সময়এর সাথে সাথে যতই দিন যাচ্ছে জন সংখ্যা এবং খাদ্য চাহিদা যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে তেমনি আরেক দিকে চাষ এর জায়গা কমছে এই অবস্থায় বিজ্ঞান তার প্রযুক্তিকে উন্নত করছে এবং কম জায়গায় অধিক উৎপাদন মুখী কাজ করছে তাদের মধ্যে মৎস পালন একটি যা নিয়ে বিভিন্ন সময় বিজ্ঞান বিভিন্ন পদ্ধতি কৃষকের সামনে তুলে এনেছে , তার মধ্যে অন্যতম বটম ক্লিনিং মাছ চাষ পদ্ধতি ,
1. জলের পরিমাপ -
12 কিউবিক মিটার জল =12×1000=
12000 লিটার জল।
যদি
চারকোনা হয় তবে 12000 লিটার জলর ট্যাংক হবে 4মিটারদৈর্ঘ× 3 মিটার প্রস্থ ×1 মিটার গভীরতা =4×3×1 মিটার এ হিসেব করলে 12
কিউবিক মিটার জল আছে,1 কিউবিক মিটার জল =1000 লিটার।
2.একটি গোলাকৃতি ট্যাংক নির্মাণ পদ্ধতি
বটম ক্লিন কি পদ্ধতি তা জানা আগে জরুরী যে বটম ক্লিনিং কিভাবে কাজ করে – বটম
বলতে মাঝ খানে মানে বা ট্যাংক এর মাঝ খানে
এবং ক্লিনিং মানে পরিষ্কার অর্থাৎ ট্যাংক এর মাঝ খানটা পরিষ্কার
রাখতে হবে সেখানে ময়লা বলতে মাছের মল এবং উচ্ছিষ্ট খাবার যেগুলো তলে পরে থাকবে
সেগুলি কে প্রতিদিন কিছু জল ছেড়ে দিয়ে তার সাথে ময়লা গুলোকে বের করে দিতে হবে
ট্যাংক এর মাঝ খানে পাইপ রেখে বাইরে একটি চাবি বা জলের উচ্চতা অনুযায়ী সাইফুন পাইপ
লাগিয়ে ,
প্রথমে নির্ধারন করতে হবে ট্যাংক টি গোল নাকি চার কণা বিশিষ্ট হবে , তবে গোল হলে ভাল হয় মাছকে বাধা প্রাপ্ত হতে হয় না সে আপন বেগে ঘুরতে থাকে ,ট্যাংক এর গোলাকৃতি এর ব্যাস যা হবে তার 4 ভাগের এক
ভাগ মাঝে ফানেল এর মত নির্মাণ করতে হবে , ধরা যাক ট্যাংক এর ব্যাস 4
মিটার অর্থাৎ সোজাসুজি একপ্রান্ত থেকে আর আক প্রান্ত 4 মিটার তাহলে ভেতরে1 মিটার
জায়গা ফানেল এর মত ঢাল রাখতে হবে এবং মাঝে একটি জল বের করার পাইপ এর মুখ রেখে
বাইরে বের করে দিতে হবে ।
এবার
কথা হল ঢাল কতটা রাখতে হবে –ট্যাংক এর দেয়াল থেকে ট্যাংক এর মাঝে পাইপ এর মুখ পর্যন্ত
ঢাল হবে 1 ফুট বা 30 সেন্টিমিটার , অর্থাৎ ট্যাংক এর সাইড থেক ঐ এক মিটার ফানেল বা
বলতে পারেন বড় মাপের করাই এর মত পর্যন্ত 6 ইঞ্চি ঢাল এবং সেখান থেকে মাঝে পাইপ
পর্যন্ত 6 ইঞ্চি ঢাল রাখতে হবে এবং পাইপ এর মুখে একটি পাইপ মাঝের আকার অনুযায়ী
মুখে একটি নেট লাগিয়ে দিবেন।দেয়াল
রাখবেন 4 ফুট 2.5-3 ফুট জল রাখবেন এবং বাকিটা রাখবেন যেন মাছ লাফিয়ে বের হয়ে না
যায় , অবশ্যই চেষ্টা করবেন ওভার ফ্লো পাইপ রাখার যতটা জল রাখবেন ততো টা আর যদি না
রাখেন তাহলে ভেতরের জল যে পাইপ দিয়ে বাইরে জল বের করবেন সেই খানে একটি এলবো লাগিয়ে
3 ফুট উচ্চতার পাইপ লাগিয়ে দিবেন তাহলে ট্যাংকএর ভেতরে 3 ফুট এর বেশি জল হলেই ঐ
পাইপএর মুখ দিয়ে বাইরে বের হয়ে যাবে , এবং অবশ্যই পাইপ গুলো 3 ইঞ্চি চওড়া রাখবেন
তাহলে পরে জল যখন বের হবে একটি গতি নিয়ে বের হবে এবং ময়লা গুলো বের হয়ে যাবে , যদি
ট্যাংক এ জলের পরিমাণ 10000 লিটার হয় তবে প্রতিদিন বা এক দিন পর 100 লিটার জল বের
করে দিলে সব ময়লা বের হয়ে যাবে গ্যাস জমতে পারবেন না তলে ।3.ট্যাংক জীবাণু মুক্তকরণ -
ট্যাংক নির্মাণ হয়ে গেলে কয়েকদিন জল দিয়ে ধুয়ে ধুয়ে শক্ত করে নিতে হয় , এবং
প্রথমদিন পুরো জল দিয়ে ট্যাংক ভরবেন না তাহলে ট্যাংক নরম অবস্থায় একবারে চাপ পড়েল
তলা সরে গিয়ে ফেটে যাবে তাই একদিন একদিন করে 1 ফুট জল বাড়িয়ে 3 দিনে ট্যাংক ভর্তি
করবেন ।
ট্যাংক জীবাণু
মুক্ত দুটি ভাবে করা যায় যদি 20-25 দিন দেরি করতে পারেন তাহলে কাচা গোবর এবং
কলার পাতা দিয়ে ট্যাংক এ জল ভরিয়ে রাখবেন এবং জল বের করে দেয়ার পর পটাসিয়াম
পারমেঙ্গনেট দিয়ে 3 দিন ভিজিয়ে রেখে ভাল করে ধুয়ে দিবেন ,কাচা গোবরে , কাচা গোবরে ph এসেডিক বেশি থাকে তাই ট্যাংকএর এলকলাইন এর
সাথে বিক্রিয়া করে জলের ph লেবেল স্বাভাবিক রাখে ,
আর যদি মনে করেন তারাতারি ট্যাংক রেডি করবেন তাহলে 10 ppm হারে বা 1000 লিটার জলে 10 গ্রাম
পটাসিয়াম দিয়ে ভাল করে জলে ঘুলীয়ে 3 দিন রেখে জল বের করে দিবেন , এর পর একদিন 100 ppm হারে দিয়ে একদিন লবণ জলে বিজয়ে রেখে জল বের করে দিতে পারেন ,
আবার যদি কর পুরোনো ট্যাংক থাকে তাহলে 10 ppm হারে বা 1000 লিটার জলে 10 গ্রাম মিথিলীন দিয়ে একদিন ভিজিয়ে রেখে শোধন
করে নিবেন তাহলে ট্যাংক এর ভেতরে থাকা যেকোন জীবাণু নষ্ট হয়ে যাবে , এই সব হয়ে
গেলে মাছ ছাড়ার জন্যে জল তৈরির জন্যে ট্যাংক রেডি হয়ে গেল
4.ট্যাংক এর জল প্রস্তুতি
মাছ ছাড়ার আগে জল রেডি করে নিয়ে তার পর মাছ ছাড়তে হবে – ট্যাংক জল দেবার পর পর তাতে প্রতি 1000 লিটার জলে 1 কেজি করে লবণ দিতে হবে এবং যত হাজার লিটার আপনার জল ধরণ করবে ততো কেজি লবণ দিয়ে জলে এরিয়েশন দিবেন অক্সিজেন পাম্প দিয়ে 2 দিন এবং তার পর জলের ph মেপে দেখবেন যদি 7 এর নিচে থাকে তবে 1000 লিটার জলে 100 গ্রাম হারে চুন সম্পূর্ণ ট্যাংক এ ছড়িয়ে দিতে হবে আর যদি 7 থাকে তাহলে 1000 লিটার জলে 50 গ্রাম করে চুন দিয়ে একদিন এরিয়েশন দিয়ে ph চেক করে মাছ ছাড়বেন তবে জল এর পরিমাণ ধীরে ধীরে বারবেন এবং বাকি সব কিছু ধীরে দিবেন তাহলে ম্যাচের পনার জন্যে ভাল ,
