বিজ্ঞান ভিত্তিক হাসের বাচ্চা ব্রুডিং এবং বাসস্থান নির্মাণ পদ্ধতি

Didibhai Agrofarm
0
বিজ্ঞান ভিত্তিক হাসের বাচ্চা ব্রুডিং  এবং বাসস্থান নির্মাণ পদ্ধতি

হাসপালন একটি লাভ জনক ব্যবসা হয়ে উঠতে পারে যদি সে বিষয়ে ভাল জ্ঞান থাকে এবং সেটি বিজ্ঞান ভিত্তিক । কারণ হাসপালন করতে গিয়ে কয়েকটি ছোট সমস্যার সৃষ্টি হয় যার মধ্যে প্রথম যেটি আসে সেটি হল বাসস্থান নির্মাণ এবং তা পরিচর্যা ও বাচ্চা ব্রুডিং বা তাপ প্রয়োগ ,খাদ্য ব্যবস্থাপোনা । সঠিক সময়ে এই কাজ গুলি করলে ফার্ম ভাল ভাবে চলে এবং লাভবান হওয়া যায় । কিভাবে শুরু করবেন যদি ভেবে থাকেন তাহলে শুরুতে যে বিষয় গুলির উপর গুরুত্ত দিতে হবে সেগুলি হল -

A.হাসের বাচ্চা ব্রুডিং পদ্ধতি

  1. বাচ্চা ক্রয় করে ফার্ম এ রাখার পূর্বে ঘরটি জীবাণু নাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
  2.  ব্রুডিং এর বাস 5 ফুট রাখতে হবে ।  ব্রুডিং এর মেঝেতে 2 ইঞ্চি পুরু করে কাঠের গুঁড়ো  বা ধানের গুঁড়ো  বিছিয়ে দিতে হবে। তার উপর পেপার বিছিয়ে দিতে হবে।
  3.  এই আকারের একটি ব্রুডিং এ 50 টি বাচ্চা রাখলে বাচ্চা ভালো  থাকবে।
  4.  বাচ্চা তোলার  পুর্বে ব্রুডিং এ বাল্প  এর ব্যবস্থা করতে হবে অন্তত 200 ওয়াট এর। মেঝে থেকে 1ফুট উপরে প্রয়োজনে বেশি পাওয়ার দিতে হবে যদি বাচ্চা গাদাগাদি করে জড় হয়ে থাকে আর যদি বাচ্চা দুরে সরে একদম সাইডে গিয়ে থাকে তবে লাইট একটু উপরে তুলে দিতে হবে।
  5.  জল খাবারের জন্য ড্রিংকার বা  বাড়িতে তৈরি জলের পাত্র রাখতে হবে যাতে বাচ্চা জল খেতে গিয়ে ভিজে না যায় এবং পাত্রে জল ছাড়া খাবার দেওয়া যাবেনা।
  6.  খাবারের জন্যে ফিডার বা খাবার পাত্র ব্যবস্থা করতে হবে যাতে খাবার অপচয় না হয়।
  7.  জলের এবং খাবার এর পাত্র প্রতিদিন পটাশিয়াম দিয়ে ধুয়ে জীবানু মুক্ত করে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
  8.  ব্রুডিং এবং ফার্ম পটাশিয়াম পারমোনেট বা ফরম্যালিন দিয়ে স্প্রে করে শোধন করতে হবে কয়েকদিন পর পর।
  9.   প্রতিদিন বুডিং পেপার বদলে দিতে হবে লক্ষ্য রাখতে হবে ভিজে স্যাতস্যাতে হয়ে না থাকে। প্রয়োজনে ব্রুডিং গুড়কে বদলে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে 2দিন আন্তর।
  10. বাচ্চার ঘরে এবং বাচ্চা ধবার পুর্বে হাত পা ভালো করে করে ধুয়ে প্রবেশ করবেন এবং ধরবেন। যে কোনো বেক্তিকে প্রবেশ করতে না দেওয়াই ভালো জিবানু সংক্রমনের হাত থেকে বাচাতে চাইলে বাচ্চাকে।।
  11.  বদ্ধভাবে হাঁস পালন করলে যদি খাকি ক্যাম্বেল হয় তাহলে জলের বেশি প্রয়োজনে হয় না, মাটির উপর উচ্চতা জল ধারণ ক্ষমতা সম্পূর্ণ একটি প্লাস্টিক /পাকা বা এলমিনিয়াম সিট দিয়ে বানিয়ে নিলেই হল যেন প্রতি দিন জল পরিবর্তন করা যায় এবং নতুন জল দেওয়ার সময় জলের সাথে সামান্য পরিমাণ মতো পটাসিয়াম মিশিয়ে দিতে হবে এর ফলে হাস স্নান করে জীবাণু মক্ত থাকবে সংক্রমিত রোগের হাত থেকে রক্ষা পাবে ,
  12.  হাসের ঘর নির্মাণ করতে হবে প্রতিটি হাসের জন্যে 1.5-2 ফুট স্কয়ার ফিট জায়গা অনুযায়ী , যেমন যদি 100 বাচ্চা হয় তবে 150-200 স্কয়ার ফিট হবে  । অর্থাৎ 10 ফিট চওড়া গুনন 20 ফিট লম্বা (২০০ স্কোয়ারফিট) এমন। ভাবে নিজের জায়গা অনুযায়ি করতে হবে। হাওয়া বাতাস যেন পায় সেই অনুযায়ী নিচে 3 ফিট নিচু টিন দিয়ে উপরে বায়ু চলাচলের জন্যে বাকি উপরে 3-4 ফিট বাঁস বা নেট দিয়ে ঘেরা দিয়ে হাসের ঘর নির্মান করতে হবে।।

