মিল্কি মাশরুম চাষ পদ্ধতি ? মিল্কি মাশরুম থেকে উৎপাদিত পণ্য কি ? মিল্কি মাশরুম এর প্রোটিন গুনাগুন্ এবং উপকারিতা ? মিল্কি মাশরুম উৎপাদন এ লাভের পরিমান কি?

Didibhai Agrofarm
0


মিল্কি মাশরুম চাষ পদ্ধতি ? মিল্কি মাশরুম থেকে উৎপাদিত পণ্য কি ? মিল্কি মাশরুম এর প্রোটিন গুনাগুন্ এবং উপকারিতা ? মিল্কি মাশরুম উৎপাদন এ লাভের পরিমান কি?

আমরা আজকে মিল্কি মাশরুম তৈরি নিয়ে আলোচনা করবো ,যারা এই বিষয়ে বিভিন্ন ভাবে জানার চেষ্টা করছেন আশা করি তাদের জন্যে তথ্য সহায়ক হবে| যে বিষয় গুলি নিয়ে আলোচনা হবে ----

  1.   Farm structure (খামার গঠন বা ধরণ)
  2.   Substrate preparation (স্তর প্রস্তুতি)
  3.  Sterilization (নির্বিজন)
  4.  Spawning ( বীজ ছড়ানো)
  5.  Casing soil preparation (আবরণের জন্যে মাটি প্রস্তুতি)
  6.  Fruiting stage ( ফলদায়ক পর্যায় বা উৎপাদন সময়)
  7.  Processing (প্রক্রিয়াকরণ)
  8.  Marketing (বাজারজাত করন)
  9.  Usual reuse (বর্জ পদার্থের পুনরায় ব্যাবহার)
  10.  Income Expenditure (আয় ব্যায়)
  11.  Protine (খাদ্য গুণাগুণ)

মাশরুম মাইসেলিয়াম কি ?

মাইসেলিয়াম হল ছত্রাকের থ্রেড বা হাইফাইয়ের একটি নেটওয়ার্ক।  মাইসেলিয়া প্রায়শই ভূগর্ভে বৃদ্ধি পায় কিন্তু অন্যান্য জায়গায় যেমন পচা গাছের ডালপালায় উন্নতি করতে পারে।  একটি একক বীজ একটি মাইসেলিয়ামে বিকশিত হতে পারে।  ছত্রাকের ফলের দেহ যেমন মাশরুম মাইসেলিয়াম থেকে অঙ্কুরিত হতে পারে।

মাশরুম প্রজাতি ۔۔۔۔

ব্যবসায়ীক ভাবে যে সব মাশরুম গুলি চাষ করা হয় এবং যে তাপমাত্রায় উৎপাদন হয় সেগুলি হল ۔

 

  •  টম বা বোতাম মাশরুম  14°--18°C
  • ওয়েষ্টার বা ঝিনুক মাশরুম 20° - 30°C 
  •  মিল্কি মাশরুম 28°- 38°C
  •  প্যাড্ডি স্ট্র মাশরুম 25- 35°C

 

 মিল্কি মাশরুম ۔۔۔۔

এই মাশরুম 28° C থেকে 38°C এর মধ্যে চাষ হয় এবং আদ্রতা 80%-90% | মূলত গরম কালে এই মাশরুম চাষ ভালো হয় অন্তত 2 বার এর ফলন নিতে পারবেন এবং সময় অনুযায়ী সারা বছর ই বিভিন্ন মাশরুম চাষ করতে পারবেন|

আমরা মাশরুম কেন চাষ করবো ?