এবার আর একটি কথা হল যে আপনার ট্যাংক এর অবস্থান কি আছে অর্থাৎ উপরে শেড আছে
বা নেই সূর্যলোক কি পরে ট্যাংক তাহলে জলে ফটো সিন্থেসিস হবে তার জন্যে আপনার সেই
জলে ফাইটো প্ল্যাঙ্কটন ও জু প্ল্যাঙ্কটন
জলে তৈরি করতে পারেন এর জন্যে 1000 লিটার জলের জন্যে 100 গ্রাম সরষে খৈল এবং 100
গ্রাম গোবর একটি কাপড় দিয়ে বেধে বা ব্যাগ এ ভরে ট্যাংক এ ঝুলিয়ে রাখতে পারেন
সেগুলি থেকে ধীরে বের হতে থাকবে এবং জলের রঙ সবুজ হতে থাকবে সেই সাথে ইউরিয়া 1000
লিটার জলে 10 গ্রাম এবং সিঙ্গল সুপার ফসফেট জলে ভাল করে গুলিয়ে নিয়ে সমস্ত ট্যাংক
এ দিতে পারেন তাহলে ফাইটো প্ল্যাঙ্কটন তৈরি হবে এবং সেটি কে 7-15 দিন অন্তর দিতে
পারেন সেটি অবশ্যই রোদ উঠলে পরে সকাল 10 টা থেক 11 টার মধ্যে , মোট কথা আমদের
চেষ্টা করতে হবে যদি সম্ভব হয় মাছকে পুকরের পরিবেশ তৈরি করে দেয়া তাহলে মাছ এর
বাড়তে সুবিধে হবে ,এই সব হয়ে গেলে আপনার
ট্যাংক রেডি মাছ ছাড়ার জন্যে। ,
5. মাছের পোনা মজুত করণ –
এবার প্রশ্ন হল আপনি কতগুলি মাছ ছাড়বেন এবং এই বার প্রথম নাকি , বটম ক্লিন এ
সব মাছ এ ছাড়া যাবে কিন্তু যাদের উৎপাদন সাইজ বেশি হবে তার সংখ্যা কম হবে ,--
- মাগুর মাছ প্রতি 4-5 লিটার জলে 1 টা অর্থাৎ 1000 লিটার জলে
250 টা
- শিঙ্গি প্রতি 3-4 লিটার
জলে 1 টা অর্থাৎ 1000 লিটার জলে 300 টা
- কই প্রতি 3-4 লিটার
জলে 1 টা অর্থাৎ 1000 লিটার জলে 300 টা
- তেলপিয়া প্রতি 4-5 লিটার
জলে 1 টা অর্থাৎ 1000 লিটার জলে 250 টা
- পাবদা প্রতি 2-3 লিটার
জলে 1 টা অর্থাৎ 1000 লিটার জলে 500 টা
আমরা আগেই বলেছি যে অনেকের কাছে অনেক তথ্য গ্রহণ করে থাকতে পারেন এবং মনে হতে
পারে একসাথে অনেক গুলি মাছ ছাড়তে পারবেন কিন্তু প্রশ্ন হল আপনি কতটা পরিষেবা দিতে
পারবেন তার উপরেই কিন্তু সংখ্যা নির্ধারন করতে হবে , যদি মনে হয় আপনি অক্সিজেন
দিতে পারবেন না তাহলে প্রতি 10 লিটার জলে 1 টা মাছ ছাড়তে পারবেন , বায়ওফ্লক এ যেমন
প্রতি দু লিটার জলে এ একটি মাছ ছাড়া জাবে কিন্তু তার জন্যে তার পরিষেবা ভিন্ন যত
ভাল যত্ন নিতে পারবেন ততো সংখ্যা বাড়াতে পারবেন কিন্তু বটম ক্লিন এ তা সম্ভব হয় না
কারণ তার পরিষেবা ব্যবস্থা একটু কম থাকে তাই তার স্টক ডেন্সিটি কম হয় , সব সময়
বিজ্ঞান এবং যুক্তি কে পাশাপাশি রেখে কাজ করতে হবে কেন করব কিভাবে করব কতটা
পরিষেবা দিতে পারবেন ।
যারা প্রথম করবেন তারা চেষ্টা করবেন এর অর্ধেক পরিমাণ মাছ স্টক করে চাষ করার ,
কারণ ধারণা না থাকলে বিপদে পড়ার চান্স বেশি থাকে তাই আগে কম করে চাষ করে অভিজ্ঞতা
সঞ্চয় করে পরে বেশি সংখ্যাতে চাষ করা উচিত তাহলে সফলতার মুখ দেখতে পারবেন ।
6. মাছের খাদ্য ব্যবস্থাপনা –
আগেই ফাইটো এবং জু প্ল্যাঙ্কটন এর কথা সে ভাবে যদি সম্ভব হয় করবেন, এবার হল যে খাদ্য দিবেন সেটি ফ্লোটিং ফিড দিবেন অর্থাৎ বা ভাসমান ফিড দিবেন ।এবার কথা হল কি সাইজ এ কি ফিড দিব তা
আমরা 1 কেজি মাছ কতগুলো পোনা হবে সেই হিসেব এ সাইজ নির্ণয় করব , সাইজ অনুসারে যদি
খাদ্য নির্ণয় না হয় তাহলে খাদ্য অপচয় হয় এবং জলকে দূষিত করে , এবং খাদ্য একবারে না
দিয়ে কম করে দিয়ে দেখতে হয় যেন 15 মিনিট তা শেষ করে তাহলে সেটাই তার খাওয়ার দেওয়ার
পরিমাণ বলে গণ্য হবে এবং 7 দিন পর পর পরিবর্তন করতে হবে ।
- 1 কেজি তে 4000 পোনা এর অধিক
সংখ্যা হলে ডাস্ট খাবার দিবেন ।
- 1 কেজিতে 2000-3000 হলে 0.4-0.5 দিবেন ।
- 1 কেজিতে 1000-1500 হলে 0.6-0.8 দিবেন ।
- 1 কেজিতে 500-900 হলে 1 mm-2
mm দিবেন ।
- 1 কেজিতে 200-500 হলে 3 mm-4
mm দিবেন ।
- 1 কেজিতে 50-200 হলে 6 mm
সাইজ এর ফিড দিবেন ।
- 1
কেজিতে 50 হলে 8 mm দিবেন ।
সেই সাথে যদি আপনার মাছের প্রজাতি ঘাস খেতে পছন্দ করে থাকে তাহলে একদিন একদিন
কম করে কুটি পানা বা এজলা দিয়ে অভ্যেস বাড়িয়ে পরে তার পরিমাণ বাড়লে আপনার খাদ্যের
খরচ অনেকটা কম লাগবে ।
7.জলের আদর্শ গুণগত মান
প্যারামিটার
সর্বোচ্চ
উর্দ্ধসীমা
আদর্শ সীমা
জলে দ্রবীভূত
অক্সিজেন
7 ppm
6-8 ppm
PH(potential of Hydrogen)
6.5-8.5
-7.5
TAN(Total ammonia nitrogen)
0.0-3.0 ppm
1.5 ppm
Nitrogen
15
0.40
তাপমাত্রা
28ডিগ্রিC
22-32ডিগ্রি C
8.জলের গুণগত
মান এর সমস্যা ও তার প্রতিকার
- PH 6.5 এর নিচে হলে ডলমাইট চুন ব্যাবহার করবেন সর্বোচ্চ 5-10 মিলিগ্রাম প্রতি
লিটার জলের জন্যে ,বা 1000 লিটার জলে 50-100 গ্রাম
- PH এর মান
8.5 এর উপরে হলে জৈব এসিড আপেল সীড ভিনিগার 50 মিলি লিটার হারে প্রতি 1000 লিটার
