বোর্দ্য দ্রবণ তৈরী পদ্ধতি। ভাইরাস নাশক তৈরী পদ্ধতি। SPNF

Didibhai Agrofarm
0
বোর্দ্য দ্রবণ তৈরী পদ্ধতি। ভাইরাস নাশক তৈরী পদ্ধতি। SPNF


আমরা চাষ করতে গিয়ে যেকোন সবজি তে একটি বড় সমস্যার সন্মুখীন হই সেটি হল ছত্রাকনাশক এবং ভাইরাস নাশক এর জন্যে এবং জৈব উপায়ে কিভাবে তা দমন করব তা নিয়ে চিন্তিত থাকি। যে জৈব ভাবে সর কিটবিতারক তো ব্যাবহার করছি কিন্তু ফসলে ছত্রাকনাশক এবং ভাইরাস দূর করব কি করে সেই পদ্ধতি জানব -

    1.ভাইরাস নাশক ও ছত্রাক নাশক

    ৩ বিঘা জমিতে বোর্দ্য দ্রবণ  ব্যবহারের উপকরণ উল্লেখ করা হয়েছে। 

    a.উপকরন -

    • জল 200 লিটার । 
    • টক দই 5 লিটার (4-5) দিনের পুরোনো । 
    • প্রস্তুতি ও ব্যাবহার । 
    • উপরক্ত দুটি দ্রব্যকে এক সাথে ভাল করে মিশিয়ে নিয়ে এক একর বা 3 বিঘা জমিতে স্প্রে করা যেতে পারে । 

    b.উপকারিতা -

    যে কোন ফসলের ছত্রাক এবং ভাইরাস দমনের জন্যে এই মিশ্রণ ব্যাবহার করতে পারেন ।  এটি  পেপে গাছের একটি বড় সমস্যা লিফকার্ল এবং মোজাইক ভাইরাস আক্রমণের কারণে প্রায় 70% জমি নষ্ট হয়ে যায় এবং রাসায়নিক ভাবে কন্ট্রোল করা সমস্যা কন্ট্রোল করা যায় না কিন্তু নিমাস্তর / অগ্নিঅস্ত্র প্রয়োগ এবং পরে ঐ দ্রবণ 7 দিন পর পর প্রয়োগ করলে 3 বার দিলেই পেপের এই রোগ দমন করা সম্ভব হয় । 

    2.বাের্দো দ্রবণ তৈরী  : 

    ০ গ্রাম পুঁতে ও ১০ গ্রাম চুন ১ লিটার জল, এই অনুপাতে মিশ্রণকে ১% বাের্দো মিশ্রণ বলে। মিশ্রণ বানানােতে বিশেষ সতর্কতা প্রয়ােজন হয় যেমন:

    a.বাের্দো দ্রবণ প্রস্তুতি -

    মপরিমান পুঁতে ও চুন দুটি আলাদা মাটি, কাঠ বা প্লাষ্টিক পাত্রে গুলতে হবে। কোন ধাতু নির্মিত পাত্র বা হাতা ব্যবহার করা যাবেনা।।

     এবার তৃতীয় একটি দ্বিগুণ মাপের পাত্রে চুন ও উঁতের দ্রবণ একসাথে সাবধানে ধীরে ধীরে ঢালতে হবে ও কাঠ বা অধাতব কোনও হাতা বা কাঠি দিয়ে নাড়তে হবে। মেশানাের সময় খুব গরম হয়। মেশানাে শেষ। হলে পরিমান মত ঠান্ডা জল মিশিয়ে দ্রবণটি তৈরী হয়। 

    এবার একটি কাস্তে বা লােহার দন্ড বা ব্লেড ঐ মিশ্রণে চুবিয়ে দেখতে হয় তামাটে লালচে দাগ পরে কিনা। যদি দেখা যায় দাগ পড়ছে তাহলে অল্প অল্প করে চুন মেশাতে হয়। যখন দেখা যাবে লােহাতে আর দাগ। পড়ছে না তখন বুঝতে হবে দ্রবণ তৈরী সম্পূর্ণ হয়েছে। তৈরী হওয়ার সাথে সাথে স্প্রে করতে হবে। 

    আরও দেখুন -জৈব কীটনাশক অগ্নিঅস্ত্র কি ? কিভাবে তৈরি করবেন ? কিভাবে ব্যাবহার করবেন ? চাষের জন্যে কতটা লাভদয়ক ?

    b.বাের্দো দ্রবণ ব্যবহার 

    শাকসবজির, ধানের, বিশেষ করে আলুর জলদি ধবসা, নাবী ধবসা ইত্যাদি ছত্রাক জনিত রােগে খুবই কার্যকরী ও সস্তা। প্রয়ােজনে ১৫-২০ দিন অন্তর দুবার স্প্রে করা যাবে। ধানের ব্যাক্টেরিয়াল ব্লাইট, পাতায় বাদামী দাগ, খােলা পচা, গােড়া পচা রােগ, বেগুন, টমেটো,পটল ইত্যাদির পাতায় ধ্বসা রােগ ও গােড়া পচা রােগ ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

    3.জীবানুর দ্রবণ তৈরী : 