আমরা মাশরুম কেন চাষ করবো প্রশ্ন যদি রাখা যায় তবে আমরা যেটি জানি যে সময়ের সাথে সাথে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে সেই সাথে চাষ যোগ্য ভূমির পরিমানও কমে যাচ্ছে আবার প্রকৃতির খাম খেয়ালীর জন্যে অধিক খরচ করে ফসল ঘরে তুলে আনা  সম্ভব হয় না সব সময় এবং বাজার ও ভালো পাওয়া যায় না  আমরা প্রকৃতির উপর দায় বাধ্য থাকলেও প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার জন্যে ঠিক মতো জৈব চাষ করতে পারছিনা |

কিন্তু মাশরুম এমন একটি ফসল যা সূর্যালোকের প্রয়োজন হয় না এবং রিতু অনুযায়ী চাষ করলে সমস্তটাই নিজেই কন্ট্রোল করা যায় এবং সেটি বাড়িতেই স্বল্প পরিসরে |

সেই সাথে ব্যবসায়ীক দিক দিয়ে দেখলে মানুষ এখন সচেতন হচ্ছেন তাঁরা অধিক মূল্যে হলেও পুষ্টি গুন্ সম্পূর্ণ খাদ্য চাচ্ছেন যা মাশরুম বিকল্প খাদ্য হতে পারে , ফলে বাজারজাত করা খুব সহজ |

আর একটি দিক হলো আমরা সবাই জানি বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে covid 19 আমাদের কে শিখিয়ে দিয়েছে যে আয়ের বিকল্প দু তিনটি উদ্দেশ্য থাকা উচিত যাতে একটি বন্ধ হলেও অন্যটি দিয়ে জীবন চলে সেই দিক থেকে মাশরুম বিকল্প থেকে প্রধান ব্যবসায় স্থাপিত করা যেতে পারে কারণ সব কিছু বন্ধ থাকলেও খাদ্য এর প্রয়োজন থাকবেই আর মাশরুম পুষ্টিগুণ সম্পুর্ন্ন এবং বাড়িতেই উৎপন্ন ফসল হিসেবে সঠিক নির্বাচিত ফসল হয়ে উঠছে |

এটা এমন একটি ফসল হয়ে দাঁড়িয়েছে যা জৈব ভাবে করতে চাইলে প্রাকৃতিক সম্পদ এর অভাব নেই যা প্রকৃতি থেকে তার সমস্ত উপকরণ নিয়ে আবার প্রকৃতিকেই ফিরিয়ে দিচ্ছে সুসাস্থকর খাদ্য এবং দূষণ মুক্ত পরিবেশ | সেই সাথে উৎপাদনের পর ব্যাবরিত বর্জ গুলি দিয়ে ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন করে আবার জমিতে দিয়ে পরিবেশ রক্ষায় ভূমিকা রাখছে |


মিল্কি মাশরুম কেন চাষ করব?

  • এই মাশরুম যেহুতু গরম কালেই চাষ করতে হয় তাই কাঙ্খিত তাপ মাত্রার তুলনায় একটু বেশি হলেও অসুবিধা হয় না |
  •  এই মাশরুম উৎপাদনের সময় জীবন কাল বেশি হওয়ার কারন ৪-৫ দিন এ নষ্ট হয় না এবং ফ্রিজিং করে রাখলে ১০-১২ দিন রাখা যায় ۔۔রং এর পরিবর্তন হয় না ফলে কাঙ্খিত দামের জন্যে দূর দূরান্ত পর্যন্ত বাজারজাত করা যায় |
  •  এই মাশরুম শুকানোর পরেও দূর এর প্রোটিন শতাংশ ধরে রাখে এবং আদ্রতা পর্যাপ্ত থাকে যা অন্যান্য মাশরুমে থাকে না |
আরও দেখুন -মাশরুম প্রোডাক্ট ডাল বড়ি , মাশরুম পাঁপড় ,মাশরুম বিস্কুট তৈরী পদ্ধতি

1.Farm structure / খামার নির্মাণের গঠন :---

 আমরা ফার্ম স্ট্রাকচার নিয়ে আলোচনা করব যদি এটি ঠিক মত না হয় তবে পরবর্তী কাজ গুলি ভালো ভাবে করলেও ফলাফল ভাল পাওয়া যাবে না বা বিভিন্ন সমস্যাতে পড়তে হবে |

 সেই কারণে অর্থনৈতিক এবং বিজ্ঞানসম্মত এই দুটি দিক মাথায় রেখে ফার্ম  নির্মাণ করতে হবে |

