জৈব চাষের জন্যে কম খরচে জমিকে জৈব জমিতে রূপান্তর করা সম্ভব সেই তরল জৈব জীবাণু সারের দ্রবজীবান্মৃত বা জীবান্মৃত কথা উল্লেখ করছি কেন ব্যাবহার করব? কিভাবে তৈরি করব এবং কিভাবে ব্যাবহার করব? জীবান্মৃত মানে অমৃতের সমান জীব বা জীবাণু অর্থাৎ জীবান্মৃত তৈরি করে জমিতে দেওয়া মানে মাটিতে তা জীবাণু দেওয়া এবং তা মাটির জন্যে অমৃতের সমান কাজ করে , এই সার প্রয়োগের মাধ্যমে আপনি আপনার জমির উর্বতা ফিরিয়ে আনা সম্ভব করে তুলতে পারবেন , জমিতে চাষ মানে জীবাণুর খেলা জীবাণু ছাড়া চাষ করা অসম্ভব ,জীবাণুরাই খাদ্য গাছে মধ্যে স্থানান্তর করে ।
ঠিক একই ভাবে জমিতে আমরা যে রাসায়নিক সার এবং কীটনাশক দিচ্ছি তার ফলে জীবাণুর মৃত্যু ঘটছে এবং জমিও দুর্বল হয়ে যাচ্ছে উৎপাদন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে। আমাদের কে কিছুদিন জৈব সার প্রয়োগ করে সময় দিয়ে তাতে লক্ষ্য কোটি জীবাণুর সংখ্যা বাড়াতে হবে এবং সেইটি নিয়মিত দ্রবজীবামৃত দিয়ে সম্ভব তা প্রমাণিত হয়েছে। আর সেই কারণে প্রাকৃতিক কৃষি উৎভাবক শ্রদ্ধেয় সুভাষ পালেকর মহাশয় পদ্যশ্রী সন্মান পেয়েছেন । বর্তমানে তার নির্দেশনায় হিমাচল প্রদেশ সরকার 2023 সালের মধ্যে জৈব রাজ্য ঘোষণার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছেন গুজরাত সরকার কাজ করছে এবং একই ভাবে সিকিম রাজ্য 2016 সালে জৈব রাজ্য হিসেব এ ঘোষিত হয়েছে এবং সেখানে এখন কোন রাসায়নিক সারের দোকান নেই সম্পর্ন ভাবে নিষিদ্ধ করছে সেখানকার সরকার ।
পদ্যশ্রী শ্রী সুভাষ পালেকর মহাসয়ের এর গবেষণা অনুযায়ী একটি দেশী গাই দিয়ে 30 একর জমি চাষ করা সম্ভব,
একটি সুস্থ সবল দেশী গাই দিনে 10-12 কেজি গোবর দান করে, 10 কেজি গোবর দিয়ে 200 লিটার দ্রবজীবামৃত তৈরি হয় যা দিয়ে 3
বিঘা জমি একবার প্রয়োগ করা যাবে ।
সুতরাং প্রতিদিনের গোবর দিয়ে যদি প্রতিদিন ঐ সার তৈরি করে জমিতে প্রয়োগ করেন তাহলে মাসে একবার প্রয়োগ করলে 90 বিঘা জমি চাষ করতে পারবেন একটি গরু দিয়ে ,তবে যদি কারো দেশী গাই না থাকে অন্য কোন গরু থাকে তার সাথে দেশীর গোবর মূত্র মিশ্রণ দিয়ে তৈরি করতে পারবেন , আলাদা করে গোবর দিতে হবে না এবং জমির উর্বরতা এমনই বেড়ে যাবে
উপকরন-
- জল 200 লিটার
- দেশী গোবর 20 কেজি
- দেশী গোমুত্র 10 লিটার
- যেকোন ডাল বেশন 2 কেজি
- চিটে গুড় 2 কেজি
- মাটি 500 গ্রাম (বট, পাকর বা রাসায়নিক সার ব্যাবহার হয়নি সে বোনের মাটি ,
- একটি 200 লিটার এর ড্রাম
আরও দেখুন
মিল্কি মাশরুম চাষ পদ্ধতি ? মিল্কি মাশরুম থেকে উৎপাদিত পণ্য কি ? মিল্কি মাশরুম এর প্রোটিন গুনাগুন্ এবং উপকারিতা ? মিল্কি মাশরুম উৎপাদন এ লাভের পরিমান কি?