জলে আথবা তেতুল 10 মিলিগ্রাম প্রতি 1 লিটার জলে ।
- এমনিয়া
TAN 3 ppm এর উপরে
থাকলে জল বের করে দিতে হবে এবং Heterotrophic ব্যাকটিরিয়া
জলে ব্যাবহার করবেন এবং প্রাকৃতিক জিওলাইট 1-10 mg প্রতি
লিটার জলে দিতে হবে ব্যালান্স এ রাখার জন্যে , আথবা চিটে গুড় ব্যাবহার করতে পারেন
1 শতাংশ হারে 3 PPM এর বেশি থাকলে ।
- Nitrite 5 ppm এর বেশী হলে প্রতি লিটার জলে 1 মিলিগ্রাম এ 5-10
মিলিগ্রাম হারে লবণ ব্যাবহার করা হয় কমানোর জন্যে ,অর্থাৎ 5 মিলিগ্রাম নাইট্রাইট
হলে 25-50 মিলিগ্রাম লবণ ব্যাবহার করতে হবে ।
- Nitrate 80 ppm এর বেশি হলে প্রতিদিন 25 লিটার জল বের করে
দিতে হবে (বটম ক্লিন এর জন্যে Nitrate টেস্ট না করলেও চলবে
কারণ এমনই জল বের করতেই হবে)।
- TDS(Total dissolved Solids বা সমস্ত
দ্রবীভূত শক্ত প্রদার্থ) 600 এর নিচে থাকলে 1000 লিটারে এ 1 কেজি কাচা লবণ মিশাতে
হবে ,(তবে বটম ক্লিন এর ক্ষেত্রে আবশ্যিক নয় এই পরিমাণ)।
9.এমনিয়া সমস্যা -
বটম ক্লিন পদ্ধতিতে মাছ চাষ করলে শুধু নিচের জল ছেড়ে দিলেই
এমনিয়া চলে যাবে তাহলে ভুল হয়ে যাবে মাছ তার মল এবং অবশিষ্ট যে খাদ্য বেচে গিয়ে
নিচে পরে সেখান থেকে এমনিয়া তৈরি হয় যেটি জল ছেড়ে দিলে মল বেরিয়ে গেলে সেই সমস্যা
হয়তো দূর হবে কিন্তু আর একটি ভাবে ট্যাংক এ
এমনিয়া তৈরি হয় সেটি হল মাছ তার ফুলকা দিয়ে এমনিয়া পাস করে যা জলে দ্রবীভূত হয়ে জল কে দূষিত করে এবং মাছের
বিভিন্ন রোগ তৈরি করে বৃদ্ধিতে বাধা দেয় এবং মাত্রা বেড়ে গেলে মাছ মারাও যায় ,
এমনিয়া থেকে আবার নাইট্রাইট এ রূপান্তরিত হয় সেটি বেড়ে গেলেও মাছের জন্যে খুবই
ক্ষতি কারক হিসেবে প্রমাণিত হয় , তাই এগুলোকে একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় বা ভলিউম এ
রাখতে হবে –
এমনিয়া বা TAN ( Total ammonia Nitrogen ) মাপার
জন্যে টেষ্টকিট কিনতে পাওয়া যায় যা দিয়ে প্রতিদিন দুপুর বেলা 1 টা থেক 3 টার মধ্যে
মাপা উচিত, এবার কথা হল পরিমাণ কত থাকা উচিত –যদি এমনিয়া 0.1 mg থাকে তাহলে ঠিক এর বেশি থাকলে জল বের করে দিতে হবে পরিমাণ মত 100 বা 50
লিটার , তবে অনেকদিন একই লেবেল TAN 0.25 এ থাকলে পরে মাছের
ইমিউনিটি কমে গিয়ে মাছের বিভিন্ন রোগ হতে পারে ,
তাই এমনিয়া 1.5 mg এর মধ্যে থাকলে ভাল হয় আবার যদি
এমনিয়া বা ট্যান 3mg এ থাকে বেশিক্ষণ তাহলে মাছের রোগ তো
হবেই সেই সাথে মাছ মারাও যেতে পারে ,সেই সাথে Nitrite এর
লেভেল শূন্য থাকলে ভাল তবে 4 এর অধিক হতে দেয়া যাবেন না , আগেই বলেছি কখন টেস্ট
করা উচিত এবং সেটি প্রতিদিন করা উচিত কারণ সেই সময় জলের উষ্ণতা বেড়ে যাওয়ার সাথে
সাথে ph বেড়ে যায় এবং এমনিয়া বেরে যায় তাই তখন জল কিছু
পরিমাণ ছেড়ে দিয়ে নতুন জল দেওয়া উচিত , এবং তার পরেও যদি থাকে তা কমানোর জন্যে
অন্য পদ্ধতি গ্রহণ করা উচিত ।
10. এমনিয়া এবং নাইট্রাইট কন্ট্রোল -
এমনিয়া যদি জল ছেড়ে দেবার পরেও লেভেল এ না থাকে তাহলে তার জন্যে আপনার
হেটেরোট্রফিক ব্যাকট্রয়েরিয়া জলে ব্যাবহার করতে পারেন এবং এমনিয়া রিমুভার হিসেবএ
বাজারে বিভিন্ন কেমিক্যাল পাওয়া যায় তা দিয়েও কন্ট্রোল করতে পারেন , সেই দিক দিয়ে
আপনারা প্রাকৃতিক জিওলাইট ব্যাবহার করতে পারেন , প্রতি লিটার জলের জন্যে 1-10gm
জিওলাইট একটি ব্যাগ এ ভরে ট্যাংক জলে ঝুলিয়ে রাখতে পারেন তবে সেটি বেশি
দিনের জন্যে নয় 15 দিন পর সেটিকে ভাল করে লবণ দিয়ে ধুয়ে নিয়ে রোদে শুকিয়ে আবার
ব্যাবহার করতে পারেন ,এবার নাইট্রাইট কন্ট্রোল এর জন্যে যদি 1 mg প্রতি লিটার জলে হয় তাহলে তার জন্যে প্রতি লিটার জলে 5 গুণ হারে লবণ
প্রয়োগ করতে হবে
আরো দেখুন
11.মাছের রোগ ও প্রতিকার
অনেকই আছেন যারা আমাদেরকে প্রতিনিয়ত বলেন যে তাদের মাছে বিভিন্ন রোগ হয়ছে কি
করব এখন , মাছের রোগ হয়ে গেলে ঠিক হয় ঠিকই কিন্তু কিছুটা হলেও লসের শিকার হতে হয়
কারণ ঠিক হতে সময় লাগে এবং সেই সাথে ইনফেক্টেড হওয়ার কারণে মাছের বৃদ্ধিতে সমস্যা
হয় , তাই আমদের উচিত রোগটি যেন না আসে তার জন্যে আগে থেকেই কচু সতর্কতা মূলক কাজ
করে নেওয়া ।
- ট্যাংক এ যে জল দিছেন তার মধ্যে আয়রন আছে কিনা তা জেনে নেওয়া কারণ আয়রন
বেশি থাকলে পরেও মাছের জন্যে সেটি ক্ষতিকারক হতে পারে , যদি 10 ppm এর বেশি আয়রন থাকে তাহলে তা অন্য ট্যাংক
এ কিছুদিন জল ভরে রাখতে হবে এবং কিছু কুচুড়ি পানা দিয়ে রাখতে হবে তাহলে আয়রন গুলো
নিচে বসে যাবে এবং উপরে কিছু থাকলে তা কুচুড়ি পানা শোষণ করে নিবে , এটির জন্যে
আপনাকে অধিক ট্যাংক থাকতে হবে যদি না পারেন তাহলে পলিথিন দিয়ে জল স্টক করার
ব্যবস্থা করতে পারেন বা যদি বাড়িতে টাইম কলের জল থাকে সেটিও রাখতে পারেন আর তা
সম্ভব না হলে ট্যাংক এ যেখানে জল ফেলবেন সেখানে জলটি যেন এসে গিয়ে একটি মোটা পন্স