মাশরুম চাষএর একটি প্ল্যান 

ধানের খড় রাখার শেড

ভেজানো খড় স্তর রাখার জায়গা

মজুত ঘর

স্পনিং করার জায়গা

অফিস ঘর

পথ

ফসল উৎপাদন রুম ১

 

 

 

 

 

 

পথ

ফসল উৎপাদন রুম ২

ফসল উৎপাদন রুম ৩

ফসল উৎপাদন রুম ৪


 নির্মাণ কার্যের আগে যে যেখানেই প্রশিক্ষণ নিন না কেন নিজের শহরে কেমন তাপমাত্রাপ্রথমত ۔۔যে জায়গায় ফার্ম নির্মাণ করবেন সেই জায়গাটা যেন পরবর্তীতে প্রয়োজনে বাড়ানো যায় সেই রকম জায়গা নির্বাচন করবেন | যে ঘর নির্মার করবেন সেটি  ত্রিভুজ আকৃতির করবেন দোচালা খড় বা এডভেস্টর দিয়ে নির্ম্মাণ কিরবেন |এর ফলে সূর্য লোক একভাবে উপরের ছাউনি তাপ দিতে পারবে না ফলে ঘরে কম গরম অনুভুতু হবে  থাকে সে ব্যাপারে সে বেপারে কয়েকবছরের গড় তাপন্যাত্রা পর্যালোচনা করে ফার্ম নির্মাণ করা উচিত | আবহাওয়া কেমন থাকে? যেমন তাপমাত্রা ও আদ্রতা কেমন তা জানা | তার পর আপনাকে সময় অনুযায়ী মাশরু প্রজাতি নির্ণয় করে ঘর নির্মাণ করতে হবে |

কারণ সূর্যের আলো যদি সমস্ত চালে পরে তাহলে সমস্ত গরম নিচে এসে পরে | যদি ছোট আকারে করেন তাহলে অন্তত দুটি ঘরে 7 দিন অন্তর উৎপাদন এর লক্ষ্যে রেখে সেই হিসেবে দুটি ব্যাচ এর জন্যে দুটি ঘর নির্মাণ করবেন এবং নির্বিজন প্যাকেটিং এবং স্টক ও উৎপাদিত ফসল স্টক এর জন্যে ঘর নির্মাণ করতে হবে  এছাড়া পর্যাপ্ত বাতাস পর্যাপ্ত পরিমান বায়ু চলাচলর  জন্য বাসের বেড়া বা 75% গ্রিন শেড নেট দিতে হবেঅধিক তাপ বের বের করে দেওয়ার জন্যে প্রয়োজনে এক্সিসট ফ্যান ব্যাবহার করা যেতে পারে

তবে অবস্যই তাপমাত্রা মিটার ,আদ্রতা মিটার জল স্প্রের ব্যবস্থা রাখতে হবে ফার্মের ভিতরে |

এটা হল আপনার ব্যবসা শুরুর প্রথম ধাপ তাই এটা যদি ভুল হয়ে যায় তবে ব্যবসায় ঝুঁকির সংম্ভাবনা থেকে যাবে , তাই ফার্ম এর ভেতর বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা এবং সব কিছু আলাদা আলাদা বিভাগে সাজিয়ে কাজ করতে হবে ۔۔ফার্ম এর ভেতরে সিলিন্ডার গুলোকে যদি বসিয়ে করেন তবে রেক বা থাকে বানাতে হবে যা একটির থেকে আর একটি যে উপরে থাকবে তা দেড় থেকে 2 ফুট  ফাঁকা থাকে তাহলে উৎপাদিত ফসল তুলতে সুবিধে হবে ۔۔মেঝে টা তে যেন মাটি থাকে তাহলে জল স্প্রে করার ফলে মাটিতে ড্যাম হবে আদ্রতা ভালো থাকবে |

 2.Substrate prepare/ স্তর প্রস্তুতি :---

 আমরা এতক্ষন ঘর বিষয়ে জানলাম এবার আমরা জানবো  মাশরুম সিলিন্ডার এর জন্যে কী কী লাগবে ও প্রস্তুত করবো কী ভাবে ?

