হাসের রোগ নির্ণয় ও তার প্রতিকার
১। হাসের বাচ্চা ১-৩ দিন পর্যন্ত দুবেলা করে ১০০বাচ্চা পিছু ৪ টি অক্সিটেট্রাসাইক্লিন
ট্যাবলেট জলের সাথে খাওয়াতে হবেই।
২। পরের ৩ দিন ভিটামিন বি দিতে হবে। এবং পরের ৩ দিন ভিটামিন সি ও ক্যালসিয়াম
খাওয়াতে হবে।
৩। দুই মাস বয়স হলে সকালে খালি পেটে কৃমির ঔষধ অ্যালবেন্ডাজল খাওয়াতে হবে।
তবে ১মাস বয়স এর পর থেকে ৭ দিনে একদিন দেশি নিমপাতার রস খাবারের সাথে মিশিয়ে খাওয়ালে
কৃমিনাশক এর কাজ হবে। এবং নিয়মিত হলুদ গালা জলের সাথে ১০০ বাচ্চা পিছু ২টি রসুন দিলে
এর সাথে মধু দিলে ভাল।
৪। বাচ্চার ৪০দিন বয়স হলে লিভারটনিক খাওয়াতে হবে সপ্তাহে ২দিন।
৫। বাচ্চার গায়ে কোনো আঘাত লাগলে সেখানে হলুদ তেল গরম করে লাগিয়ে দিলে
উপশম হবে। ৬। পা এ ব্যথার জন্য খুরিয়ে খুরিয়ে হাটলে সেটিকে ধরে হমিওপ্যাথি আরসেনিক
অ্যালবাম ঔষধ খাওয়ালে কমে যাবে ২দিন৷
৭। হাসের চোখ কানা হয়ে যাচ্ছে মুখ
দিয়ে লালা পড়লে এনরোসিন ৫%। এনরোফ্লক্সেসিন
৫% ২এম এল ১ লিটার জলের সাথে ৩-৫ দিন দুবেলা।
৮৷ হাসের ঘার উল্টে উল্টে মারা যায়
যদি তবে ভিটামিন ই ভেট পাউডার / হোমিওপ্যাথি ভিটা ই (বাসকোন)। মানুষের ই ক্যাপ ক্যাপসুল
খাওয়াবেন।
৯। হাসের বাচ্চার বয়স কম খাদ্য থলি
ফুলে যাচ্ছে ঝাকুনি দিয়ে মারা যাচ্ছে তবে জীবানু মুক্ত খাওয়ার ও জল খাওয়াবেন এবং
সিপ্রোফ্লক্সেসিন সিরাপ ৩-৫ দিন খাওয়াবেন৷
১০। হাসের চোখ নীল ঘার বাকা হয়ে যায় ভিটামিন বি১ এবং বি২ পাউডার খাওয়াবেন।
১১। হাসের জুর হলে সিপ্রোফ্লক্সেসিন সিরাপ ৩-৫ দিন খাওয়াবেন।
১৩। হাস কুজো হয়ে বুকে ভর করে হাটে এনরোসিন ৫% / এনরোফ্লক্সাসিন ২ এম এল ১ লিটার জলের সাথে ৩-৫ দিন দুবেলা।
১৪৷ হাসের চুনপায়খানার সাথে সাথে পাতলা পায়খানা হাচি কাশি ঝিমোয় তবে এনরাসিন ৫%। এনরোফ্লক্সাসিন
২ এম এল ১ লিটার জলের সাথে ৩-৫ দিন দুবেলা।
১৫৷ হাসের বাচ্চা খাচ্ছেনা ক্রিমিনাশক অ্যালবেন্ডাজল খাবারের সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে
হবে এবং ভিটামিন এ টু জেট খাওয়াবেন।
১৬৷ হাসের বচ্চার মাথার চুল উঠে যাচ্ছে তাহলে জি সিরাফ খাওয়াবেন।
১৭। হাস ভালো ডিম পারার জন্যে ক্রিমিনাশক খাওয়াবেন এবং এর
পর ভিটামিন ই খাওয়াবেন।
১৮। হাসের ঘর বাকা চোখ ঘোলা হয়ে গেলে ভিটামিন এ,ডি ই খাওয়াবেন।
১৯। হাসের বচ্চা চোখ ঘোলা হয়ে যাচ্ছে সাদা পায়খানা করছে এবং থলি ফুলে গিয়ে
মারা যাচ্ছে তবে এনরোসিন ৫%। এনরোফ্লক্সাসিন