এ গিয়ে পরে সেখান থেকে গিয়ে ট্যাংক এ পড়বে তাতে অনেক টা আয়রন মুক্ত জল পাবেন ।
- পোনা ক্রয় করার পড়বে আপনাকে একটি ভাল বিশ্বস্ত হ্যাচেরী থেকে পোনা ক্রয় করা
উচিত কারণ তারা তাদের নাম নষ্ট করতে চাইবেনা তাই তারা ভাল মনের পোনা বিক্রয় করবে
হয়তো একটু দাম বেশি পড়তে পারে তবু লাভ এ থাকবেন কারণ তারা ভাল মনের পণ সরবরাহ করে
থাকে তাই তাদের মাছের বৃদ্ধিও দ্রুত হয় , কারণ মাছ আনার সময় যদি ক্ষত
বিক্ষতমাছ আনা হয় তাহলে সেখান থেক রোগের সৃষ্টি হয় ।
- পোনা ক্রয় করে আনার সময় যদি শিং মাগুর হয় তাহলে অক্সিটেটরাসাইক্লিন পাউডার
30 ppm হারে জলে গুলিয়ে মাছ আহরণ করবেন , এবং কই
মাছ বা আস যুক্ত মাছ হলে 0.1 শতাংশ হারে জলে লবণ গুলিয়ে আহরণ করবেন সেই সাথে কই
মাছ চেষ্টা করবেন ছোট এবং সব এক সাইজ এর ক্রয় করার না হলে বড় গুলো ছোটদের লেজ কেটে
ক্ষয়ে নেয় , এই ভাবে যদি মাছ আহরণ করতে পারেন তাহলে মাছের মধ্যে স্ট্রেশ কম হবে
এবং পোনা সুস্থ থাকবে ।
- পোনা আনার সঙ্গে সঙ্গেই ট্যাংক এর জলে ছাড়বেন না কারণ ট্যাংক এর জল আর আপনি
যে প্যাকেট বা পাত্রে মাছ এনেছেন তার জলের তাপ মাত্রা ভিন্ন থাকে ফলে সরাসরি মাছ ছেড়ে দিলে অনেক মাছ জলের তলে পরে গিয়ে র
উঠতে পারে না , তাই আগেই না ছেড়ে সেই প্যাকেট বা পাত্র টিকে ঐ ট্যাংক এর জলে
ভাসিয়ে রাখবেন কিছুক্ষণ ।
- জলের তাপমাত্রা সমান হয়ে গেলই মাছ
ছাড়া যাবেনা ,আগে পোনা গুলোকে জীবাণু মুক্ত করে নিবেন পটাসিয়াম পারমেঙ্গনেট বা লবণ
দিয়ে সাথে হলুদ ও দিতে পারেন য এন্টিবায়টিক হিসেবএ কাজ করবে একটি পাত্রে ,পটাশিয়াম
দিয়ে প্রতি লিটার জলে ছোট হলে 5 ppm
হারে এবং বড় হলে 10 ppm হারে গুলিয়ে নিয়ে সেখানে পোনা গুলি স্নান করিয়ে নিবেন এর পর
সেগুলিকে ভাল জলে ধুয়ে নিয়ে যদি চান লবণ দিয়ে শোধন করবেন তাহলে আবার একটি পাত্রে 3
শতাংশ হারে লবণ জলে গুলিয়ে নিয়ে সাথে কিছু পরিমাণ হলুদ গুড়ো দিয়ে নিয়ে শোধন করে
ভাল জলে ধুয়ে ট্যাংক এ ছাড়তে পারেন তবে শোধনের জন্যে ব্যবরিত জল ফেলে দিবেন সেগুলি
ট্যাংক এ দিবেন না তাহলে রোগ সেই ট্যাংক এ চলেই যাবে।
- ট্যাংক এ ছাড়ার পূর্বে দেখবেন যদি কিছু মাছ দুর্বল থাকছে
তাহলে সেই মচগুলোকে ট্যাংক এ না ছেড়ে একটি আলাদা পাত্রে জল দিয়ে রেখে ট্রিটমেন্ট
করে একদিন পর ছাড়লে ভাল না হলে ট্যাংক এ গিয়ে মারা যেতে পারে , বিশেষ করে কই মাছ
হলে দুর্বল থকলে তা দাড়িয়ে থাকে এবং অন্য মাছগুলো তাদের লেজ কেটে নেয় এবং মারা যায়
।
- মাছের পোনা আনার পর যে ট্যাংক এ মাছ ছাড়বেন সেই ট্যাংক এ কম জল রেখে সকরিনা WS প্রতি 1000 লিটার জলে 1 ml দিয়ে তাতে রাখতে এবং একদিন পর পর জল বদলে দিয়ে আবার সেই সকরিনা WS দিয়ে এই ভাবে 3 দিন রাখতে পারেন এবং এর পর সব জল বের করে দিয়ে নতুন জল জল
দিয়ে মাছ ছেড়ে জল রেডী করতে পারেন আথবা একটি পলিথিন দিয়ে ছোট ট্যাংক বানিয়ে তাতে
অন্তত 6 ঘণ্টা রেখেও পরে ট্যাংক এ ছেড়ে
দিলে পোনা থেকে আর রোগ আসার চান্স থাকবে না বা মাছ ছাড়ার পর 1 দিন 2 দিন পর অনেকের
সোনা যায় যে প্রচুর মাছ মারা যাচ্ছে কি করব সেই ভয় আর থাকবে না ।
- যদি মাছ দুর্বল থাকে বা অসুস্থ থাকে তাহলে তাদের এনটিবিয়টিক ঔষধ
ট্রাইমেথোপ্রীম এবং সলফমেথকসেজন গ্রুপ এর ব্যাকট্রিম নামে বাজারে পাওয়া যায় প্রতি
1 কেজি মাছের জন্যে 20 mg ঔষধ
দিতে পারেন , প্যাকেট mg লিখা থাকে , ধরা যাক 200 mg লিখা আছে তাহলে এবং 10 কেজি মাছ আছে তাহলে 1 টি ট্যাবলেট জলে গুলিয়ে তাতে
খাওয়ার ভিজিয়ে একটু শুকিয়ে গেলে খেতে দিতে পারেন অন্তত দু বেলা সাথে ভিটামিন C বা মাল্টি ভিটামিন দিতে পারেন , এই ঔষধ মাছের যেকোন বয়সে রোগ হলেই একই
ভাবে দিতে পারেন ।
- অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, ট্যাংক ভালো অবস্থায় থাকা সত্ত্বেও মাছ মারা যাচ্ছে। এই ধরনের ক্ষেত্রে, পূর্বে প্রস্তাবিত হিসাবে 3 দিনের জন্য Sacrina WS ব্যবহার চালিয়ে যান। উপরন্তু, ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করুন এবং মাছের খাবারের সাথে মিশ্রিত করে ওষুধটি পরিচালনা করুন। এই পদ্ধতিটি ট্যাঙ্কের মধ্যে উদ্ভূত যে কোনও রোগকে কার্যকরভাবে মোকাবেলা করবে।
12. ব্যাংক ঋণ এর সহযোগিতা –
NABARD মাছ চাষের জন্য ঋণ অফার করে যদি আপনি যোগাযোগ করতে এবং ব্যাঙ্কে আপনার চাষ প্রকল্প জমা দিতে সক্ষম হন। উপরন্তু, RSETI ব্যাঙ্কগুলি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ঋণ প্রদান করে এবং PMMSY-এর অধীনে, আপনার কৃষি প্রকল্প তাদের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করলে 40-60% ভর্তুকিযুক্ত ঋণ অ্যাক্সেসযোগ্য। মনে হচ্ছে এটাই একমাত্র উপায়।
13. FAQ(প্রায়ই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নোত্তর )
1.জলে pH মাত্রা কমে গেলে কি ব্যবহার করা উচিত ?