  •  প্রয়োজন অনুযায়ী সাইজ এর পিপি বা প্লাষ্টিক এবং রবার গার্ডর ও তুলো
  •  ধানের খড় বা পোয়াল / গমের ডাটি বা আখের রস নিসৃত খোসা
  • নিম কেক ( যদি পারেন তো দিলে ভালো )|
  • কোকো পিট্ বা নারকেল কেক ( এটাও দিলে ভালো হয় আবশ্যিক নয় )
  • খড় কাটার মেশিন (যেটি নিজেস্ব বাজারে কিনতে পেয়ে যাবেন )

 সিলিন্ডার তৈরির জন্যে স্তর প্রস্তুতির জন্যে সবচেয়ে যেটি ভালো হয়


সেটি হলো খড় বা পোয়াল দ্বিতীয় চয়েস হল গমের ডাটা
, তবে খড় ই ভালো হবে এবং এগুলোকে দেড় থেকে 2 ইঞ্চি সাইজের কেটে নিতে হবে |

 তবে একটি কথা বলে রাখা ভাল যদি এর সাথে নিম কেক এবং কোকোপিট্ ব্যবহার করতে পারেন 1 কেজি সিলিন্ডার এ 1 কেজির উপর উৎপাদন পেতে পারেন ۔۔এর জন্যে যে পরিমান খড় কাটা নিবেন তার 5% নিঁম কেক এবং কোকোপিট বা নারকেল কেক বা ডাস্ট  ব্যবহার করতে পারেন |

3. Sterilization /নির্বীজকরণ বা জীবাণুমুক্ত করা :---

 খড় কাটা সম্পূর্ণ হয়ে গেলে ভুসি গুলুকে জীবাণু মুক্ত করুন করতে হবে ۔۔۔এটী 2 টি পদ্ধতিতে করা যায়-

A. ক্যামিক্যাল এর মাধ্যমে

B.বয়েল এর মাধ্যমে

A.আমরা প্রথমে কেমিক্যাল এর মাধ্যামে জানবো ۔۔۔۔۔

প্রথমে একটি আপনার প্রয়োজন মতো পাকা ট্যাঁক বা প্লাস্টিক দিয়ে চৌবাচ্চা বানাতে হবে এবং ভুসি গুলোকে আগে ভালো করে ধুয়ে বালু নগর গুরুকে ছাড়িয়ে নিয়ে আলুর বস্তায় ভরতে হবে |

কতগুলো ভুসি ভিজবেন সেই হিসেবে চৌবাচ্চায় জল ভোরে নিতে হবে এবং কেমিক্যাল মিশ্রিত করতে হবে জলে ۔۔

কত পরিমান লাগবে ভুসির ওজনের হিসেবে দিতে হবে | 100 কেজি ভুসি অনুযায়ী আমরা যে কেমিক্যাল জলে মিশ্রণ করতে হবে সেগুলি হল ۔۔۔

a.লাইম স্টোন 10 কেজি

b.ব্লিচিং পাউডার 250 গ্রাম

c. ইন্দোফিল M45 (মেনকোজেব 75% WP) 25 গ্রাম

এই সব গুলিকে জলে ভালো করে গুলিয়ে তার মধ্যে ভুসির বস্তা গুলোকে 24 ঘন্টার জন্যে ভিজিয়ে ঢেকে রাখতে হবে |

এর পর বস্তা গুলোকে বের করে এনে একটি প্লাস্টিক এ মেলে দিতে হবে ততক্ষন যতক্ষণ না চেপে ধরলে জল বের হবে না অথচ ভেজা ভাব থাকবে ۔۔এর পর এর সাথে আরো কিছু কেমিক্যাল মিশিয়ে দিতে হবে ۔۔۔۔۔

  • পাউডার চুন 2.5 কেজি
  • বেভিস্টিন (50% কার্বোন্ডাজিম ) 200 গ্রাম
  • plantomycin 25 গ্রাম
  • জিপ্সাম পাউডার 500 গ্রাম (আবশ্যিক নয় )