    সিউডােমােনাস ফ্লরেসেন্স বা ট্রাইকোডারমা ভিরিডি নামের জীবাণুর দ্রবণ ব্যবহার করে বিভিন্ন ছত্রাক নাশক রােগ  ঠিক হয়।

    a.ব্যবহারের পদ্ধতি: 

    a.1.বীজ শােধন 

     সিউডােমােনাস - প্রতি কেজি ধান বীজের জন্য ১০ গ্রাম জীবাণু ৩০০ মি:লি; জলে |গুলে ধান বীজ চার ঘন্টা ভিজিয়ে রাখা।

     ট্রাইকোডারমা জীবাণু- প্রতি কেজি বীজে ৪ গ্রাম জীবাণু ও ২০ মি:লি: ঠান্ডা ভাতের। মাড় দিয়ে বীজে মাখানাে।

    a.2.চারা শােধন : 

    টাইকোডারমা ভিরিডি জীবাণু ২০০ গ্রাম ১০ লিটার জলে গুলে ধানের চারা ১০ মিনিট দেরি নিয়ে রােপণ করতে হয়। 

    a.3.মূলজমিতে প্রকোপ দেখা দিলে :

    ৮০ গ্রাম ট্রাইকোডারমা ভিরিডি ১২০ লিটার জলে গুলে বিকেলের দিকে স্প্রে করতে হয়

    b.জীবানুর দ্রবণ ব্যবহারে উপকার - 

      ধানের পাতা ঝলসা, পাতায় বাদামী ছিটে দাগ, খােলা পচা, খােলা ঝলসা রােগ, ইত্যাদি  পরিবেশমুখী উপায়ে ঠিক হয়। 

    4.FAQ(প্রায়ই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নোত্তর) 

    1 . ট্রাইকোড্রামা ভিরিডি কিভাবে ব্যবহার করে ?

     ট্রাইকোডারমা ভিরিডি বীজ শোধনের জন্যে  প্রতি কেজি বীজে ৪ গ্রাম জীবাণু ও ২০ মি:লি: ঠান্ডা ভাতের। মাড় দিয়ে বীজে মাখানাে এবং চারা শোধনের জন্যে ২০০ গ্রাম ১০ লিটার জলে গুলে ধানের চারা ১০ মিনিট দেরি নিয়ে রােপণ করতে হয় এর ফলে ধানের পাতা ঝলসা, পাতায় বাদামী ছিটে দাগ, খােলা পচা, খােলা ঝলসা রােগ, প্রভৃতিতে উপকার পাওয়া যায়। 

    আরও দেখুন -ধান বীজ শোধন ও সংরক্ষণ পদ্ধতি

    2 . বোর্দ্য দ্রবণ কিভাবে তৈরী করে ?

    সমপরিমান তুতে ও চুন দুটি আলাদা মাটি, কাঠ বা প্লাষ্টিক পাত্রে গুলতে হবে। কোন ধাতু নির্মিত পাত্র বা হাতা ব্যবহার করা যাবেনা।।

     এবার তৃতীয় একটি দ্বিগুণ মাপের পাত্রে চুন ও উঁতের দ্রবণ একসাথে সাবধানে ধীরে ধীরে ঢালতে হবে ও কাঠ বা অধাতব কোনও হাতা বা কাঠি দিয়ে নাড়তে হবে। মেশানাের সময় খুব গরম হয়। মেশানাে শেষ। হলে পরিমান মত ঠান্ডা জল মিশিয়ে দ্রবণটি তৈরী হয়। 

    এবার একটি কাস্তে বা লােহার দন্ড বা ব্লেড ঐ মিশ্রণে চুবিয়ে দেখতে হয় তামাটে লালচে দাগ পরে কিনা। যদি দেখা যায় দাগ পড়ছে তাহলে অল্প অল্প করে চুন মেশাতে হয়। যখন দেখা যাবে লােহাতে আর দাগ। পড়ছে না তখন বুঝতে হবে দ্রবণ তৈরী সম্পূর্ণ হয়েছে। তৈরী হওয়ার সাথে সাথে স্প্রে করতে হবে। 

    3 . পেঁপের  ভাইরাস  কিভাবে ঠিক হয় ?

    জল 200 লিটার । 

    টক দই 5 লিটার (4-5) দিনের পুরোনো । 

    প্রস্তুতি ও ব্যাবহার । 

    উপরক্ত দুটি দ্রব্যকে এক সাথে ভাল করে মিশিয়ে নিয়ে এক একর বা 3 বিঘা জমিতে স্প্রে করা যেতে পারে ।  এটি  পেপে গাছের একটি বড় সমস্যা লিফকার্ল এবং মোজাইক ভাইরাস আক্রমণের কারণে প্রায় 70% জমি নষ্ট হয়ে যায় এবং রাসায়নিক ভাবে কন্ট্রোল করা সমস্যা কন্ট্রোল করা যায় না কিন্তু নিমাস্তর / অগ্নিঅস্ত্র প্রয়োগ এবং পরে ঐ দ্রবণ 7 দিন পর পর প্রয়োগ করলে 3 বার দিলেই পেপের এই রোগ দমন করা সম্ভব হয় । 

    তথ্য সূত্র 

    হিমাচল প্রদেশ সরকার  প্রাকৃতিক কৃষি। 

    টেকসই কৃষি নেটওয়ার্ক দ্বারা পরিচালিত ট্রায়াল এবং পরীক্ষার ফলাফল , পশ্চিমবঙ্গ 


    আরও দেখুন - 

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    0মন্তব্যসমূহ

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)