যদি pH 6.5 এর নিচে নেমে যায়, ডলোমাইট চুন প্রয়োগ করা উচিত, প্রতি লিটার
1. জলের পরিমাপ -
12 কিউবিক মিটার জল =12×1000= 12000 লিটার জল।
যদি চারকোনা হয় তবে 12000 লিটার জলর ট্যাংক হবে 4মিটারদৈর্ঘ× 3 মিটার প্রস্থ ×1 মিটার গভীরতা =4×3×1 মিটার এ হিসেব করলে 12 কিউবিক মিটার জল আছে,1 কিউবিক মিটার জল =1000 লিটার।
2.একটি গোলাকৃতি ট্যাংক নির্মাণ পদ্ধতি
প্রথমে নির্ধারন করতে হবে ট্যাংক টি গোল নাকি চার কণা বিশিষ্ট হবে , তবে গোল হলে ভাল হয় মাছকে বাধা প্রাপ্ত হতে হয় না সে আপন বেগে ঘুরতে থাকে ,ট্যাংক এর গোলাকৃতি এর ব্যাস যা হবে তার 4 ভাগের এক ভাগ মাঝে ফানেল এর মত নির্মাণ করতে হবে , ধরা যাক ট্যাংক এর ব্যাস 4 মিটার অর্থাৎ সোজাসুজি একপ্রান্ত থেকে আর আক প্রান্ত 4 মিটার তাহলে ভেতরে1 মিটার জায়গা ফানেল এর মত ঢাল রাখতে হবে এবং মাঝে একটি জল বের করার পাইপ এর মুখ রেখে বাইরে বের করে দিতে হবে ।
এবার কথা হল ঢাল কতটা রাখতে হবে –ট্যাংক এর দেয়াল থেকে ট্যাংক এর মাঝে পাইপ এর মুখ পর্যন্ত ঢাল হবে 1 ফুট বা 30 সেন্টিমিটার , অর্থাৎ ট্যাংক এর সাইড থেক ঐ এক মিটার ফানেল বা বলতে পারেন বড় মাপের করাই এর মত পর্যন্ত 6 ইঞ্চি ঢাল এবং সেখান থেকে মাঝে পাইপ পর্যন্ত 6 ইঞ্চি ঢাল রাখতে হবে এবং পাইপ এর মুখে একটি পাইপ মাঝের আকার অনুযায়ী মুখে একটি নেট লাগিয়ে দিবেন।দেয়াল রাখবেন 4 ফুট 2.5-3 ফুট জল রাখবেন এবং বাকিটা রাখবেন যেন মাছ লাফিয়ে বের হয়ে না যায় , অবশ্যই চেষ্টা করবেন ওভার ফ্লো পাইপ রাখার যতটা জল রাখবেন ততো টা আর যদি না রাখেন তাহলে ভেতরের জল যে পাইপ দিয়ে বাইরে জল বের করবেন সেই খানে একটি এলবো লাগিয়ে 3 ফুট উচ্চতার পাইপ লাগিয়ে দিবেন তাহলে ট্যাংকএর ভেতরে 3 ফুট এর বেশি জল হলেই ঐ পাইপএর মুখ দিয়ে বাইরে বের হয়ে যাবে , এবং অবশ্যই পাইপ গুলো 3 ইঞ্চি চওড়া রাখবেন তাহলে পরে জল যখন বের হবে একটি গতি নিয়ে বের হবে এবং ময়লা গুলো বের হয়ে যাবে , যদি ট্যাংক এ জলের পরিমাণ 10000 লিটার হয় তবে প্রতিদিন বা এক দিন পর 100 লিটার জল বের করে দিলে সব ময়লা বের হয়ে যাবে গ্যাস জমতে পারবেন না তলে ।
3.ট্যাংক জীবাণু মুক্তকরণ -
ট্যাংক নির্মাণ হয়ে গেলে কয়েকদিন জল দিয়ে ধুয়ে ধুয়ে শক্ত করে নিতে হয় , এবং প্রথমদিন পুরো জল দিয়ে ট্যাংক ভরবেন না তাহলে ট্যাংক নরম অবস্থায় একবারে চাপ পড়েল তলা সরে গিয়ে ফেটে যাবে তাই একদিন একদিন করে 1 ফুট জল বাড়িয়ে 3 দিনে ট্যাংক ভর্তি করবেন ।
ট্যাংক জীবাণু মুক্ত দুটি ভাবে করা যায় যদি 20-25 দিন দেরি করতে পারেন তাহলে কাচা গোবর এবং কলার পাতা দিয়ে ট্যাংক এ জল ভরিয়ে রাখবেন এবং জল বের করে দেয়ার পর পটাসিয়াম পারমেঙ্গনেট দিয়ে 3 দিন ভিজিয়ে রেখে ভাল করে ধুয়ে দিবেন ,কাচা গোবরে , কাচা গোবরে ph এসেডিক বেশি থাকে তাই ট্যাংকএর এলকলাইন এর সাথে বিক্রিয়া করে জলের ph লেবেল স্বাভাবিক রাখে ,
আর যদি মনে করেন তারাতারি ট্যাংক রেডি করবেন তাহলে 10 ppm হারে বা 1000 লিটার জলে 10 গ্রাম
পটাসিয়াম দিয়ে ভাল করে জলে ঘুলীয়ে 3 দিন রেখে জল বের করে দিবেন , এর পর একদিন 100 ppm হারে দিয়ে একদিন লবণ জলে বিজয়ে রেখে জল বের করে দিতে পারেন ,
আবার যদি কর পুরোনো ট্যাংক থাকে তাহলে 10 ppm হারে বা 1000 লিটার জলে 10 গ্রাম মিথিলীন দিয়ে একদিন ভিজিয়ে রেখে শোধন করে নিবেন তাহলে ট্যাংক এর ভেতরে থাকা যেকোন জীবাণু নষ্ট হয়ে যাবে , এই সব হয়ে গেলে মাছ ছাড়ার জন্যে জল তৈরির জন্যে ট্যাংক রেডি হয়ে গেল
4.ট্যাংক এর জল প্রস্তুতি
এবার আর একটি কথা হল যে আপনার ট্যাংক এর অবস্থান কি আছে অর্থাৎ উপরে শেড আছে বা নেই সূর্যলোক কি পরে ট্যাংক তাহলে জলে ফটো সিন্থেসিস হবে তার জন্যে আপনার সেই জলে ফাইটো প্ল্যাঙ্কটন ও জু প্ল্যাঙ্কটন জলে তৈরি করতে পারেন এর জন্যে 1000 লিটার জলের জন্যে 100 গ্রাম সরষে খৈল এবং 100 গ্রাম গোবর একটি কাপড় দিয়ে বেধে বা ব্যাগ এ ভরে ট্যাংক এ ঝুলিয়ে রাখতে পারেন সেগুলি থেকে ধীরে বের হতে থাকবে এবং জলের রঙ সবুজ হতে থাকবে সেই সাথে ইউরিয়া 1000 লিটার জলে 10 গ্রাম এবং সিঙ্গল সুপার ফসফেট জলে ভাল করে গুলিয়ে নিয়ে সমস্ত ট্যাংক এ দিতে পারেন তাহলে ফাইটো প্ল্যাঙ্কটন তৈরি হবে এবং সেটি কে 7-15 দিন অন্তর দিতে পারেন সেটি অবশ্যই রোদ উঠলে পরে সকাল 10 টা থেক 11 টার মধ্যে , মোট কথা আমদের চেষ্টা করতে হবে যদি সম্ভব হয় মাছকে পুকরের পরিবেশ তৈরি করে দেয়া তাহলে মাছ এর বাড়তে সুবিধে হবে ,এই সব হয়ে গেলে আপনার ট্যাংক রেডি মাছ ছাড়ার জন্যে। ,
5. মাছের পোনা মজুত করণ –
এবার প্রশ্ন হল আপনি কতগুলি মাছ ছাড়বেন এবং এই বার প্রথম নাকি , বটম ক্লিন এ
সব মাছ এ ছাড়া যাবে কিন্তু যাদের উৎপাদন সাইজ বেশি হবে তার সংখ্যা কম হবে ,--
- মাগুর মাছ প্রতি 4-5 লিটার জলে 1 টা অর্থাৎ 1000 লিটার জলে 250 টা
- শিঙ্গি প্রতি 3-4 লিটার
জলে 1 টা অর্থাৎ 1000 লিটার জলে 300 টা
- কই প্রতি 3-4 লিটার
জলে 1 টা অর্থাৎ 1000 লিটার জলে 300 টা
- তেলপিয়া প্রতি 4-5 লিটার