এটার প্রয়োগের সুবিধা হল যদি ভুসি বেশি ড্যাম ভাব থাকে তবে তা শুষে নিবে এছাড়াও ph ব্যালান্স ঠিক থাকবে mycelium এর সাদা ভাব ধরে রাখবে ,মাশরুম এর ওজন বাড়িয়ে দিবে । এই সব গুলি ভুসির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে ভাল করে |

B. বয়েল পদ্ধতিতে জীবাণুমুক্ত করন ۔۔

এই পদ্ধতিতে করলে আর কেমিক্যাল মিশ্রনের প্রয়োজন হয় না ۔۔ বয়েলিং বলতে আপনারা অনেকেই দেখেছেন যে মোমো কিভাবে তৈরী হয় ,নিচে জল এবং উপরে বাস্পে মোম তৈরী হয় | ঠিক একই ভাবে যদি কম আকারে করেন তাহলে গ্যাস বা চুলার উপর একটি ভালো ঢাকনা যুক্ত ড্রাম বসিয়ে নিচে আধা থেকে 1 ফুট জল ঠেলে তার উপর একটি নেটবসিয়ে দিবেন যাতে জল স্পর্শ না করে সে ভাবে তার পর সেই ড্রাম এ ভুসির বস্তা ভোরে দিয়ে 1 ঘন্টার জন্যে ড্রাম এর মুখটি ঢেকে দিবেন যাতে ৮০° cতাপমাত্রা তৈরী হয় বাস্পে | এর পর নামিয়ে জল ঝরাতে হবে কেমিক্যাল পধ্যাতির মতো করে |

বয়েল সিস্টেম 

যারা বড়ো আকারে করবেন তাঁরা ধানের বড়ো মিল গুলিতে দেখতে পারেন কিভাবে তাঁরা বয়েল করে ঠিক একই ভাবে নিজে সেটআপ তৈরি করে ভুসি গুলি বয়েল করতে পারবেন ۔۔ শেষে জল ঝরানোর জন্যে প্লাস্টিক এ বিছিয়ে দিবেন যতক্ষণ জল ঝরে হাতে চেপে ধরার পর শুধু ড্যাম ভাব অনুভব হয় |মনে রাখতে হবে যেন আবার শুকিয়ে না যায় আবার জল আটকে না থাকে |

 4. spawning /বীজ বসানো :---

ভালো স্পন অবস্যই ক্রয় করতে হবে বিস্বস্ত প্রতিষ্ঠান থেকে যার তার মাধ্যমে ক্রয় না করাই ভালো | স্পন ভালো না হলে উৎপাদন ভালো পাওয়া যাবে না |

1 কেজি খড় ভুসি প্যাকেটিং করার জন্যে 14--18 সেন্টিমিটার চওড়া এবং 20 সেন্টিমিটার

স্পন পাকিং 

উচ্চতার পিপি কিট নিতে হবে এর পর তাতে ভুসি ভোরে ভোরে ভোরে 2-3 টি স্তরে স্পন দিতে হবে | 1 কেজির জন্যে 40-50 গ্রাম স্পন হলেই চলবে | ভুসি ভরা হয়ে গেলে প্লাস্টিক মুখটি ভালো করে বেঁধে দিয়ে অন্ধকার ঘরে সেলফ বা দড়িতে ঝুলিয়ে দিতে হবে এবং 4-5 টি ফুটো করে দিতে হবে সাইড এ এবং তুলো ঢুকিয়ে দিতে হবে যাতে ভেতরে CO2 কার্বন ডাই অক্সাইড কেমিক্যালের ফলে তৈরী হলে  বের হয়ে যায় এর পর 10-12 দিনের মধ্যে সাদা হয়ে যাবে এবং 3 সপ্তাহ পর্যন্ত ঘরের তাপমাত্রা 25-38°C এবং আদ্রতা 80-90% রাখতে হবে তার জন্যে নিয়মিত জল স্প্রিয় করতে হবে এবং জীবাণু মুক্ত হয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে হবে |

