজতলা কে রক্ষা করার জন্যে বীজতলা সঠিক ভাবে করতে হবে , বেড সিস্টেম এ করলে ভালো আলোবাতাস পাবে এমন উঁচু জায়গায় করতে হবে যেখানে জল দাঁড়ানোর সম্ভাবনা নেই অথবা ঝুলন্ত বেড পদ্ধতি তে করা যেতে পারে মাটি থেকে উপরে বাসের চাটাই দিয়ে মাচা করে তার উপরে মাটি দিয়ে এবং উপরে চালা করে দিতে হবে যাতে যেন জল না পড়ে বেড এ , এছাড়াও প্রো ট্রে তে কোকোপিট দিয়ে চারা উৎপাদন করা যেতে পারে যা সবচেয়ে নিরাপদ বলা যেতে পারে |
বর্ষায় চাষের জন্যে বিভিন্ন জাত পাওয়া গেলেও তার মধ্যে অনেকেই নাম ধারী 43, k k ক্রস ,k k রয়াল চাষ করে ভালো ফলন পেয়ে থাকেন |
প্রতি বিঘা জমির জন্যে 60-70 গ্রাম বীজ এর প্রয়োজন হয় |
বীজতলার ধরণ
1. উঁচু খোলা জায়গায় বীজ তলা করলে ভালো করে নরম করে নিতে হবে এবং পর্যাপ্ত পরিমান কম্পোস্ট সার এবং সিউওডোমোনাস জীবাণুনাশক দিয়ে কয়েকদিন ঢেকে রেখে তার পর আবার নরম করে তার উপর বীজ শোধন করে বীজ লাগাতে হবে দেড় মিটার চওড়া বেড করে এবং জল নিকাশি ব্যবস্থা রাখতে হবে সেই সাথে বৃষ্টি তে যেন ক্ষতি না হয় সেই দিকটি লক্ষ রেখে উপরে বৃষ্টির সময় পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে |
2. ঝুলন্ত বেড এ করলে পর্যাপ্ত পরিমান আলোবাতাস পাবে এমন জায়গা নির্বাচন করে বাশ দিয়ে মাটি থেকে 3 ফুট উপরে মাচা করে তার উপর 2 ইঞ্চি কম্পোস্ট মিশ্রিত মাটি দিয়ে বীজ বপন করতে হবে এবং নিয়মিত জল স্প্রে করতে হবে | উপরে অবশ্যই বৃষ্টি না পরে যেন সেদিকটি লক্ষ্য রেখে 4 ফুট উপরে শেড দিতে হবে |
4. প্রো ট্রে তে চারা উৎপাদন যা আরো ভালো বা সহজ উপলভ্য | এর জন্যে কোকোপিট এবং তার সাথে ভার্মি কম্পোস্ট মিশিয়ে তৈরী করা যেতে পারে এবং নিয়মিত জল স্প্রে করতে হবে | এগুলি যেকোনো জায়গায় রাখা যায় এবং বৃষ্টি হলে সরিয়ে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে আনা যায় |
প্রতিটি চারা তৈরির পদ্ধতির ক্ষেত্রেই নিয়মিত ছত্রাক নাশক স্প্রে করতে হবে এবং দু পাতা বের হওয়ার পর 19:19:19 সার প্রতি লিটার জলে 3 গ্রাম গুলিয়ে স্প্রে করলে চারার বৃদ্ধি তারা তারি হবে এবং 20-25 দিনের চারা মূল জমিতে রোপন করা যাবে |
বর্ষায় বীজ বপনের সময় মে মাসের 15তারিখ এর পর থেকে এবং মূল জমিতে চারা লাগানোর সময় 15 জুন এর পর থেকে একই ভাবে আবার আগস্ট এর পর থেকেও লাগানো যেতে পারে যেগুলির ফলন দুর্গাপুজোর পরে পাওয়া যাবে এবং বাজারে ভালো দাম পাওয়া যাবে |
মূল জমি তৈরী ۔۔
যেখানে জল জমে না সেই রকম জমি নির্বাচন করে চারা লাগানোর সময় থেকেই 5-6 চাষ দিয়ে জমি প্রস্তুত শুরু করতে হবে | জমি প্রস্তুত করার সময় বিঘা প্রতি 1 ট্রাক্টর গোবর , 50 কেজি নিঁম খোল ,50 কেজি 10-26-26 সার এবং 15 কেজি দিতে হবে সেই সাথে উইপিকার উপদ্রব থাকলে তার প্রতিরোধক নাশক মাটির সাথে শেষ চাষের আগে মিশিয়ে দিতে হবে |চাষ সম্পূর্ণ হয়ে গেলে জল নিকাশি নালা করে বেড করে নিয়ে চারা রোপন করতে হবে | বিঘা প্রতি 6000-6500 চারার প্রয়োজন হবে 18 ইঞ্চি লাইন থেকে লাইন এবং চারা থেকে চারার দূরত্বে চারা রোপন করলে |
বীজ তলা থেকে চারা তুলে আনার একদিন আগে ছত্রাক নাশক বেভিস্টিন বা কার্বোন্ডাজিম দিয়ে স্প্রে করতে হবে অথবা চারা লাগানোর পর ছত্রাক নাশক + রুট মাস্টার স্প্রে করতে হবে চারা লাগানোর পরের দিন এবং 15 দিন পর আর একবার দিতে হবে |
15-20 দিন পর এবং 30-35 দিন পর চাপান সার দিতে হবে |
রোগ পোকা নিয়ন্ত্রণ ۔
চাদ পোকা ,ল্যাদা পোকার জন্যে কোরাজেন দিতে পারেন প্রতি 3লিটার জলে 1 এম এল করে বা তামাক পাতার নির্যাস দিতে পারেন |গোড়া পচা কান্ড পচা রজার জন্যে ম্যানকোজেব +কার্বোন্ডাজিম ব্যবহার করা যেতে পারে প্রতি লিটার জলে 2 গ্রাম করে |
উৎপাদন ۔
এক একটি কপির ওজন 600-700 গ্রাম হয় এবং পাইকারি বাজার 25-30 টাকা পাওয়া যায় এবং এর থেকে বেশিও পাওয়া যায় | আনুমানিক সব খরচ বাদ দিয়ে 60000-70000 টাকা কৃষকের লাভ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে যা শীত কালে করলে সম্ভব হয় না |
বিশেষ ভাবে জানার ও প্রযত্নে চাষ কার্য চালিয়ে যাওয়ার নিকটবর্তী সরকারি কৃষি সহায়তা দপ্তর গুলিতে যোগাযোগ করে করতে পারলে আপনার চাষ কার্য ভালোভাবে সম্পূর্ণ হবে |
আরও দেখুন