জলে 1 টা অর্থাৎ 1000 লিটার জলে 250 টা
- পাবদা প্রতি 2-3 লিটার
জলে 1 টা অর্থাৎ 1000 লিটার জলে 500 টা
আমরা আগেই বলেছি যে অনেকের কাছে অনেক তথ্য গ্রহণ করে থাকতে পারেন এবং মনে হতে
পারে একসাথে অনেক গুলি মাছ ছাড়তে পারবেন কিন্তু প্রশ্ন হল আপনি কতটা পরিষেবা দিতে
পারবেন তার উপরেই কিন্তু সংখ্যা নির্ধারন করতে হবে , যদি মনে হয় আপনি অক্সিজেন
দিতে পারবেন না তাহলে প্রতি 10 লিটার জলে 1 টা মাছ ছাড়তে পারবেন , বায়ওফ্লক এ যেমন
প্রতি দু লিটার জলে এ একটি মাছ ছাড়া জাবে কিন্তু তার জন্যে তার পরিষেবা ভিন্ন যত
ভাল যত্ন নিতে পারবেন ততো সংখ্যা বাড়াতে পারবেন কিন্তু বটম ক্লিন এ তা সম্ভব হয় না
কারণ তার পরিষেবা ব্যবস্থা একটু কম থাকে তাই তার স্টক ডেন্সিটি কম হয় , সব সময়
বিজ্ঞান এবং যুক্তি কে পাশাপাশি রেখে কাজ করতে হবে কেন করব কিভাবে করব কতটা
পরিষেবা দিতে পারবেন ।
যারা প্রথম করবেন তারা চেষ্টা করবেন এর অর্ধেক পরিমাণ মাছ স্টক করে চাষ করার ,
কারণ ধারণা না থাকলে বিপদে পড়ার চান্স বেশি থাকে তাই আগে কম করে চাষ করে অভিজ্ঞতা
সঞ্চয় করে পরে বেশি সংখ্যাতে চাষ করা উচিত তাহলে সফলতার মুখ দেখতে পারবেন ।
6. মাছের খাদ্য ব্যবস্থাপনা –
আগেই ফাইটো এবং জু প্ল্যাঙ্কটন এর কথা সে ভাবে যদি সম্ভব হয় করবেন, এবার হল যে খাদ্য দিবেন সেটি ফ্লোটিং ফিড দিবেন অর্থাৎ বা ভাসমান ফিড দিবেন ।এবার কথা হল কি সাইজ এ কি ফিড দিব তা আমরা 1 কেজি মাছ কতগুলো পোনা হবে সেই হিসেব এ সাইজ নির্ণয় করব , সাইজ অনুসারে যদি খাদ্য নির্ণয় না হয় তাহলে খাদ্য অপচয় হয় এবং জলকে দূষিত করে , এবং খাদ্য একবারে না দিয়ে কম করে দিয়ে দেখতে হয় যেন 15 মিনিট তা শেষ করে তাহলে সেটাই তার খাওয়ার দেওয়ার পরিমাণ বলে গণ্য হবে এবং 7 দিন পর পর পরিবর্তন করতে হবে ।
- 1 কেজি তে 4000 পোনা এর অধিক সংখ্যা হলে ডাস্ট খাবার দিবেন ।
- 1 কেজিতে 2000-3000 হলে 0.4-0.5 দিবেন ।
- 1 কেজিতে 1000-1500 হলে 0.6-0.8 দিবেন ।
- 1 কেজিতে 500-900 হলে 1 mm-2 mm দিবেন ।
- 1 কেজিতে 200-500 হলে 3 mm-4 mm দিবেন ।
- 1 কেজিতে 50-200 হলে 6 mm সাইজ এর ফিড দিবেন ।
- 1 কেজিতে 50 হলে 8 mm দিবেন ।
সেই সাথে যদি আপনার মাছের প্রজাতি ঘাস খেতে পছন্দ করে থাকে তাহলে একদিন একদিন কম করে কুটি পানা বা এজলা দিয়ে অভ্যেস বাড়িয়ে পরে তার পরিমাণ বাড়লে আপনার খাদ্যের খরচ অনেকটা কম লাগবে ।
7.জলের আদর্শ গুণগত মান
প্যারামিটার |
সর্বোচ্চ
উর্দ্ধসীমা |
আদর্শ সীমা |
জলে দ্রবীভূত
অক্সিজেন |
7 ppm |
6-8 ppm |
PH(potential of Hydrogen) |
6.5-8.5 |
-7.5 |
TAN(Total ammonia nitrogen) |
0.0-3.0 ppm |
1.5 ppm |
Nitrogen |
15 |
0.40 |
তাপমাত্রা |
28ডিগ্রিC |
22-32ডিগ্রি C |
8.জলের গুণগত মান এর সমস্যা ও তার প্রতিকার
- PH 6.5 এর নিচে হলে ডলমাইট চুন ব্যাবহার করবেন সর্বোচ্চ 5-10 মিলিগ্রাম প্রতি লিটার জলের জন্যে ,বা 1000 লিটার জলে 50-100 গ্রাম
- PH এর মান 8.5 এর উপরে হলে জৈব এসিড আপেল সীড ভিনিগার 50 মিলি লিটার হারে প্রতি 1000 লিটার জলে আথবা তেতুল 10 মিলিগ্রাম প্রতি 1 লিটার জলে ।
- এমনিয়া TAN 3 ppm এর উপরে থাকলে জল বের করে দিতে হবে এবং Heterotrophic ব্যাকটিরিয়া জলে ব্যাবহার করবেন এবং প্রাকৃতিক জিওলাইট 1-10 mg প্রতি লিটার জলে দিতে হবে ব্যালান্স এ রাখার জন্যে , আথবা চিটে গুড় ব্যাবহার করতে পারেন 1 শতাংশ হারে 3 PPM এর বেশি থাকলে ।
- Nitrite 5 ppm এর বেশী হলে প্রতি লিটার জলে 1 মিলিগ্রাম এ 5-10 মিলিগ্রাম হারে লবণ ব্যাবহার করা হয় কমানোর জন্যে ,অর্থাৎ 5 মিলিগ্রাম নাইট্রাইট হলে 25-50 মিলিগ্রাম লবণ ব্যাবহার করতে হবে ।
- Nitrate 80 ppm এর বেশি হলে প্রতিদিন 25 লিটার জল বের করে দিতে হবে (বটম ক্লিন এর জন্যে Nitrate টেস্ট না করলেও চলবে কারণ এমনই জল বের করতেই হবে)।
- TDS(Total dissolved Solids বা সমস্ত দ্রবীভূত শক্ত প্রদার্থ) 600 এর নিচে থাকলে 1000 লিটারে এ 1 কেজি কাচা লবণ মিশাতে হবে ,(তবে বটম ক্লিন এর ক্ষেত্রে আবশ্যিক নয় এই পরিমাণ)।
9.এমনিয়া সমস্যা -
বটম ক্লিন পদ্ধতিতে মাছ চাষ করলে শুধু নিচের জল ছেড়ে দিলেই এমনিয়া চলে যাবে তাহলে ভুল হয়ে যাবে মাছ তার মল এবং অবশিষ্ট যে খাদ্য বেচে গিয়ে নিচে পরে সেখান থেকে এমনিয়া তৈরি হয় যেটি জল ছেড়ে দিলে মল বেরিয়ে গেলে সেই সমস্যা হয়তো দূর হবে কিন্তু আর একটি ভাবে ট্যাংক এ এমনিয়া তৈরি হয় সেটি হল মাছ তার ফুলকা দিয়ে এমনিয়া পাস করে যা জলে দ্রবীভূত হয়ে জল কে দূষিত করে এবং মাছের বিভিন্ন রোগ তৈরি করে বৃদ্ধিতে বাধা দেয় এবং মাত্রা বেড়ে গেলে মাছ মারাও যায় , এমনিয়া থেকে আবার নাইট্রাইট এ রূপান্তরিত হয় সেটি বেড়ে গেলেও মাছের জন্যে খুবই ক্ষতি কারক হিসেবে প্রমাণিত হয় , তাই এগুলোকে একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় বা ভলিউম এ রাখতে হবে –
এমনিয়া বা TAN ( Total ammonia Nitrogen ) মাপার
জন্যে টেষ্টকিট কিনতে পাওয়া যায় যা দিয়ে প্রতিদিন দুপুর বেলা 1 টা থেক 3 টার মধ্যে