5.Casing soil preparation /আবরণের মাটি প্রস্তুতি :---

সিলিন্ডার গুলির উপরি ভাগে 2-3 সেন্টিমিটার জৈব সার যুক্ত মাটির আবরণ দিতে হবে তার জন্যে সেটি দুটি ভাগে দেওয়া যেতে পারে ۔۔۔

 a. 2 বছরের পুরোনো গোবর

b.নদীর বালি 50% + ভার্মিকম্পোস্ট 50%

এর যেটি দিয়ে আবরণ দিবেন সেটিকে জীবাণু মুক্ত করতে হবে সেটি বয়েল করেও করতে পারেন অথবা কেমিক্যাল দিয়ে জীবাণু মুক্ত করতে পারেন ۔۔

কেমিক্যাল দিয়ে করলে ۔۔

যে পরিমান মিশ্রণটি নিবেন তার 10%   চুন মেশাতে হবে এবং এবং এর সাথে 10-12% ক্যালসিয়াম কার্বনেট মেশাতে পারেন তাহলে PH ব্যালেন্স ঠিক থাকবে না দিলেও


অসুবিধে নেই
| এর পর মিশ্রণ এর সাথে 4% EC ফরমালিন স্প্রে করতে হবে এবং গ্লাভস হাতে পরে মেশাবেন এবং মুখে মাস্ক পড়বেন অবস্যই কারণ এটি একটি হার্ড কেমিক্যাল তাই ক্ষতি হতে পারে | এর পর একটি প্লাষ্টিক এর ভেতর 72 ঘন্টার জন্যে মুখ বন্ধ করে রাখতে হবে | তার পর 24 ঘন্টা খুলে বাইরে রাখতে হবে | এই কার্য টি শুরু করতে হবে সিলিন্ডারের বয়স যখন 20 দিন তখন থেকে ও তখন ই সিলিন্ডারের মুখ গুলি খুলে দিয়ে
মাটি কেসিং 

তার উপর পেপার সাধন করে বিছিয়ে রাখতে হবে  এবং 25 দিনের মাথায় সিলিন্ডারের মুখে পেপার তুলে  চারিদিক ভোরে 2-3 সেন্টিমিটার উঁচু করে মাটির  আস্তরণ বিছিয়ে দিতে হবে
|

এ কদিন হালকা জল স্প্রিয় করতে হবে যেন মাটি টি ড্যাম থাকে ۔۔খুব ভিজে না যায় লক্ষ্য রাখতে হবে |

6.fruiting stage  ফলদায়ক পর্যায় বা উৎপাদন সময়  :---

Casing করার পর ধীরে ধীরে বের হতে থাকবে এবং 10-12 দিনের মধ্যে প্রথম উৎপাদন নেওয়া যাবে এই ভাবে সিলিন্ডার তৈরির 40 দিন পর উৎপাদন 60-65 দিনে 25 দিন 3-4 বার তুলতে পারবেন টোটাল সিলিন্ডারের যা ওজন হবে সেই পরিমান মাশরুম |

7.processing / প্রক্রিয়াকরণ :--

ছেঁড়া খুব সহজ যখন 6-7 সেন্টিমিটার হবে বা আপনার চাহিদা অনুযায়ী তুলতে পারবে গড়ে একটু চাপ দিলেই ভেঙে যাবে | এর পর সেগুলিকে স্টোর রুমে জমা করবেন এবং অবশ্যই ঘরের তাপমাত্রা ও আদ্রতা প্রয়োজনীয় হিসেবে রাখবেন বাজারজাত না হওয়া পর্যন্ত এবং ডিমান্ড অনুযায়ী পিপি ব্যাগ এ ভরবেন ও বাজারজাত করবেন

 আরও দেখুন -কাচা মাশরুম প্যাকেজিং , সংরক্ষণ বা স্টোরেজ পদ্ধতি

 8.Marketing /বাজারজাত করন :--

 যদি আপনি কাঁচা হিসেবে বিক্রি করতে পারেন তাহলে ভালো বাকি যা অবশিষ্ট থাকবে তা শুকিয়ে প্যাকেটিং করে বিক্রি করতে পারেন |বাজারে শুকনো মাশরুম এর ডিমান্ড আছে এছাড়াও এর আচার ,পাপর, চাউমিন আর অনেক কিছু হয়  । 


