১।পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণে কিটবিতারক নিমাস্ত্র এবং ব্রম্মাস্ত্র গুরুত্ব-
এখন যে কোনো কিছু চাষ করলে পোকার আক্রমণ থাকবেই এবং বিভিন্ন রাসায়নিক কিট নাশক দেওয়ার পরেও তা ঠিক করে কাজ করে না যেমন তেমন টাকার অপচয় হয় । স্প্রে করতে গিয়ে শরীর এ লান্স এর ক্ষতি হয় এবং উত্পাদন করে ভাল খাদ্যও খেয়ে যে সে ঘাটতি পূরণ হবে সেটাও নয় বরং উৎপাদিত পণ্য বিশযুক্ত হয় ফলে যা খেয়ে নিজে এবং পরিবারে রোগ কে নিমন্ত্রন করে নিয়ে আশা হয়। অপরদিকে যদি তা আমরা জৈব ভাবে প্রাকৃতিক সম্পদকে কে কাজে লাগিয়ে ব্যাবহার করি তাহলে স্প্রে করতে গিয়ে শরীর এর ক্ষতি হবে না ,খরচ লাগবে না এবং উৎপাদিত ফসল খেয়ে নিজে ও পরিবারকে কে সুস্থ রাখা যাবে ডাক্তার এর খরচ কমবে এবং সন্তানের আয়ুষ্কাল বাড়বে তাই আমাদের উচিত নিমাস্ত্র এবং ব্রম্মাস্ত্র কিটবিতারক গুলি বাড়িতে প্রস্তুত করে কৃষি কার্যে এর ব্যবহার কে বাড়িয়ে তোলা ,আমরা জৈব চাষ বলতে শুধু জৈব খাব সেটা নয় চাষে যত পরিমাণ দেশীও বীজ এবং জৈব সার ও কিট বিতারক এর ব্যাবহার করব 2 বছর কষ্ট হলেও লস হবে না কিন্তু পরবর্তী সময়ে দেশীও সংরক্ষিত বীজে হাইব্রিড বীজএর তুলনায় ফলন বেশি হবে, ।
২।নিমাস্ত্র তৈরী পদ্ধতি
নিমাস্ত্র যে কোনও পোকার জন্যে নিয়মিত গাছে ব্যবহার করতে পারেন ।
নিমাস্ত্র তৈরী করতে যে উপকরণ গুলি প্রয়োজন হয় সেগুলি হল
- নিমপাতা থেত 5 কেজি (দেশী বা খাওয়া নিম পাতা দিয়ে করার চেষ্টা করবেন ফল ভাল পাবেন )
- গোবর 2 কেজি
- গোমুত্র 5 লিটার
- একটি মাটির হাড়ি বা প্লাস্টিক এর ড্রাম (লোহা , বা অ্যালুমিনিয়াম ব্যাবহার করবেন না )
আমরা এখানে একটি পরিমাণ বললাম আপনার আপনাদের প্রয়োজন অনুসারে রেসিও মিলিয়ে
প্রস্তুত করবেন ।
ক. নিমাস্ত্র প্রস্তুতি –
প্রথমে নিমপাতা গুলুকে ভাল করে থেত করে নিবেন এবং তার সাথে গমুত্র এবং গোবর
ভাল করে মিশ্রণ করে নিয়ে হাড়ি বা ড্রামে
ভরে মুখটি একটি কাপড় দিয়ে বেধে নিয়ে 24 ঘণ্টা একটি ছায়া জায়গায় রেখে দিবেন । এর পর 24 ঘণ্টা পর মিশ্রণটিকে একটি কাপড় দিয়ে ছেকে নিয়ে
ছিবরে গুলিকে ফেলে দিয়ে রস গুলির কে একটি জারে ভরে রাখতে পারেন বা তখন ব্যবহার করা
যেতে পারে।
খ . ব্যাবহার-
তখন প্রয়োগ করেন তবে তার সাথে 100 লিটার জল মিশয়ে 3 বিঘা জমিতে ব্যাবহার করতে পারবেন
অর্থাৎ প্রতি লিটার জলের সাথে 50 গ্রাম দ্রবনের মিশ্রণ দিয়ে স্প্রে করবেন
জমিতে, ।
গ .উপকারিতা—
আপনার ঐ নিমাস্ত্র দয়ে পোকা বা বিভিন্ন শোসক পোকা তাড়ানোর কাজে ব্যাবহার করতে পারেন ।
৩।ব্রম্মাস্ত্র তৈরী পদ্ধতি
এটি নিমাস্ত্র তে যে পোকা প্রতিরোধ হচ্ছেনা বা পোকার প্রজাতি
ভেদে ব্যাবহার করতে পারেন -
ক. উপকরন –
- নিমপাতা 3 কেজি।
- আতা ফল পাতা 2 কেজি।
- ডালিম পাতা 2 কেজি।
- পেয়ারা পাতা 2 কেজি ।
- গমুত্র 10 লিটার ।
- একটি ভাল মাটির হাড়ি ।
আমরা এখানে একটি পরিমাণ বললাম আপনার আপনাদের প্রয়োজন অনুসারে রেসিও মিলিয়ে
প্রস্তুত করবেন ।
খ .ব্রম্মাস্ত্র প্রস্তুতি –