২ এম এল ১ লিটার জলের সাথে ৩-৫ দিন দুবেলা।
২০। হাসের ডাক কলেরা রোগ হয়ে গেলে তবে জীবানু মুক্ত খাওয়ার ও জল খাওয়াবেন
এবং সিপ্রোক্সেসিন সিরাপ ৩-৫ দিন খাওয়াবেন। তবে আগে থেকে ডাক কলেরা ভ্যাকসিন দিয়ে
রাখলে বুকি কম থাকে।
২১। হাসের যদি না ভালো না হয় তবে হাসের বচ্চা
খাচ্ছেনা ক্রিমিনাশক আলবেন্ডাজল খাবারের সাথে মিশিয়ে খাওয়াতে হবে এবং ভিটামিন এ টু
জেট (A2 Z)খাওয়াবেন।
২২। হাস হাটা চলা করছে না খাবার খাচ্ছেনা তবে ব্যাকটিম | সেপট্টা (কম্পোজিশন সালফমেথক্সেজল
এবং ট্রাইমেথোপ্রিম ) ২গ্রাম/ লিটার জলের সাথে খাওয়াবেন।
২৩৷ ডাকপ্লেগ রোগ হয়ে গেলে যদি ভ্যাকসিন
দেওয়া না থাকে সিপ্রোফ্লক্সেসিন সিরাপ ৩-৫ দিন খাওয়াবেন । ২৪। হাসের প্যারালাইসেস হলে ভিটামিন বি১ ও বি
২ খাওয়াবেন ৩-৫ দিন।
২৪। সর্দিকাশি থাকলে এনরোফ্লক্সেসিন খাওয়াতে হবে জলের সাথে ২ বেলা করে ৩ দিন ১ কেজি শরীরের ওজন অনুসারে ৫ এমে এল করে । লক্ষন বোঝার উপায় সর্দিতে বাচ্চার গলা ঘরঘর করবে, মুখে কফ জমে থাকবে, নাকে জল থাকবে। এমন পর্যায়ে থাকলে তাদের আলাদা করে ট্রিটমেন্ট এ রাখতে হবে ঠিক না হওয়া পর্যন্ত ।
২৫। বাচ্চা যদি দল ছুট হয়ে ঝিমোতে থাকে তবে বাচ্চার পায়খানা
দেখতে হবে মলদারে চুনচুন লেগে থাকবে তাহলে তাকে জলের সাথে ১ লিটার জলে ১ গ্রাম অ্যামোক্সলিন
দিতে হবে ৩ দিন, যদি চুন এবং সর্দি দুই ই
থাকে তাহলে ভিটামিন, এনরোফ্লক্সেসিন, অ্যামোক্সলিন একত্রিত করে
আগের পরিমাণ অনুযায়ী দিতে হবে।
২৬। অনেক সময় দেখা যাবে বাচ্চা পা খুড়িয়ে হাটছে, বসে থাকছে তবে তাকে ভিটামিন
বি ১ ভিটামিন বি২ ৩ দিন খাওয়াতে হবে বা মাল্টিভিটামিন ঔষধ জলে গুলিয়ে দিতে হবে। যে
কোনো মেডিকেলে পাবেন জেনেরিক ঔযধ হলে কম দামে
পাবেন ।
২৭। বাচ্চা জলে গিযে ফিরে আসার পর যদি ঘর উল্টে উল্টে পরে গিয়ে মারা যেতে থাকে
তাহলে ১ কেজি শরীর এর ওজন অনুসারে ৫ এম এল এনরোফ্লক্সেসিন দিতে হবে জলের সাথে মিশয়ে
সঙ্গে সঙ্গে ।
আরো দেখুন - বিজ্ঞান ভিত্তিক হাসের বাচ্চা ব্রুডিং এবং বাসস্থান নির্মাণ পদ্ধতি
এটি একটি ব্যাক্টেরিয়া ঘটিত ।
১। রোগের লক্ষণ-
- হঠাং সুস্থ হাস ওনেক গুলোতে একসাথে মারা যেতে পারে।
- আক্রান্ত হাসঁ বার বার পাতলা পায়খানা সবুজ হলুদ রং এর করতে পারে।
- আ ক্রান্ত হাস খুদা মন্দা হয় এবং ঘন ঘন খুব জল খায়।
- কলেরা আক্রান্ত বাচার চোখ মুখ ফুলে যায়।
- কলেরা আক্রান্ত হাসের গায়ে জ্বর থাকে।