9.Usual re use/ বর্জ অবশেষ এর ব্যবহার :---

ব্যবহার করার পর সিলিন্ডার গুলিকে প্লাস্টিক মুক্ত করে ট্যাঁক করে বা পলিথিন ব্যাগ  পাওয়া যায় ভার্মিকম্পোস্ট এর জন্যে তাতে জমা করে কেঁচো ছেড়ে দিলে 4-5 মাসে কেঁচো সার হয়ে যাবে যার বাজার মূল্য ভালোই আছে | বলা যেতে পারে প্রকৃতিকে উপহার দেওয়া হল আপনার এবং খড়ের খরচ উঠে যাবে সার বিক্রয় করে |

 10. Income Expenditure/ আয় ব্যায় :---

ফার্ম তৌরির খরচ বাদ দিয়ে 

কেজি মাশরুম তৈরী করতে খরচ 30-35 টাকা

জায়গা অনুযায়ী 1 কেজি মিল্কি মাশরুম এর দাম 200-300 বা তার একটু কম বা বেশি হতে পারে এবং শুকনো হলে আরো বেশি দাম পাওয়া যাবে

মোটামুটি গড় হিসেবে করলে 1 কেজি সিলিন্ডার পিছু 150 টাকা লাভ করা যাবে|

 এবার যদি আপনি 200 সিলিন্ডার নিয়ে শুরু করেন সিজনে 2 বার করেন 60000 টাকা প্রফিট করতে পারবেন এবং 1 মাস অন্তর যদি 200 করে দুটি জায়গায় করেন তাহলে 4 মাসে 120000 টাকা অর্থাৎ মাসে 30000 টাকা লাভ করতে পারবেন |এবং সারা বছর ই তাপমাত্রা অনুযায়ী বিভিন্ন মাশরুম চাষ করে আত্ম্যনির্ভর হতে পারবেন |

 করোনা সময়ে সংসারের আয় বৃদ্ধি বা বেকারত্ব দূর করার জন্যে মাশরুম চাষ একটি সঠিক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে আপনার জীবনে |

11.মাশরুমের প্রোটিন গুনগুন :--

  • মাশরুম পুষ্টিগতভাবে, এটি প্রোটিন,  ভিটামিন বি, সি এবং ডি, এবং সমৃদ্ধ খনিজ এ সমৃদ্ধ। 
  •  মাশরুম এ ফলিক এসিড এবং ভিটামিন বি, ২ থাকে ,উচ্চ পটাসিয়াম থেকে সোডিয়াম অনুপাতের কারণে, অল্প ক্যালোরি এবং কম চর্বি থাকে , মাশরুম স্থূলতায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য উপযুক্ত, উচ্চ রক্তচাপ, এবং আর্থ্রোস্ক্লেরোসিস, হৃদরোগী, ডায়াবেটিস ইত্যাদি রোগের জন্যে  উপকারী  ।

মাশরুম চাষ করে নিজে খান এবং উৎপাদন করে  অন্যকে পুষ্টি খাদ্য গ্রহণ করার সুযোগ করে দিয়ে অর্থ উপার্জন করে নিজের পরিবারে হাসি ফুটিয়ে তুলুন সেই সাথে পরিবেশ বান্ধব চাষে মানুষকে আগ্রহী করে সাবলম্বী হতে সহযোগিতা করুন ও পশু পাখিকে সুস্থ পরিবেশে সুস্থভাবে বাচাতে সহযোগিতা করুন

                                

    আরও দেখুন 

ওয়েস্টার/ঝিনুক মাশরুম চাষ পদ্ধতি


 মিশ্র মাছ চাষে পুকুরে পোনা মজুত আদর্শ পদ্ধতি এবং নিয়মিত খাদ্য দেওয়ার পদ্ধতি এবং পরিমান ۔

 

 

                      

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)