মাপা উচিত, এবার কথা হল পরিমাণ কত থাকা উচিত –যদি এমনিয়া 0.1 mg থাকে তাহলে ঠিক এর বেশি থাকলে জল বের করে দিতে হবে পরিমাণ মত 100 বা 50
লিটার , তবে অনেকদিন একই লেবেল TAN 0.25 এ থাকলে পরে মাছের
ইমিউনিটি কমে গিয়ে মাছের বিভিন্ন রোগ হতে পারে ,
তাই এমনিয়া 1.5 mg এর মধ্যে থাকলে ভাল হয় আবার যদি
এমনিয়া বা ট্যান 3mg এ থাকে বেশিক্ষণ তাহলে মাছের রোগ তো
হবেই সেই সাথে মাছ মারাও যেতে পারে ,সেই সাথে Nitrite এর
লেভেল শূন্য থাকলে ভাল তবে 4 এর অধিক হতে দেয়া যাবেন না , আগেই বলেছি কখন টেস্ট
করা উচিত এবং সেটি প্রতিদিন করা উচিত কারণ সেই সময় জলের উষ্ণতা বেড়ে যাওয়ার সাথে
সাথে ph বেড়ে যায় এবং এমনিয়া বেরে যায় তাই তখন জল কিছু
পরিমাণ ছেড়ে দিয়ে নতুন জল দেওয়া উচিত , এবং তার পরেও যদি থাকে তা কমানোর জন্যে
অন্য পদ্ধতি গ্রহণ করা উচিত ।
10. এমনিয়া এবং নাইট্রাইট কন্ট্রোল -
এমনিয়া যদি জল ছেড়ে দেবার পরেও লেভেল এ না থাকে তাহলে তার জন্যে আপনার হেটেরোট্রফিক ব্যাকট্রয়েরিয়া জলে ব্যাবহার করতে পারেন এবং এমনিয়া রিমুভার হিসেবএ বাজারে বিভিন্ন কেমিক্যাল পাওয়া যায় তা দিয়েও কন্ট্রোল করতে পারেন , সেই দিক দিয়ে আপনারা প্রাকৃতিক জিওলাইট ব্যাবহার করতে পারেন , প্রতি লিটার জলের জন্যে 1-10gm জিওলাইট একটি ব্যাগ এ ভরে ট্যাংক জলে ঝুলিয়ে রাখতে পারেন তবে সেটি বেশি দিনের জন্যে নয় 15 দিন পর সেটিকে ভাল করে লবণ দিয়ে ধুয়ে নিয়ে রোদে শুকিয়ে আবার ব্যাবহার করতে পারেন ,এবার নাইট্রাইট কন্ট্রোল এর জন্যে যদি 1 mg প্রতি লিটার জলে হয় তাহলে তার জন্যে প্রতি লিটার জলে 5 গুণ হারে লবণ প্রয়োগ করতে হবে
আরো দেখুন
11.মাছের রোগ ও প্রতিকার
অনেকই আছেন যারা আমাদেরকে প্রতিনিয়ত বলেন যে তাদের মাছে বিভিন্ন রোগ হয়ছে কি
করব এখন , মাছের রোগ হয়ে গেলে ঠিক হয় ঠিকই কিন্তু কিছুটা হলেও লসের শিকার হতে হয়
কারণ ঠিক হতে সময় লাগে এবং সেই সাথে ইনফেক্টেড হওয়ার কারণে মাছের বৃদ্ধিতে সমস্যা
হয় , তাই আমদের উচিত রোগটি যেন না আসে তার জন্যে আগে থেকেই কচু সতর্কতা মূলক কাজ
করে নেওয়া ।
- ট্যাংক এ যে জল দিছেন তার মধ্যে আয়রন আছে কিনা তা জেনে নেওয়া কারণ আয়রন বেশি থাকলে পরেও মাছের জন্যে সেটি ক্ষতিকারক হতে পারে , যদি 10 ppm এর বেশি আয়রন থাকে তাহলে তা অন্য ট্যাংক এ কিছুদিন জল ভরে রাখতে হবে এবং কিছু কুচুড়ি পানা দিয়ে রাখতে হবে তাহলে আয়রন গুলো নিচে বসে যাবে এবং উপরে কিছু থাকলে তা কুচুড়ি পানা শোষণ করে নিবে , এটির জন্যে আপনাকে অধিক ট্যাংক থাকতে হবে যদি না পারেন তাহলে পলিথিন দিয়ে জল স্টক করার ব্যবস্থা করতে পারেন বা যদি বাড়িতে টাইম কলের জল থাকে সেটিও রাখতে পারেন আর তা সম্ভব না হলে ট্যাংক এ যেখানে জল ফেলবেন সেখানে জলটি যেন এসে গিয়ে একটি মোটা পন্স এ গিয়ে পরে সেখান থেকে গিয়ে ট্যাংক এ পড়বে তাতে অনেক টা আয়রন মুক্ত জল পাবেন ।
- পোনা ক্রয় করার পড়বে আপনাকে একটি ভাল বিশ্বস্ত হ্যাচেরী থেকে পোনা ক্রয় করা উচিত কারণ তারা তাদের নাম নষ্ট করতে চাইবেনা তাই তারা ভাল মনের পোনা বিক্রয় করবে হয়তো একটু দাম বেশি পড়তে পারে তবু লাভ এ থাকবেন কারণ তারা ভাল মনের পণ সরবরাহ করে থাকে তাই তাদের মাছের বৃদ্ধিও দ্রুত হয় , কারণ মাছ আনার সময় যদি ক্ষত বিক্ষতমাছ আনা হয় তাহলে সেখান থেক রোগের সৃষ্টি হয় ।
- পোনা ক্রয় করে আনার সময় যদি শিং মাগুর হয় তাহলে অক্সিটেটরাসাইক্লিন পাউডার 30 ppm হারে জলে গুলিয়ে মাছ আহরণ করবেন , এবং কই মাছ বা আস যুক্ত মাছ হলে 0.1 শতাংশ হারে জলে লবণ গুলিয়ে আহরণ করবেন সেই সাথে কই মাছ চেষ্টা করবেন ছোট এবং সব এক সাইজ এর ক্রয় করার না হলে বড় গুলো ছোটদের লেজ কেটে ক্ষয়ে নেয় , এই ভাবে যদি মাছ আহরণ করতে পারেন তাহলে মাছের মধ্যে স্ট্রেশ কম হবে এবং পোনা সুস্থ থাকবে ।
- পোনা আনার সঙ্গে সঙ্গেই ট্যাংক এর জলে ছাড়বেন না কারণ ট্যাংক এর জল আর আপনি যে প্যাকেট বা পাত্রে মাছ এনেছেন তার জলের তাপ মাত্রা ভিন্ন থাকে ফলে সরাসরি মাছ ছেড়ে দিলে অনেক মাছ জলের তলে পরে গিয়ে র উঠতে পারে না , তাই আগেই না ছেড়ে সেই প্যাকেট বা পাত্র টিকে ঐ ট্যাংক এর জলে ভাসিয়ে রাখবেন কিছুক্ষণ ।
- জলের তাপমাত্রা সমান হয়ে গেলই মাছ ছাড়া যাবেনা ,আগে পোনা গুলোকে জীবাণু মুক্ত করে নিবেন পটাসিয়াম পারমেঙ্গনেট বা লবণ দিয়ে সাথে হলুদ ও দিতে পারেন য এন্টিবায়টিক হিসেবএ কাজ করবে একটি পাত্রে ,পটাশিয়াম দিয়ে প্রতি লিটার জলে ছোট হলে 5 ppm হারে এবং বড় হলে 10 ppm হারে গুলিয়ে নিয়ে সেখানে পোনা গুলি স্নান করিয়ে নিবেন এর পর সেগুলিকে ভাল জলে ধুয়ে নিয়ে যদি চান লবণ দিয়ে শোধন করবেন তাহলে আবার একটি পাত্রে 3 শতাংশ হারে লবণ জলে গুলিয়ে নিয়ে সাথে কিছু পরিমাণ হলুদ গুড়ো দিয়ে নিয়ে শোধন করে ভাল জলে ধুয়ে ট্যাংক এ ছাড়তে পারেন তবে শোধনের জন্যে ব্যবরিত জল ফেলে দিবেন সেগুলি ট্যাংক এ দিবেন না তাহলে রোগ সেই ট্যাংক এ চলেই যাবে।