- কলেরা আকরান্ত হবার পর ঝিমায় এবং চলাফেরা করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।
- আক্রান্তের ফলে কানের লতি নীল বা কালচে আকার ধারন করে।
- আন্ত হাসের চোখ দিয়ে জল পরে এবং নাক মুখ দিয়ে লালা ঝরে।
- বড় হাসের যদি হয় তখন ডিম দেবার হার অনেকটা কমে যায়।
২। চিকিৎসা –
সালফামেজাথিন (৩৩%) ৬ এম এল ১ লিটার জলে মিশয়ে খাওয়াতে হবে
,২৯। ডাক প্লেগ
এটি ভাইরাস জনিত রোগ মাঝারী থেকে বড় হাসের হয়ে থাকে ,
১। লক্ষণ –
- হাস দাঁড়াতে পারেনা খুরিয়ে ঘুরিয়ে হাটে।
- সাতার কাটতে পারেনা পা অবশ হয়ে যায়।
- জলের পিপাসা বেড়ে যায়। কিন্ত খাওয়া দাওয়া কমে যায়।।
- পায়খানা পাতলা হয় অনেক সময় সবুজ ও হলুদ রং এর হয়ে থাকে অনেক টাইম পায়খানার সাথে রক্ত মিশ্রিত হতে পারে।
- পালক এলোমেলো হয়ে যায় । হাস পাখনার উপর ভর করে থাকে ।
- রোগের প্রকোপ বেসি হলে অনেক সময় পুরুষ হাসের প্রজননঅঙ্গ বেরিয়ে আসে।
- অনেক সময় চোখ দিয়ে জল পরে।
- ময়না তদন্ত করলে হাসের হৃদপিন্ড , কলিজা এবং ডিম্বথলিতে রক্ত জমাট বাঁধা পাওয়া যায়।
২। চিকিৎসা –
হাসের ডাকপ্লেগ এর প্রধান প্রতিষেধক হল ডাকপ্লেগ টিকা তবে ডাকপ্লেগ এর তাৎখনিক
চিকিৎসা
- হাঁসের সংখ্যা কম হলে অক্সিটেট্রাসাইক্লিন ট্যাবলেট পাওয়া যায় ২৫০ এমজি এবং ৫০০ এমজি। ২৫০ এমজি হলে ৪ ভাগের ১ ভাগ ট্যাবলেট প্রতিটি হাঁসকে বা ৫০০ এমজি হলে ৮ভাগের ১ ভাগ একটি হাসকে খাওয়াতে হবে ৩-৫ দিন দিনে দুবেলা করে। হাসের সংখ্যা বেশি হলে এনরোফ্লক্সেসিন ১০% বা সিপ্রোসেল সিপ্রোফ্লক্সেসিন) ১০% প্রতি লিটার জলে ১ মিলি করে দুবেলা ৩-৫ দিন খাওয়াতে হবে। ঔষধ সকলকে খাওয়াতে হবে কিন্তু অসুস্থ হাঁসকে আলাদা করে রাখতে হবে।
- বুঝতে না পারলে অতিসত্তর নিকটস্থ প্রানী সম্পদ দপ্তরে যোগাযোগ করতে হবে।
- যে পাত্রে খাবার দেওয়া হয় খাওয়া হয়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে পাত্র জিবানুনাশক দিয়ে ধুয়ে ফেলতে
৩০। ডাক সেপটিসেমিয়া –
এটি একটি ব্যাক্টেরিয়া ঘটিত রোগ । ডিমের মাধ্যমে এই রোগ বাহিত হতে পারে ,
কোন বয়সে বেশি হয় -১৫ দিন থেকে ৪৫ দিন বয়সী বাচ্চাদের মধ্যে এই রোগ বেশি হয়
ডিমের মাধ্যমে বাহিত হয়ে ,
১ । লক্ষণ –
- দুর্বলতা দেখা যায় ।
- মাথা শরীরএর মধ্যে ঢুকিয়ে রাখে ।
- হাট তে চাইবেনা ।
- চোখ ও নাক দিয়ে জল পড়বে ।
- পাতলা পায়খানা হয় ।
- পায়ে ও হাটুর উপর ভোর করে চলে।
২. অভ্যন্তরীণ লক্ষণ –
স্প্লিহা এবং যকৃৎ ফুলে যায় , বায়ু থলিতে ঘা হয় ।
- রোগ মুক্ত বাচ্চা কিনতে হবে প্রতিষ্ঠিত হ্যাচারী থেকে
- পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে
- ভাল ও পরিমাণ মতো ক্ষবর ,বিশুদ্ধ জল ও আলো বাতাস যুক্ত জায়গায় রাখতে হবে
- ইদুর জাতীয় প্রাণী বা বন্য পাখি থেকে দূরে রাখতে হবে
- মৃত পাখিকে যথাযথ ভাবে নষ্ট করতে হবে
- গাদা গাদি করে রেখে অপরিষ্কার জায়গায় রেখে কষ্ট দেওয়া যাবে না হাসকে
নাম |
পদ্ধতি |
পরিমাণ |
বয়স |
ডাক কলেরা |
চামড়ার নিচে |
১ মিলি ২ মিলি |
৩-৪ সপ্তাহ প্রথম টিকার ১ মাস পর |
ডাক প্লেগ |
চামড়ার নিচে |
১ মিলি
|
৮-১২ সপ্তাহে
দিতে হবে |
আরো দেখুন ধান বীজ শোধন ও সংরক্ষণ পদ্ধতি
টিকা সংক্রান্ত কয়েকটি নির্দেশ বলি-
- রোগ থাকাকালীন বা কোন অসুস্থ হাসকে টিকা দেওয়া যাবে না
- নির্দিস্ট বয়সে মাত্রা অনুযায়ী টিকা দিতে হবে
- সমস্ত টিকা বিশেষ তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রীতে রাখতে হবে
- দিনের ঠান্ডা সময়ে বা অর্থাৎ খুব সকাল বা সন্ধ্যার সময় টিকা দিলে হাসের প্রতিক্রিয়া কম হয়
- টিকা ব্যবহারের পর বেচে যাওয়া টিকা পুনরায় ব্যাবহার করা যাবে না
- টিকা দেওয়ার আগে ভিটামিন ও কৃমিনাশক খাওয়ালে ভাল ফল পাওয়া যায়
- টিকা প্রস্তুত কারীর বিশেষ কোনও নির্দেশিকা থাকলে তা মানা দরকার ,
হাসের কৃমির ঔষধ প্রতি মাসে
পাইপার্জিন ১ দিন
বয়স |
মাত্রা |
বয়স |
মাত্রা |
১ মাস |
৪ ফোটা |
৪ মাস |
৭ ফোটা |
২ মাস |
৫ ফোটা |
৫ মাস |
৮ ফোটা |
৩ মাস |
৬ ফোটা |
৫ মাসের পর |
১০ ফোটা |
২। গাভী পালন সম্পর্কে সরকারি পশু চিকিৎসকদের গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ
৩। মুরগীপালন পদ্ধতি । মুরগীপালন কিভাব শুরু করব । মুরগীর রোগের কারণ । মুরগীর রোগের চিকিৎসা।
৪। দেশি ,সোনালী ,ব্রয়লার মুরগির ঔষধ ও খাদ্য তালিকা
৫। শুকরের প্রজাতি ,রোগ ,খাদ্য ,বাসথান সম্পর্কে প্রাণী চিকিৎসকদের বিস্তারিত তথ্য
৬। আধুনিক ছাগল খামার গড়ে তুলতে প্রাণী পালন চিকিৎসকদের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-2022
৭। গরুর রোগ সমাধানে প্রাণী চিকিৎসকদের পরামর্শ
৮। পশুপালকদের জন্য কিষাণ ক্রেডিট কার্ড এর মাধ্যমে লোন দিচ্ছে
৯। বর্ষার /জলদি ফুলকপি চাষ পদ্ধতি ۔দিদিভাই এগ্রোফার্ম
আসসালামু আলাইকুম
উত্তরমুছুনআরও বেশিবেশি পরামর্শ দিবেন আশা করি
ভালো কিছু সিকলাম
উত্তরমুছুননাইস
উত্তরমুছুনখুব ভালো লাগলো....
উত্তরমুছুনআবার আসবো পরামর্শ এর জন্য..