 B. খাদ্য ব্যবস্থাপনা -

.1. বাচ্চা আহরনের পর খাদ্য দেওয়া যাবেনা । প্রথম 3 ঘণ্টা, আর এস এর জল খাওয়াতে হবে।

2. 1 দিনের বাচ্চা হলে বাচ্চা পিছু 15 গ্রাম হারে যত বাচ্চা হবে তা সারাদিনে দিতে হবে স্টার্টার ফিড অর্থাত 100 বাচ্চা হলে 100 গুনন 15গ্রাম 1500 গ্রাম বা 1.5 কেজি দৈনিক হারে খাদ্য দিতে হবে। এ দিন পর পর বাচ্চা পিছ 10 গ্রাম হারে খাদ্যের পরিমান বাড়াতে হবে অন্তত 30 দিন পর্যন্ত এর পরেও যদি ফিড চালিয়ে যায় তবে স্টার্টার ফিড 42 দিন পর্যন্ত এর পর গ্রযার ফিড 120 দিন বয়স পর্যন্ত চলবে এবং এর পর লেয়ার ফিড চলবে সেট অবশ্যই গুনগত মান সম্পূর্ন কম্পানির খাদ্য হতে হবে।

3.বাচ্চার বয়স ৩০ দিনের পর ম্যাস খাদ্য তৈরির তালিকার  মিশ্রন রেশিও 10 কেজি খাদ্য হারে যথা-


ক্রমিক নং

খাদ্য উপাদান

পরিমাণ

ওজন

1

চালের কুড়া/রাইসব্যান

4

কেজি

2

গমের কুড়া বা চকর

1.5

কেজি

3

ভুট্টা ভাঙ্গা

2

কেজি

4

ফিড

1

কেজি

5

তিল / বাদাম খৈল

800

গ্রাম

6

শুকনো মমাছের গুড়া

500

গ্রাম

7

খনিজ লবণ

150

গ্রাম

8

ভিটামিন

50

গ্রাম

9

মোট

10

কেজি

 বাচ্চা ছোটো থাকা কালীন  পালংশাক, কলমি শাক খাওয়ালে ভালো হয় এবং 30দিন পর বয়স থেকে সবুজ ঘাষ শাকসজি খাওয়াতে হবে এমনকি গৃহস্থালির দৈনিক খাবারের বেঁচেযাওয়া শাকসজি দেওয়া যেতে পারে। সবুজ খাদ্য দেওয়া আবশ্যক। ছােটো সামুক বা জরি খেতে দিলে আরও ভাল হবে এতে ক্যালশিয়াম এর ঘাটতি মিটবে। এটি চাষ ও করা যায় করে।
 বি:দ্রঃ বাচ্চা বড় হওয়ার সাথে সাথে 3 মাস পরে খাদ্য তালিকা পরিবর্তন করতে হবে। এবং  ডিম উৎপাদন শুরুর সময় খাদ্য তালিকায় কিছু পরিবর্তন হবে এবং হাসা ও হাসি নির্ণয় করে 5 টি হাসি পিছু একটি হাসা রাখতে বাচ্চা ফোটানোর জন্যে বীজ ডিম প্রয়োজন হলে আর যদি তা না হয় তবে 15 টি হাসির জন্যে একটি হাসা রাখলেই যথেষ্ট ।

আরো দেখুন 

1. হাসের ৩০ টি প্রধান রোগের লক্ষণ ও তার চিকিৎসা পদ্ধতি এবংহাসের ডাক প্লেগ ,ডাক কলেরা রোগ এর কারণ ও প্রতিকার 
2. ডিম উৎপাদন বৃদ্ধি কিভাবে হবে ? হাসের ৯০% ডিম উৎপাদন জন্যে করণীয় ফর্মুলা গুলি কি ?
3. মুরগীপালন পদ্ধতি । মুরগীপালন কিভাব শুরু করব । মুরগীর রোগের কারণ । মুরগীর রোগের চিকিৎসা।
4. দেশি ,সোনালী ,ব্রয়লার মুরগির ঔষধ ও খাদ্য তালিকা
5. শুকরের প্রজাতি ,রোগ ,খাদ্য ,বাসথান সম্পর্কে প্রাণী চিকিৎসকদের বিস্তারিত তথ্য
6.  আধুনিক ছাগল খামার গড়ে তুলতে প্রাণী পালন চিকিৎসকদের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-2022
7. ছাগলের রোগ নির্ণয় করে চিকিৎসার সঠিক পরামর্শ দিচ্ছেন পশু চিকিৎসকরা
8 .গাভী পালন সম্পর্কে সরকারি পশু চিকিৎসকদের গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ
9 . গরুর রোগ সমাধানে প্রাণী চিকিৎসকদের পরামর্শ
10.  পশুপালকদের জন্য কিষাণ ক্রেডিট কার্ড এর মাধ্যমে লোন দিচ্ছে

 11.  মিশ্র মাছ চাষে পুকুরে পোনা মজুত আদর্শ পদ্ধতি এবং নিয়মিত খাদ্য দেওয়ার পদ্ধতি এবং পরিমান ۔দিদি ভাই এগ্রোফার্ম

   12. স্ট্রবেরি চাষ পদ্ধত

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)