সমস্ত পাতা গুলোকে আগে থেত করে নিতে হবে তার পর সেগুলিকে গমুত্রয়ের সাথে হাড়িত দিয়ে কিছু সময় আনতর মোট 5 বার ফুটিয়ে দ্রবনের পরিমাণ অর্ধেক হয়ে গেলে নামিয়ে নিয়ে মুক্তি একটি কাপড়ের টুকরো দিয়ে বেধে নিয়ে 24 ঘণ্টা ছায়া জায়গায় রেখে দিয়ে তার পর ছোবড়া গুলোকে ছেকে ফেলে দিয়ে বোতলে ভরে রাখতে পারেন , এবং প্রয়োজন অনুসারে ব্যাবহার করতে পারেন,এটি 6 মাস পর্যন্ত রেখে ব্যাবহার করতে পারবেন ।
গ . ব্যাবহার -
প্রতি লিটার জলের সাথে ব্রম্মাস্ত্র 25 গ্রাম মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে ।
ঘ .উপকারিতা –
রস শোষক পোকা , ফল ও শুটি ছিদ্র করি পোকা নিয়ন্ত্রণের জন্যে ব্যাবহার করা হয় ।
আরও দেখুন - জৈব চাষে রোগ পোকা নিয়ন্ত্রণে সবচয়ে ভালো 16 টি সহজ ও পরিবেশমুখী কীটনাশক , ছত্রাক নাশক টোটকা
৪। প্রায়ই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলীর উত্তর -
১। নিমস্ত্র এবং ব্রম্মাস্ত্র এর মধ্যে কোনটি আগে ব্যবহার করব?
উত্তর -আগে নিমস্ত্র ব্যবহার করে দেখতে হবে কাঙ্খিত পোকা দমন হচ্ছে কিনা তার পর ব্রম্মাস্ত্র ব্যবহার করতে হবে।
২। নিমস্ত্র এবং ব্রম্মাস্ত্র কি যে কোনো গাছের রোগ পোকা দমনে ব্যবহার করা যাবে ?
উত্তর -হ্যা করা যাবে। যে কোনো রাসায়নিক কীটনাশক দেওয়ার পূর্বে এগুলি ব্যবহার করতে হবে।
৩। নিমস্ত্র এবং ব্রম্মাস্ত্র কতদিন পর পর প্রয়োগ করতে হয় ?
উত্তর -৭ দিন পর পর প্রয়োগ করলে ভালো উপকার পাওয়া যায় ।
৪। নিমস্ত্র এবং ব্রম্মাস্ত্র প্রয়োগে কি পোকা মারা যায় ? কি কি লাভ হয় ?
উত্তর -না মারা যায় না কিন্তু রোগ পোকা থাকে না বা আগে প্রয়োগ করলে আসে না এর ফলে উপকারী পোকারা বেঁচে থাকে এবং পরাগমিলন ভালো হয় এছাড়াও বিষমুক্ত খাদ্য পাওয়া যায়।
আরও দেখুন -
- পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে ধানের রোগপোকা নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি
- গােবর গ্যাস স্লারি কি ?এবং কৃষি ক্ষেত্রে এর ব্যবহার -
- ফসফো কম্পোস্ট কি ?ফসফো কম্পোস্ট সার তৈরী সহজ পদ্ধতি এবং ব্যবহার
- সুস্থায়ী কৃষি ব্যবস্থাপনা জৈব সারের গুরুত্ব
- জৈব কীটনাশক তৈরী পদ্ধতি
- বোর্দ্য দ্রবণ তৈরী পদ্ধতি। ভাইরাস নাশক তৈরী পদ্ধতি। SPNF
- তরল জৈব সার তৈরী ও ব্যবহার পদ্ধতি -
- সবুজ সার ব্যবহার করে মাটির উর্বরতা শক্তি বাড়িয়ে তোলা যায় সহজেই
- সবুজ সার কি? সবুজ সার তৈরী পদ্ধতি -
- কেঁচো সার তৈরী পদ্ধতি
- গোবর দিয়ে নার্সারির জন্যে পরিবেশবান্ধব টব বা পট তৈরীর সহজ পদ্ধতি-
- জৈব কীটনাশক অগ্নিঅস্ত্র কি ? কিভাবে তৈরি করবেন ? কিভাবে ব্যাবহার করবেন ? চাষের জন্যে কতটা লাভদয়ক ?
- জীবান্মৃত কিভাবে তৈরি করব ? জৈব চাষে জীবান্মৃত কিভাবে কাজ করে ? এবং এর ব্যাবহার কিভাবে হয় ?
- অমৃত জল বা মিরাক্কেল জৈব তরল সার তৈরী পদ্ধতি
- বিজামৃত তৈরী ও ব্যবহার পদ্ধতি
- ঘনজীবামৃত জৈব সার তৈরি পধতি
- পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে ধানের রোগপোকা নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি
- দ্রুত কম্পোস্ট সার তৈরী পদ্ধতি