- ট্যাংক এ ছাড়ার পূর্বে দেখবেন যদি কিছু মাছ দুর্বল থাকছে তাহলে সেই মচগুলোকে ট্যাংক এ না ছেড়ে একটি আলাদা পাত্রে জল দিয়ে রেখে ট্রিটমেন্ট করে একদিন পর ছাড়লে ভাল না হলে ট্যাংক এ গিয়ে মারা যেতে পারে , বিশেষ করে কই মাছ হলে দুর্বল থকলে তা দাড়িয়ে থাকে এবং অন্য মাছগুলো তাদের লেজ কেটে নেয় এবং মারা যায় ।
- মাছের পোনা আনার পর যে ট্যাংক এ মাছ ছাড়বেন সেই ট্যাংক এ কম জল রেখে সকরিনা WS প্রতি 1000 লিটার জলে 1 ml দিয়ে তাতে রাখতে এবং একদিন পর পর জল বদলে দিয়ে আবার সেই সকরিনা WS দিয়ে এই ভাবে 3 দিন রাখতে পারেন এবং এর পর সব জল বের করে দিয়ে নতুন জল জল দিয়ে মাছ ছেড়ে জল রেডী করতে পারেন আথবা একটি পলিথিন দিয়ে ছোট ট্যাংক বানিয়ে তাতে অন্তত 6 ঘণ্টা রেখেও পরে ট্যাংক এ ছেড়ে দিলে পোনা থেকে আর রোগ আসার চান্স থাকবে না বা মাছ ছাড়ার পর 1 দিন 2 দিন পর অনেকের সোনা যায় যে প্রচুর মাছ মারা যাচ্ছে কি করব সেই ভয় আর থাকবে না ।
- যদি মাছ দুর্বল থাকে বা অসুস্থ থাকে তাহলে তাদের এনটিবিয়টিক ঔষধ ট্রাইমেথোপ্রীম এবং সলফমেথকসেজন গ্রুপ এর ব্যাকট্রিম নামে বাজারে পাওয়া যায় প্রতি 1 কেজি মাছের জন্যে 20 mg ঔষধ দিতে পারেন , প্যাকেট mg লিখা থাকে , ধরা যাক 200 mg লিখা আছে তাহলে এবং 10 কেজি মাছ আছে তাহলে 1 টি ট্যাবলেট জলে গুলিয়ে তাতে খাওয়ার ভিজিয়ে একটু শুকিয়ে গেলে খেতে দিতে পারেন অন্তত দু বেলা সাথে ভিটামিন C বা মাল্টি ভিটামিন দিতে পারেন , এই ঔষধ মাছের যেকোন বয়সে রোগ হলেই একই ভাবে দিতে পারেন ।
- অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, ট্যাংক ভালো অবস্থায় থাকা সত্ত্বেও মাছ মারা যাচ্ছে। এই ধরনের ক্ষেত্রে, পূর্বে প্রস্তাবিত হিসাবে 3 দিনের জন্য Sacrina WS ব্যবহার চালিয়ে যান। উপরন্তু, ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করুন এবং মাছের খাবারের সাথে মিশ্রিত করে ওষুধটি পরিচালনা করুন। এই পদ্ধতিটি ট্যাঙ্কের মধ্যে উদ্ভূত যে কোনও রোগকে কার্যকরভাবে মোকাবেলা করবে।
12. ব্যাংক ঋণ এর সহযোগিতা –
NABARD মাছ চাষের জন্য ঋণ অফার করে যদি আপনি যোগাযোগ করতে এবং ব্যাঙ্কে আপনার চাষ প্রকল্প জমা দিতে সক্ষম হন। উপরন্তু, RSETI ব্যাঙ্কগুলি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ঋণ প্রদান করে এবং PMMSY-এর অধীনে, আপনার কৃষি প্রকল্প তাদের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করলে 40-60% ভর্তুকিযুক্ত ঋণ অ্যাক্সেসযোগ্য। মনে হচ্ছে এটাই একমাত্র উপায়।
13. FAQ(প্রায়ই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নোত্তর )
1.জলে pH মাত্রা কমে গেলে কি ব্যবহার করা উচিত ?
যদি pH 6.5 এর নিচে নেমে যায়, ডলোমাইট চুন প্রয়োগ করা উচিত, প্রতি লিটার
জলে 5-10 মি.লি. গ্রাম বা প্রতি 1000 লিটার পানিতে 50-100 গ্রাম প্রস্তাবিত ডোজ সহ।
2.জলে pH এর মাত্রা বেড়ে গেলে কি করা উচিত ?
পিএইচ মান 8.5-এর বেশি হলে, জৈব অ্যাসিড যেমন আপেল বীজ ভিনেগার প্রতি 1000 লিটার জলে 50 মিলি হারে বা করলা প্রতি 1 লিটার জলে 10 মিলি হারে যোগ করতে হবে।
3.ট্যাংক মাছ চাষে এমোনিয়া কন্ট্রোল করে কিভাবে ?
অ্যামোনিয়া মোট অ্যামোনিয়া নাইট্রোজেন (TAN) মাত্রা 3 পিপিএম-এর বেশি হলে, জল নিষ্কাশন করা উচিত এবং হেটারোট্রফিক ব্যাকটেরিয়া চালু করা উচিত। উপরন্তু, ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য প্রতি লিটার জলে 1-10 মিলিগ্রাম হারে প্রাকৃতিক জিওলাইট যোগ করা উচিত। বিকল্পভাবে, মাত্রা 3 পিপিএম-এর বেশি হলে, 1 শতাংশ হারে গুড় ব্যবহার করা যেতে পারে।
4.ট্যাঙ্কে মাছ চাষে নাইট্রেট বেড়ে গেলে কি করা উচিত ?
নাইট্রাইটের মাত্রা 5 পিপিএম-এর বেশি হলে প্রতি লিটার জলে 5-10 মিলি গ্রাম হারে লবণ যোগ করতে হবে। অন্যথায়, যদি 5 মিলিগ্রাম নাইট্রাইট থাকে, তবে 25-50 মিলিগ্রাম লবণ যোগ করা উচিত।
2.জলে pH এর মাত্রা বেড়ে গেলে কি করা উচিত ?
পিএইচ মান 8.5-এর বেশি হলে, জৈব অ্যাসিড যেমন আপেল বীজ ভিনেগার প্রতি 1000 লিটার জলে 50 মিলি হারে বা করলা প্রতি 1 লিটার জলে 10 মিলি হারে যোগ করতে হবে।
3.ট্যাংক মাছ চাষে এমোনিয়া কন্ট্রোল করে কিভাবে ?
অ্যামোনিয়া মোট অ্যামোনিয়া নাইট্রোজেন (TAN) মাত্রা 3 পিপিএম-এর বেশি হলে, জল নিষ্কাশন করা উচিত এবং হেটারোট্রফিক ব্যাকটেরিয়া চালু করা উচিত। উপরন্তু, ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য প্রতি লিটার জলে 1-10 মিলিগ্রাম হারে প্রাকৃতিক জিওলাইট যোগ করা উচিত। বিকল্পভাবে, মাত্রা 3 পিপিএম-এর বেশি হলে, 1 শতাংশ হারে গুড় ব্যবহার করা যেতে পারে।
4.ট্যাঙ্কে মাছ চাষে নাইট্রেট বেড়ে গেলে কি করা উচিত ?
নাইট্রাইটের মাত্রা 5 পিপিএম-এর বেশি হলে প্রতি লিটার জলে 5-10 মিলি গ্রাম হারে লবণ যোগ করতে হবে। অন্যথায়, যদি 5 মিলিগ্রাম নাইট্রাইট থাকে, তবে 25-50 মিলিগ্রাম লবণ যোগ করা উচিত।
তথ্য সূত্র -
Dr. বি.কে মহাপাত্র মৎস বৈজ্ঞানিক ICAR ব্যারাকপুর ।
আরো দেখুন
তথ্য সূত্র -
Dr. বি.কে মহাপাত্র মৎস বৈজ্ঞানিক ICAR ব্যারাকপুর ।