প্রস্তুতি -
সব কিছুকে একটি পাত্রে ভাল করে মেখে নিয়ে তার পর সেগুলিকে
ড্রামে ভরে দিয়ে জল ঢেলে দিয়ে একটি লাঠি দিয়ে ভাল করে ঘেটে দিবেন এবং অবশ্যই ছায়া
জায়গা তে 3 দিন রাখবেন এবং 3 দিন দুবেলা লাঠি দিয়ে সোজা এবং উল্টো দিক দিয়ে 10 বার
ঘুরাবেন এবং যতদিন শেষ না হবে , তবে 10 দিনের শেষ করে ফেললে ভাল হয় ।
ব্যাবহার –
এটি মূলত তিনটি ভাবে ব্যাবহার করা হয়
- যদি চাষ করে জমি ভিজেএ রাখেন তবে এক একর জমতে 200 লিটার জল ছড়িয়েদিয়ে ভিজিয়ে রাখতে পারেন , বিশেষ করে খরা সময়ে জমি বিয়ে চাষ করলে এবং ধান চাষে অবসশই করতে পারেন ।
- জমিতে ফসল লাগানোর পর যখন সেচ দিবেন তখন একটি ড্রামের নিচে ট্যাপ লাগিয়ে হালকা করে ছেড়ে রাখলে জলের সাথে সমস্ত জমিতে ছড়িয়ে যাবে , এবং 21 দিন পর যদি দিতে পারেন এবং মুঠো সার হিসেবে ঘনজীবামৃত ব্যাবহার করবেন ।
- গাছে স্প্রে করতে পারেন 1 লিটার দ্রবজীবামৃত এর সাথে এক লিটার জল মিশিয়ে করতে পারেন বা গাছের গোড়ায় দিতে পারেন ।
উপকার -
এই সার নিয়মিত ব্যাবহার করলে জমিতে জমির উর্বরতা
শক্তি বারে এবং ফসল ভাল হয়। জীবাণুর সংখ্যা বাড়তে থাকে এবং দেশীও বীজ চাষ করা
শুরু করলে,অধিক ফলন পাবে ।
আরও দেখুন
আরও দেখুন -
- পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে ধানের রোগপোকা নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি
- গােবর গ্যাস স্লারি কি ?এবং কৃষি ক্ষেত্রে এর ব্যবহার -
- ফসফো কম্পোস্ট কি ?ফসফো কম্পোস্ট সার তৈরী সহজ পদ্ধতি এবং ব্যবহার
- সুস্থায়ী কৃষি ব্যবস্থাপনা জৈব সারের গুরুত্ব
- জৈব কীটনাশক তৈরী পদ্ধতি
- বোর্দ্য দ্রবণ তৈরী পদ্ধতি। ভাইরাস নাশক তৈরী পদ্ধতি। SPNF
- জৈব চাষে রোগ পোকা নিয়ন্ত্রণে সবচয়ে ভালো 16 টি সহজ ও পরিবেশমুখী কীটনাশক , ছত্রাক নাশক টোটকা
- দ্রুত কম্পোস্ট সার তৈরী পদ্ধতি
- তরল জৈব সার তৈরী ও ব্যবহার পদ্ধতি -
- সবুজ সার ব্যবহার করে মাটির উর্বরতা শক্তি বাড়িয়ে তোলা যায় সহজেই
- সবুজ সার কি? সবুজ সার তৈরী পদ্ধতি -
- কেঁচো সার তৈরী পদ্ধতি
- গোবর দিয়ে নার্সারির জন্যে পরিবেশবান্ধব টব বা পট তৈরীর সহজ পদ্ধতি-
- জৈব কীটনাশক অগ্নিঅস্ত্র কি ? কিভাবে তৈরি করবেন ? কিভাবে ব্যাবহার করবেন ? চাষের জন্যে কতটা লাভদয়ক ?
- অমৃত জল বা মিরাক্কেল জৈব তরল সার তৈরী পদ্ধতি
- নিমাস্ত্র কিভাবে তৈরি করে ? ব্রম্মাস্ত্র কিটনাশক কিভাবে তৈরি করে ?
- বিজামৃত তৈরী ও ব্যবহার পদ্ধতি
- ঘনজীবামৃত জৈব সার তৈরি পধতি
- পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে ধানের রোগপোকা নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি